somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

উড়ন্ত বিমানের দিকে ভূমি থেকে লেজার লাইট প্রক্ষেপণ - একটি ভয়াবহ উদ্বেগের বিষয়

০৩ রা সেপ্টেম্বর, ২০২২ রাত ১১:৩৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

কুয়ালালামপুর থেকে গত ১লা সেপ্টেম্বর ২০২২, দেশে ফিরছিলাম।
US-Bangla Airlines ফ্লাইটটি আনুমানিক সন্ধ্যা ৭ঃ১৫টার দিকে বাংলাদেশের আকাশসীমায় পৌছানোর মিনিট দশেক পর থেকেই একটি বিষয় আমাকে ভীষণভাবে উদ্বিগ্ন ও রাগান্বিত করে তুলছিল। আগে বেশ অনেকবারই মিডিয়াতে পড়েছি যে বিশেষ করে রাতের ফ্লাইটের বৈমানিকেরা একটি বিষয়ে প্রায়শঃই তাদের উদ্বেগের কথা তুলে ধরেছেন আর তা হল ভূমি থেকে আকাশে উড্ডীয়মান বা অবতরনকারী বিমানগুলির দিকে লেজার লাইটের প্রক্ষেপণ বিষয়ে। এই লেজার লাইটের আলো অতিমাত্রায় উজ্বল বা তীক্ষ্ণ বলে এটি সরাসরি পাইলটের চোখে এসে পড়লে বৈমানিকেরা স্বল্পসময়ের জন্য দৃষ্টিশক্তি হারিয়ে ফেলেন বা এমনকি স্থায়ীভাবে দৃষ্টিহীন হয়ে যেতে পারেন।
আমাদের ফ্লাইটটি মায়ানামারের রেঙ্গুন এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোলের হাত থেকে ঢাকার এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোলের কাছে হস্তান্তরের পর পাইলট যাত্রীদের উদ্দেশ্যে ঘোষণায় সেটি জানিয়ে দেন। এর ১০-১৫ মিনিট পর থেকেই বিরাম্বনাটি শুরু হয় এবং আমার সিট জানালার পাশে হওয়াতে ঘটনাগুলি স্বচক্ষে দেখার অভিজ্ঞতা আমার হয়েছে। ঢাকায় অবতরণ করার আগে মোটামুটি ৪০ মিনিটের ভিতর কম করে হলেও ২৫-৩০ বারের মত আমাদের বিমানের দিকে লেজার লাইট মারা হয়েছে। কোথাও কোথাও এমনও হয়েছে এক থেকে দেড় মাইলের ব্যবধানে দুই দিক থেকে দুইটি লাইট একই সময়ে মারা হয়েছে; এমন হওয়াটা কাকতালীয়ও হতে পারে।
দুঃখের বিষয়, সন্ধ্যার অন্ধকার বলে ঠিক কোথা থেকে এই লাইটগুলি মারা হয়েছে তা নিরূপণ করা সম্ভব নয়।
তবে ইদানীংকালে আমাদের দেশের আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে যথেষ্ট আধুনিক প্রযুক্তির যন্ত্রপাতি রয়েছে। তারা আন্তরিকভাবে চেষ্টা করলেই, প্রয়োজনে Reconnaissance বিমান বা হেলিকপ্টারের সাহায্যে সন্ধ্যার পর ঢাকা বা চট্টগ্রাম বিমানবন্দরে অবতরণকারী উড়োজাহাজগুলি্র গতিপথ অনুসরণ করলেই যেসব এলাকা থেকে লেজার লাইট মারা হয় সেগুলি চিহ্নিত করা যাবে এবং পরবর্তীতে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও আইনপ্রয়োগকারী সংস্থার সদস্যদের সাহায্যে উপদ্রবকারীদেরকে শনাক্ত করা যাবে। আমরা নিশ্চয়ই সম্প্রতি উত্তরার রাস্তায় ঘটে যাওয়া মর্মান্তিক দুর্ঘটনার মত আর কোন বেদনাদায়ক ঘটনার জন্য অপেক্ষা করে বসে থাকবো না। Prevention is better than cure.
শিশু-কিশোর বা তরুণেরা শুধুমাত্র মজা করার জন্যই এটা করে থাকে - অজ্ঞতা বা উগ্র স্বভাবের ফলে। বাংলাদেশের বাজারে লেজার লাইট মোটামুটি সহজলভ্য এবং যে কেউই খুব সহজে কিনতে পারে। অথবা আমাদের প্রবাসী ভাই-বোনেরা দেশে ফেরার সময় তাদের আদরের সন্তান বা পরিবারের ছোট সদস্যদের জন্য উপহার হিসাবে এগুলি নিয়ে আসেন। কিন্তু এই লেজার লাইটের ক্ষতিকর মারাত্মক প্রভাবগুলি সম্পর্কে তারা যে অবগত নয় এর চেয়ে বরঞ্চ বলা ভাল যে তারা উদাসীন। মোটকথা - বড়/ অভিভাবকদের গাফিলতি বা উদাসীনতার কারণে ছোটরা আস্কারা পেয়ে পেয়ে বেপরোয়া হয়ে উঠছে। এর কারণে ঘটে যাওয়া মারাত্মক কোন দুর্ঘটনা থেকে যতদিন পর্যন্ত না তাদের নিজেদের কেউ হারিয়ে যাবে তার আগে তারা সাবধান হবে না। কিন্তু কথা হচ্ছে একটা বিমান বিধ্বংস হলেতো কেউ একা মরবে না, ফ্লাইটের আরও ২৭০-৪৩০ জনের মত যাত্রী এবং বিমানকর্মীও মারা যাবে, সেই সাথে ততগুলি পরিবার চিরদিনের মত অসহায় হয়ে পরবে - সাথে যোগ হবে সংশ্লিষ্ট বিমান সংস্থার অন্ততপক্ষে ৯০-১১৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার (বিমান মূল্য) এবং ক্ষতিপূরণ বাবদ আরও কয়েক মিলিয়ন ডলার।
শুধুমাত্র সরকারকে দোষারোপ কোন লাভ হবে না যে সরকার কেন এসব লেজার লাইটের আমদানি নিষিদ্ধ করে না। সরকারী নিয়মে এগুলি আমদানি করা নিষিদ্ধ হলে পরেও যতদিন পর্যন্ত না আমরা ব্যক্তিগতভাবে সচেতন হব সরকারের একার পক্ষে সমাধান এনে দেয়া সম্ভব হবে না।
সর্বশেষ এডিট : ০৩ রা সেপ্টেম্বর, ২০২২ রাত ১১:৩৯
১০টি মন্তব্য ৭টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ইউনুস সাহেবকে আরো পা্ঁচ বছর ক্ষমতায় দেখতে চাই।

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১:৪৪


আইনশৃংখলা পরিস্থিতির অবনতি পুরো ১৫ মাস ধরেই ছিলো। মব করে মানুষ হত্যা, গুলি করে হত্যা, পিটিয়ে মারা, লুট হওয়া অস্ত্র উদ্ধার করতে না পারা, পুলিশকে দূর্বল করে রাখা এবং... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাদির যাত্রা কবরে, খুনি হাসছে ভারতে...

লিখেছেন নতুন নকিব, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৬

হাদির যাত্রা কবরে, খুনি হাসছে ভারতে...

শহীদ ওসমান বিন হাদি, ছবি অন্তর্জাল থেকে নেওয়া।

হ্যাঁ, সত্যিই, হাদির চিরবিদায় নিয়ে চলে যাওয়ার এই মুহূর্তটিতেই তার খুনি কিন্তু হেসে যাচ্ছে ভারতে। ক্রমাগত হাসি।... ...বাকিটুকু পড়ুন

'জুলাই যোদ্ধারা' কার বিপক্ষে যুদ্ধ করলো, হ্তাহতের পরিমাণ কত?

লিখেছেন জেন একাত্তর, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:৫১



সর্বশেষ আমেরিকান ক্যু'কে অনেক ব্লগার "জুলাই বিপ্লব" ও তাতে যারা যুদ্ধ করেছে, তাদেরকে "জুলাই যোদ্ধা" ডাকছে; জুলাই যোদ্ধাদের প্রতিপক্ষ ছিলো পুলিশ, র‌্যাব, বিজিবি, ছাত্রলীগ; জুলাই বিপ্লবে টোটেল হতাহতের... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাদিকে মারল কারা এবং ক্রোধের আক্রশের শিকার কারা ?

লিখেছেন এ আর ১৫, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১০:০৩

হাদিকে মারল কারা এবং ক্রোধের আক্রশের শিকার কারা ?


হাদিকে মারল জামাত/শিবির, খুনি নাকি ছাত্রলীগের লুংগির নীচে থাকা শিবির ক্যাডার, ডাকাতি করছিল ছেড়ে আনলো জামাতি আইনজীবি , কয়েকদিন হাদির সাথে... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাদির হত্যাকান্ড ও সরকারের পরবর্তি করণীয়!

লিখেছেন আহলান, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৪:৫১

হাদির প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা। সে দেশকে ভালোবেসে, দেশের মানুষকে ইনসাফের জীবন এনে দিতে সংগ্রাম করেছে। তাকে বাঁচতে দিলো না খুনিরা। অনেক দিন ধরেই তাকে ফোনে জীবন নাশের হুমকি দিয়ে এসেছে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×