somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

সামাজিক অশান্তির কারণ

২৫ শে জুলাই, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:৪০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

সামাজিক অশান্তির কারণ
by Falguny Haowa Nasima on Sunday, July 22, 2012 at 12:55am •

কথায় বলে চোরে চোরে মাসতুত ভাই l
যে নিজে যেমন সে তার পছন্দের লোক বেছে নেয় l সমাজের উশৃঙ্খল লোকেরাই উশৃঙ্খল লোকেদের সম্মান, সহযোগিতা,সমর্থন এবং সাহায্য করে l
প্রতিবাদ করতে গেলেই নিজের সুনাম নষ্ট হবে বলে অনেকেই নীরব থেকে শুধুই পরিস্থিতিকে অবলোকন করে l
ধর্মের কাজ সমাজের শৃঙ্খলতা বজায় রাখা l কিছু নিয়ম পালন করার নির্দেশ আছে প্রত্যেক ধর্মেই; যা'থেকে জীবনের শৃঙ্খলতা আর নিয়মানুবর্তিতা কে বজায় রাখার শিক্ষা দান করা হয় l
যাদের উশৃঙ্খল জীবনের আকর্ষণ তাদের জীবন অনেক বেশী সহজ বলেই তারা উশৃঙ্খলতাটাকেই সমর্থন করে l তাদের উপরের রূপটা বেশ ঝক ঝকে করে রাখার জন্য একটা মুখোশ পরার প্রয়োজনে তারা অনেক সুন্দর মুখোশ ধারণ করে সমাজের সামনে অথচ তাদের উদ্যেশ্য থাকে অন্য রকম l
যুব সমাজের স্বাভাবিক ইচ্ছাই হলো সহজ পথটা বেছে নেয়া আর সেই কারণে সমাজের এই মুখোশ ধারী দিচারিতাকারীদের প্রতি তারা অনুরাগী হয়ে পড়ে l
অবশেষে এই 'অনুরাগ' একদিন ক্রমে ক্রমে ধর্মের শৃঙ্খলতার পথ থেকে দূর থেকে দূরে টেনে নিয়ে যায় যুব সমাজ কে আর এই যুব সমাজ এক সময় সামাজিক মানুষ হয়ে প্রতিবাদ করে ধর্মের শৃঙ্খলতাকে নিয়ে l যা'থেকে প্রমানিত হয় তাদের গড়ে ওঠা ঐক্যমত সেই মুখোশধারী দের সাথে l
সমাজের নষ্টামি নিয়ে আলোচনা রূপ ধারণ করে কাব্য ,সাহিত্যে আর অপভ্রংস হয় কৃষ্টি, সংস্কৃতি,ধর্মীয় জ্ঞান l
সাথে সাথে জন্ম নেয় সামাজিক অশান্তি l

লিখাটা ভারতের মূকুল পত্রিকায় পূর্ব প্রকাশিত, এখানে সংক্ষেপে দেয়া হলো l





উপড়ের লেখাটি আমার এক ফেইসবুক বন্ধু তার ওয়ালে পোষ্ট করার পর আমাকে মন্তব্য লিখার জন্য ম্যাসেজ পাঠায়, যার প্রেক্ষিতে আমি নীচের মতামতগুলি লিখি। বন্ধুর অনুমতি সাপেক্ষেই লেখাটি ব্লগে দিলামঃ-


সমাজের বিভিন্ন স্তরে উশৃঙ্খলতা আজ অসহনীয় পর্যায়ে পৌছে গেছে নিঃসন্দেহে। জানি না আপনার মূল লেখাতে এই সমস্যাটি সমাধানের জন্য কি কি উপায়ের কথা সুপারিশ করেছিলেন।
আমি আমার ব্যক্তিগত মতামত লিখছি, যদিও সবাই এর সাথে একমত না ও হতে পারেন।

বর্তমান প্রজন্মের ছেলেমেয়েদের আদর্শ হিসেবে ফলো করবার মত তেমন নিষ্কলুষ চরিত্র আজকাল কয়টা আছে? এই প্রজন্ম হেভী মেটাল সঙ্গীত, চলচ্চিত্র অথবা স্পোর্টস ষ্টারদেরই ভক্ত বেশী, যেখানে আগের দিনের আদর্শ ছিলেন বিজ্ঞানী, শিক্ষাবিদ, কবি, সাহিত্যিক, দার্শনিক, চিন্তাবিদ এমন ব্যক্তিত্ত্বরা।
বিগত কয়েক দশক ধরেই, বিশেষ করে আমাদের স্বাধীনতা অর্জনের পর থেকেই দেশের শিক্ষার মান যে কতটা নিম্নগামী সে কথা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। এখনকার পড়ালেখা সবার বেলায় না হলেও বেশীরভাগ ক্ষেত্রেই জ্ঞাণনর্জনের পরিবর্তে শুধুমাত্র একটা চাকুরী পাওয়ার জন্য সার্টিফিকেট অর্জন পর্যন্তই সীমাবদ্ব। নিজের মেধা বা যোগ্যতার পরিচয় দিয়ে চাকুরির ইন্টারভিউয়ে ভাল করার পরেও দেখা যায় যে নিয়োগ পায় খুটির জোরওয়ালা অন্য কেউ অথবা ঘুষের টেন্ডারে সর্বোচ্চ ঘুষদাতা।
আগের দিনের যৌথ পরিবার ব্যবস্থায় নিকটাত্মীয়দের মাঝে যে হৃদ্যতা, যোগাযোগ বা সামাজিকতা থাকত এখনকার নিউক্লিয়াস / ম্যাক্রো পরিবারে সেগুলি আর দেখা যায়না, আর কয়েক যুগ পরে সেগুলি হয়তোবা শুধু গল্প উপন্যাসেই পড়তে হবে। ছোট পরিবারের ছেলেমেয়েদের, বিশেষ করে যারা পরিবারের একমাত্র সন্তান –অন্যদের সাথে কোনকিছু শেয়ার করার মনোভাব তাদের গড়ে উঠে না। বাবা মা এবং অন্যান্য নিকটাত্মীয়দের কাছ থেকে অত্যধিক মনোযোগ পাবার কারণে ক্রমে ক্রমে তারা একগুয়ে হয়ে যায়। কোন একটা জিনিস তাদের পছন্দ হলে সেটা না পাওয়া পর্যন্ত নিস্তার নাই; প্রায় সময়ই বাবা-মা কে তাদের এমন সব অন্যায় আব্দার মেনে নিতে হয় অনিচ্ছাস্বত্তেও।
বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক মন্দার কারণে আজকাল বেশীরভাগ দম্পতির দুজনকেই চাকুরী করতে হয়। সবাই চায় একটু ভাল থাকতে। দুজনের যৌথ আয়ে সংসারে যদি একটু স্বাচ্ছন্দ আসে ক্ষতি নেই। কিন্তু এর প্রভাব পরছে সন্তানদের উপড়ে। বাবা-মা দুজনই চাকুরীজিবি হওয়াতে সন্তানরা তাদেরকে ততটা কাছে পায়না; বাসার চাকর, ঝি বা বুয়াদের কাছ থেকে বাচ্চারা তাদের কথ্য ভাষা ও গালিগালাজ শিখে। স্বামী-স্ত্রী দুজনেই চাকুরীজীবি হলেও দেখা যায় যে তুলনামূলকভাবে মহিলাদের উপড়েই সাংসারিক কাজের চাপটা বেশী; অফিসের পর ঘরও সামলাতে হয় স্ত্রীদেরকেই।
নারী শিক্ষার হার বাড়া, নারীদের উচ্চশিক্ষায় শিক্ষিত হওয়া অবশ্যই বাঞ্ছনীয়। শিক্ষিত মা ছাড়া শিক্ষিত জাতি পাওয়া সম্ভব নয়। মহিলারা উচ্চশিক্ষা নিলেই যে চাকুরী করতে হবে এই মনোভাবটা সম্ভবত বদলানো দরকার। আর চাকুরী করলেও সেটা মা হবার আগে পর্যন্তই, যাতে করে সন্তানদের পিছনে পুরোপুরি সময় দিতে পারেন।

আজকাল মধ্যবিত্তদেরও একটা ফ্যাশন হয়ে গেছে ছেলেমেয়েদেরকে ইংলিশ মিডিয়াম স্কুলে পড়ানোর। সেসব পরিবারের বাবা-মা নিজেরাই যেখানে ইংরেজী এতটা ভাল বা মোটেও বুঝেননা, বাচ্চাদের পড়াশোনা তারা আর কি দেখিয়ে দিবে? ফলে বাধ্য হয়েই তখন প্রাইভেট টিউটর ধরতে হয়।
দেশে এখন নতুন নিয়মানুযায়ী মাধ্যমিক স্কুলের শিক্ষকদেরকে ট্রেনিং নিয়ে রেজিষ্ট্রেশনভুক্ত হতে হয়। অথচ তথাকথিত ইংলিশ মিডিয়াম স্কুলে যারা শিক্ষকতা করেন তাদের বেলায় এই নিয়মটা নাই। ফলে স্কুল মালিক বা প্রিন্সিপালের আত্মীয়, পরিচিতরাই বেশীরভাগ ক্ষেত্রে শিক্ষিকা হিসেবে নিয়োগ পান। ফেসবুকের বদৌলতে ইংলিশ মিডিয়াম স্কুলের বেশ কয়েকজন শিক্ষিকার সাথে আমার আলাপচারিতায় তাদের ইংরেজী জ্ঞানের (বানান ও বাক্যগঠন) বহর দেখে আমারতো চক্ষু চড়কগাছ। তাই বলে এটা বলছি না যে সবারই এক অবস্থা।

ইংলিশ মিডিয়ামে পড়াশোনা করা সব ছেলেমেয়েই বিদেশে যেতে পারে না উচ্চশিক্ষা গ্রহনের জন্য। আর তারা বাংলা মিডিয়ামে পড়া অন্যদের প্রতি নাক সিটকায়, নিজদেরকে সুপেরিওর কোয়ালিটির ভাবে, যদিও ইংলিশ মিডিয়ামে পড়া বেশীরভাগ ছেলেমেয়েই বাংলাতে কোন কিছু লিখতে বা পড়তে পারে না। তারা নিজেদের একটা জগাখিচুরি সংস্কৃতি তৈরী করে নেয়, ফাস্টফুড ছাড়া দেশীয় অন্য খাবার তাদের পছন্দ হয় না।

স্কুল কলেজ মূলতঃ প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার জন্য; ছেলেমেয়েরা বাকীটা শিখবে পরিবার থেকে। কিন্তু বাস্তবে দেখা যায় অল্পশিক্ষিত বাবা-মায়েরা আশা করে বসে থাকেন যে স্কুল থেকেই তাদের ছেলেমেয়েরা সব কিছু শিখে আসবে। নিজেদের ব্যার্থতার দায়ভার শিক্ষকদের উপর চাপিয়ে দেন।

আদর্শ বাবা মা ছাড়া আদর্শ সন্তান আশা করা যায় না। পরিবারই হচ্ছে একটি শিশুর শিক্ষা, মানসিক ও মানবিক বিকাশের মূল কেন্দ্রবিন্দু।
সর্বশেষ এডিট : ২৫ শে জুলাই, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:৪২
২টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ইউনুস সাহেবকে আরো পা্ঁচ বছর ক্ষমতায় দেখতে চাই।

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১:৪৪


আইনশৃংখলা পরিস্থিতির অবনতি পুরো ১৫ মাস ধরেই ছিলো। মব করে মানুষ হত্যা, গুলি করে হত্যা, পিটিয়ে মারা, লুট হওয়া অস্ত্র উদ্ধার করতে না পারা, পুলিশকে দূর্বল করে রাখা এবং... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাদির যাত্রা কবরে, খুনি হাসছে ভারতে...

লিখেছেন নতুন নকিব, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৬

হাদির যাত্রা কবরে, খুনি হাসছে ভারতে...

শহীদ ওসমান বিন হাদি, ছবি অন্তর্জাল থেকে নেওয়া।

হ্যাঁ, সত্যিই, হাদির চিরবিদায় নিয়ে চলে যাওয়ার এই মুহূর্তটিতেই তার খুনি কিন্তু হেসে যাচ্ছে ভারতে। ক্রমাগত হাসি।... ...বাকিটুকু পড়ুন

'জুলাই যোদ্ধারা' কার বিপক্ষে যুদ্ধ করলো, হ্তাহতের পরিমাণ কত?

লিখেছেন জেন একাত্তর, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:৫১



সর্বশেষ আমেরিকান ক্যু'কে অনেক ব্লগার "জুলাই বিপ্লব" ও তাতে যারা যুদ্ধ করেছে, তাদেরকে "জুলাই যোদ্ধা" ডাকছে; জুলাই যোদ্ধাদের প্রতিপক্ষ ছিলো পুলিশ, র‌্যাব, বিজিবি, ছাত্রলীগ; জুলাই বিপ্লবে টোটেল হতাহতের... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাদিকে মারল কারা এবং ক্রোধের আক্রশের শিকার কারা ?

লিখেছেন এ আর ১৫, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১০:০৩

হাদিকে মারল কারা এবং ক্রোধের আক্রশের শিকার কারা ?


হাদিকে মারল জামাত/শিবির, খুনি নাকি ছাত্রলীগের লুংগির নীচে থাকা শিবির ক্যাডার, ডাকাতি করছিল ছেড়ে আনলো জামাতি আইনজীবি , কয়েকদিন হাদির সাথে... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাদির হত্যাকান্ড ও সরকারের পরবর্তি করণীয়!

লিখেছেন আহলান, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৪:৫১

হাদির প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা। সে দেশকে ভালোবেসে, দেশের মানুষকে ইনসাফের জীবন এনে দিতে সংগ্রাম করেছে। তাকে বাঁচতে দিলো না খুনিরা। অনেক দিন ধরেই তাকে ফোনে জীবন নাশের হুমকি দিয়ে এসেছে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×