অতীতে বাংলালায়নের বিভিন্ন অনিয়ম ও দূর্বল সেবা নিয়ে অনেক লেখালেখি হয়েছে। মনে হয় না সেসবগুলো বাংলালায়নের কোন কর্মকর্তা কিংবা কর্মচারীর চোখে পড়ে। নাহলে এতোদিনে অন্তত কিছু উন্নতি তো হত।
যাক তারপরেও লিখি। কারন, মেজাজ বিগড়ে গেছে। মেজাজ ঠান্ডা করার স্বার্থে হলেও কিছু লিখতে হবে।
ঘটনার শুরু গত বছর অক্টোবর মাসে। আমার মডেম হঠাৎ নষ্ট হলো। গেলাম ওদের কাস্টমার কেয়ারে। যা হবার কথা, আমাকে দুই নাম্বার গেইট থেকে খুলশী, খুলশী থেকে ওয়াসার মোড়, ওয়াসা থেকে আবার খুলশী গিয়ে তারপর মডেম সংগ্রহ করতে হলো।
কারন একটাই, হেড অফিস ছাড়া মডেম দেয়া যাবে না। আর হেড অফিস (ওয়াসা) এ পোস্টপেইড মডেম নেই। তাই অন্য অফিসে দৌড়াদৌড়ি করে নাজেহাল হতেই হবে।
মডেমতো পেলাম। কিন্তু আগেরটা যেখানে কানেকশান পেতো পুরোদমে, সেখানে নতুনটা মোটেই পায় না। কাস্টমার কেয়ারে জানালাম, এই মডেমে সমস্যার কথা। উনারা আমাকে ইউএসবি এক্সটেনশন কেবল কেনার পরামর্শ দিলেন।
আমাকে হু মো এরশাদ বানিয়ে দিয়ে মডেম কানেকশন পেলো, এক্সটেনশন কেবল লাগানোতে। তাই এই বিষয়ে আর চিন্তা করা বাদ দিলাম।
এই ঘটনার সময় আমি সাবলেট থাকতাম। চেঞ্জ করে মেসে আসার পর দেখলাম, প্রতিদিন ঠিক রাত দশটায় কানেকশন চলে যায়। আমরা একই রুমে দুইজন আলাদা আলাদা মডেম ব্যবহার করি। একজনেরটা থাকে, আরেকজনের লালবাতি। মোটামুটি সাড়ে এগারোটা পর্যন্ত এই অবস্থা থাকে। প্রায় সময় ই দেখা যায় একই জায়গায় মডেম ঝুলিয়ে আমরা একজন কানেকশন পাই, অন্যজন পায় না।
ঘটনার সব থেকে মজার দিক, যার যার বিল জেনারেট হবার আগের দিন থেকে স্পিড কমে যায়। একবার দুইবার হলে দূর্ঘটনা বলা যেত। কিন্তু প্রতিমাসেই। অভিযোগ জানালে সরাসরি অস্বীকার। ব্যপার এমন, আমরা সবাই ঘাস খাই, শুধু ওনারা ডাল-ভাত খান।
ব্যপার না। দুই সপ্তাহ আগে মডেম আবার নষ্ট। কোন কারন নেই, ফিজিক্যাল ড্যামেজ নেই। তবুই মডেম নেই হয়ে গেলো।
নিয়ে গেলাম খুলশী। সেই পুরনো গল্প, হেড অফিস।
গেলাম হেড অফিসে। মডেম নেই।
জিজ্ঞাসা করলাম, আপনাদের কি কখনো মডেম থাকে?
সহজ-সরল উত্তর, "ভাই, ঢাকা থেকে না পাঠালে আমরা কি করব?"
- আর এই দিকে যে আমার বিল জেনারেট হয়ে বসে আছে, তার কি হবে?
- ঐটা নিয়ে আপনি টেনশন করেন না। এক সপ্তাহের মধ্যে মডেম আসবে। তখন বিল দিলেই হবে।
মডেম আসেনি। আমার কানেকশন সাময়িক বিচ্ছিন্নকরনের আওতায় পড়েছে। আজকে এই খবর শুনেই মাথা বিগড়ে গেলো।
জিজ্ঞাসা করলাম, এই মাসে ও যদি মডেম না আসে, তাহলে কি হবে?
সেই মুখস্থ বুলি, "তখন একটা ব্যবস্থা করা যাবে"
কি ব্যবস্থা ওনারা করবেন, সে তো জানাই আছে। কিছু টাকা কম হলেও আমাকে এই মাসের বিল দিতেই হবে। নেট কানেকশন না থাকায় যে ক্ষতি হলো, সেটাতো হিসাবের বাইরে।
বাংলালায়নের উপর মহল কি ভাবে জানি না। কিন্তু মানুষের হাতে এখন অনেক অপশন। তারা কেনো এতো বিড়ম্বনা সহ্য করে এই সেবা নিতে যাবে তা বোধকরি ওনাদের মাথায় ঢোকে না। এতো দিনের মাঝে কোন মডেম না আসার মানে ওনারা এর মাঝে কোন নতুন সংযোগ দিতে পারেননি। তাতে ক্ষতি কি আমার হয়েছে?
পরিশেষে, কারো ব্যবসায়িক স্বার্থে আঘাত করার উদ্দেশ্যে এই লেখা নয়। হতাশার পরিবর্তিত বহিঃপ্রকাশ

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।



