‘পাগল রাগ করে চলে যাবে ফিরেও পাবে না
পাগল কষ্ট চেপে চলে যাবে ফিরেও আসবেনা’
৪৪ বছর!!
মাত্র ৪৪ বছরের জীবন! অথচ এই সময়টুকুই যথেষ্ট!
লম্বা চুল! ঘোর লাগা চোখ!
ক্ষণজন্মা, মেধাবী আর অসম্ভব সৃষ্টিশীল একজন মানুষ!
তিন বছর আগে মস্তিষ্কের রক্তক্ষরণে আমাদের ফেলে চলে গিয়েছিলেন এই অসাধারণ মানুষটি!
মৃত্যুর খবরটি যখন শুনেছিলাম আমি তখন স্তব্ধ হয়ে গিয়েছিলাম!
এই প্রানবন্ত মানুষ টাকে আমি প্রচন্ড পছন্দ করতাম!
এমন দরদী গলা কয় জন গায়কের থাকে? অসাধারণ গানও লিখতেন তিনি! তার গান শুধু গানই ছিল না, যেন এক একটা কবিতা! কবিতাগুলোকে তিনি নিপুন মায়েস্ত্রের মত গানে কনভার্ট করতেন! দেশের অনেক পত্রিকায়ই তার কবিতা ছাপা হয়েছে। ‘রাশপ্রিন্ট’ তার একমাত্র কাব্যগ্রন্থের নাম ।
গায়কির স্বত্ত্বার সাথে মানবিক বোধের অসাধারন সংমিশ্রনে পুর্নাঙ্গ এক প্রাণশক্তিতে ভরা মানুষ ছিলেন তিনি! আজও তার দরদী গলা শিহরন জাগায় হাজারও বোহেমিয়ান অন্তরে!
তিনি সঞ্জীব চৌধুরী-বাউন্ডুলে জীবন-যাপনে অভ্যস্ত সাংবাদিক, গায়ক ও কবি! আড্ডাপ্রিয় সঞ্জীব দা ছিলেন পুর্নাঙ্গ গীতিকার, সুরকার, গায়ক! মেট্রিক আর ইন্টারমেডিয়েট দুটতেই স্টান্ডকৃত ছিলেন তিনি । স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে তার সক্রিয় অংশগ্রহণ ছিল! সমাজের মেকি রীতিনীতির উর্দ্ধে উঠে আপন অস্তিত্বকে, তার নিজস্ব স্বাধীন স্বত্তাকে তিনি বেশি প্রায়্রিটি দিতেন!
ইংরাজীতে একটা শব্দগুচ্ছ আমি জানি ‘ফেলো-ডি-সি’ আমি যদ্দুর জানি সেই হল ‘ফেলো-ডি-সি’ যে নিজেকে পোড়াতে ভালোবাসে! তিনি ছিলেন আত্মবিধ্বংসী! নিজে পুড়ে অন্যকে আনন্দ দিতেন! মানুষের দুঃখকষ্ট তাকে খুব নাড়া দিত! এমনই একজন মানুষ সঞ্জীব চৌধুরী, আমাদের সবার প্রিয় সঞ্জীব দা। গতকাল ছিল তার জন্মদিন!
আধারের জোনাকি সঞ্জীব দা ভয়াল নৈঃশব্দে শব্দ ছড়িয়ে আজ আকাশের তারা হয়ে আছেন ছুঁয়ে কিংবদন্তীর কান্নার রঙ, তার একমাত্র মেয়ে কিংবদন্তী! “পাগল রাগ করে চলে গেলো’ ফিরেও দেখলো না! বড় হয়ে কিংবদন্তি নিশ্চয় বুঝতে পারবে তার বাবাও এক কিংবদন্তী!
সঞ্জীব দা’র মত মানুষরা চোখের আড়ালে চলে গিয়েও আমাদের অঝোরে কাঁদান !
সঞ্জীব দা'র মৃত্যু একটি অপূরনীয় ক্ষতি! সঞ্জীবদা চিরকালই মানুষের স্মৃতিতে ভাস্বর হয়ে থাকবেন।
তিনি কিংবদন্তী ছিলেন...
এবং কিংবদন্তীর মাঝে তিনি বেচে থাকবেন...
এবং থাকবেন চিরকাল কিংবদন্তি হয়েই...
‘তুমি কান্নার রঙ
তুমি জোছনার ছায়া’
'সঞ্জীব'দার কিংবদন্তী'
সর্বশেষ এডিট : ২৬ শে ডিসেম্বর, ২০১০ রাত ১:০২