somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ভিক্ষুক মানসিকতার জাতিগুলো নিজপায়ে দাঁড়াতে পারেনি

২৭ শে জুলাই, ২০২১ বিকাল ৪:১৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



ভিক্ষুক-সরকারদের সবচেয়ে বড় উদাহরণ হচ্ছে, পাকিস্তান, মিশর, আফ্রিকা মহাদেশের প্রায় সব দেশ, বাংলাদেশ, রুমানিয়া, ইয়েম্যান, প্যালেষ্টাইন, ইত্যাদি। এসব জাতির সরকারগুলো ভিক্ষা করে বেড়ায়, এরা দেশের মানুষের জন্য আয় করতে জানে না; এসব সরকারগুলো নিজ দেশের নাগরিকদেরও ক্রমেই অলসজীবন ও ভিক্ষায় অভ্যস্ত করে তোল।

এসব জাতিরগুলোর মাঝে কিছু মিল আছে, এরা মানব-সম্পদে সমৃদ্ধ, এদের জমি উর্বর, সরকার ও প্রশাসন নিজ চেষ্টায় সাধারণ মানুষকে শিক্ষা বন্চিত করে, সরকার ও প্রশাসনের লোকেরা দেশের সকল সম্পদ সুযোগ দখল করে নেয়; এরা ধর্মের নামে নিজেদের মাঝে ভিক্ষা করে, এরা নিজেদের মানব-সম্পদকে দাসের মতো বিক্রয় করে, এরা পারিবারিক জীবনের মুল্য বোঝে না, এসব দেশের সরকার ও মানুষের মাঝে আস্হার বন্ধন নেই।

ভারত ও পাকিস্তান এক সাথেই স্বাধীন হয়েছিলো, এই ২টি দেশ এক সাথে প্রজাতন্ত্রে পরিণত হয়েছিলো; এদের শুরুটা কষ্টের ছিলো; কারণ, যেই রাজনৈতিক দলগুলো স্বাধীনতায় নেতৃত্ব দিয়েছিলো, এরা নিজেরাই বৃটিশ কলোনিয়ালিজমের ফসল; এই সময়ের নেতৃবৃন্দ কলোনিয়েল সংস্কৃতিতে শিক্ষাদীক্ষা পেয়েছিলো। স্বাধীনতার ১০ বছরের মাঝে ২টি দেশ আলদা পথ বেছে নেয়: ভারত নিজ পায়ে দাঁড়ানোর জন্য নিজেদের সম্পদের দিকে নজর দেয়; কিন্তু পাকিস্তান বিদেশী সাহায্যের জন্য হাত বাড়ায়। পাকিস্তান ফ্রি খাবার যোগাড় করার জন্য আমেরিকা ও ইউরোপের কাছে হাত পাতে; তারা পুর্ব পাকিস্তানের উর্বর ভুমিতে উন্নত চাষের ব্যবস্হা না করে, পিএল-৪৮০ নামের আমেরিকান প্রোগ্রামের অধীনে ফ্রি চাল, গম, ভুট্টা নিয়ে খুশী। পাকিস্তান দরকারী শিল্প কারখানা না গড়ে, নিজের কাঁচামাল: পাট, চা, চামড়া বিক্রয় করে চীনের সস্তা মালামাল এনে দেশ ভরে ফেলতো; ফলে, দেশীয় ছোট কুটীর শিল্পগুলোও অলাভজনক ও অপ্রয়োজনীয় হয়ে পড়ে; উৎপাদনমুখী ব্যবসার বদলে মুনাফা-ভোগী ব্যবসায়ী সমাজ গড়ে উঠে, এরাই পরে সরকার ও প্রশাসনকে নিজেদের কন্ট্রোলে নিয়ে যায়।

সোভিয়েত ইউনিয়ন ও ন্যাটোর মাঝে প্রতিযোগীতা এইসব ভিক্ষুক-মানসিক সরকারগুলোর জন্য নিয়মিত ভিক্ষার সুযোগ করে দেয়েছিলো; আমেরিকান-পন্হী ভিক্ষুক দেশগুলোকে আমেরিকা ও ন্যাটোর ধনী দেশগুলো বাজেট ইত্যাদিতে অনুদান দেয়ার শুরু করলো; সোভিয়েত ইউনিয়নও এই রকম কিছু দেশকে পালন শুরু করে; যেমন, রুমানিয়া, কিউবা, পোল্যান্ড ইত্যাদি।

এই ভিক্ষুক মানসিকতার দেশগুলো দেশের মানুষকে ধোঁকা দেয়ার জন্য বিদেশী সাহায্যের উপর নির্ভর করে, জাতীয় আয়ের চেয়ে বেশী বাজেট করতো। এদের বাজেটে ভিক্ষা ও বিদেশী ঋণ থাকতো; এসব দেশের সাধারণ মানুষের "বিদেশী ঋণ" সম্পর্কে কোন ধারণাই ছিলো না; এখনো বাংলাদেশ,পাকিস্তানের শিক্ষিত নাগরিকেরাও বিদেশী ঋণের নেগেটিভ ভুমিকা বুঝে না।

ভিক্ষার ডলার চুরি হলে এসব দেশের নাগরিকদের বুঝার কোন সুযোগ থাকে না; আসলে, বিদেশী ঋণের ডলার কখন, কিভাবে চুরি হয়ে যায়, দেশের শিক্ষিত সমাজও টের পায় না। অর্থমন্ত্রী সাইফুর রহমানের সময়, এশিয়া ডেভেলপমেন্ট ব্যাংকের এক কান্ট্রি ম্যানেজার ঢাকায় বলেছিলেন যে, বাংলাদেশ যেই পরিমাণ বিদেহী ঋণ নিয়েছে, ঠিক সেই পরিমাণ টাকা সরকার ও প্রশাসনের লোকেরা চুরি করে নিয়ে গেছে; সাইফুর রহমান এশিয়া ডেভেলপমেন্ট ব্যাংককে বাধ্য করেছিলো সেই ম্যানেজারকে বাংলাদেশ থেকে উইথড্র করতে; তখন বাংলাদেশের বিদেশী ঋণের পরিমান ২৫ বিলিয়ন ডলারের সমান ছিলো, এখন উহা ৫০ বিলিয়ন ডলারের বেশী হবে।

বাংলাদেশের বর্তমান মাথাপিছু আয়, দেশের জিডিপি, মিনিমাম বেতন ও বেকারত্বের হার যেই অবস্হায় আছে, ৫০ বিলিয়ন ডলারের উপর সুদ ও আসল দিয়ে মানুষের জন্য চাকুরী সৃষ্টি করতে পারবে সরকার?


সর্বশেষ এডিট : ২৭ শে জুলাই, ২০২১ রাত ৯:৫৮
২৪টি মন্তব্য ২৪টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আজকের ডায়েরী- ১৩৯

লিখেছেন রাজীব নুর, ১৮ ই মার্চ, ২০২৪ সকাল ১০:৪১

ছবিঃ আমার তোলা।

আজকে সাত রোজা।
সময় আসলে অনেক দ্রুত যায়। গতকাল সুরভি আর ফারাজাকে নিয়ে গিয়েছিলাম শপিং করতে। কারন আমি জানি, ১৫ রোজার পর... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিশ্বাসীকে লজিকের কথা বলার দরকার কি?

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ১৮ ই মার্চ, ২০২৪ দুপুর ২:১৭




হনুমান দেবতা এবং বোরাকে কি লজিক আছে? ধর্ম প্রচারক বলেছেন, বিশ্বাসী বিশ্বাস করেছেন ঘটনা এ পর্যন্ত। তাহলে সবাই অবিশ্বাসী হচ্ছে না কেন? কারণ অবিশ্বাসী বিশ্বাস করার মত কিছু... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভাবছিলাম ২ লক্ষ ব্লগ হিট উপলক্ষে ব্লগে একটু ফান করব আড্ডা দিব, কিন্তু এক কুৎসিত অপব্লগার সেটা হতে দিলোনা।

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ১৮ ই মার্চ, ২০২৪ রাত ৮:০৫



এটি ব্লগে আমার ২৬০ তম পোস্ট। এবং আজকে আমার ব্লগের মোট হিট ২০০০০০ পূর্ণ হয়েছে। আমি আনন্দিত।এই ছোট ছোট বিষয় গুলো সেলিব্রেট করা হয়তো ছেলে মানুষী। কিন্তু... ...বাকিটুকু পড়ুন

শয়তান বন্দি থাকলে শয়তানি করে কে?

লিখেছেন সাখাওয়াত হোসেন বাবন, ১৮ ই মার্চ, ২০২৪ রাত ১০:২০



রমজানে নাকি শয়তানকে বেধে রাখা হয়,তাহলে শয়তানি করে কে?

বহুদিন পর পর ব্লগে আসি এটা এখন অভ্যাসে পরিনত হয়েছে। বেশ কিছু বয়স্ক, মুরুব্বি, সম বয়সি,অল্প বয়সি একটিভ কিছু ব্লগার... ...বাকিটুকু পড়ুন

বয়কট বাঙালি

লিখেছেন অপু তানভীর, ১৯ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ১২:২৪



কদিন পরপরই আমাদের দেশে বয়কটের ঢল নামে । অবশ্য তাতে খুব একটা কাজ হয় না । বাঙালির জোশ বেশি দিন থাকে না । কোন কিছু নিয়েই বাঙালি কখনই একমত... ...বাকিটুকু পড়ুন

×