somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

সুপারনেচারাল রিসার্চ সেন্টার ঢাকা -১০০০ (গল্প নং ১)

০২ রা আগস্ট, ২০১৩ রাত ১:৩৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আমি রবার্ট, রবার্ট সি. হ্যানসন। আসল নাম টা গোপন ই থাকুক, গল্পের কারণে। আমি থাকি বাংলাদেশে। একটা সুপার ন্যচারাল ও প্যরানরমাল বিহেবিয়ার রিসার্চ ফাউন্ডেশনের সত্ত্বাধিকারী। শহর টা ঢাকা, ইট পাথরের ভিড়ে যে এখানে ভুত আসবে তা এক সমইয় আমিও ভাবতে পারি নি, হাতে কাজ ছিলো না তাই শুরু করেছিলুম। যদিও বুঝতে পারি নি কোম্পানি এতোটা জনপ্রিয়তা পাবে, আর মানুষের এতো ভুতুরে সমস্যা আছে। আজ সেই গল্প গুলো থেকে একটা গল্প বলবো আপনাদের।

আমরা আমাদের কোম্পানি নিয়ে গর্বিত, কারণ হুমায়ুন স্যারের মৃত্যুর পর প্রথমে মিসির আলী সাহেব কে এর পর হিমু আমাদের এখানে যোগ দেয়। স্যারের মৃত্যুর পর লোক দুটো না খেয়ে মরার দশা হয়েছিলো। শুধু উনারাই নন, সুনীল বাবুর মৃত্যুর পর রাজা রায় চৌধুরী ওরফে কাকাবাবুও আমাদের এখানে সিনিয়র এ্যদ্ভাইসার হিসেবে যোগ দিয়েছেন। বয়স্ক মানুষ তার উপর খোড়া তাই উনাকে খুব বড় কেস না হলে ঘাটাই না তেমন।
সে যাক গে এবার গল্পে আসা যাক।


সে অনেক দিন আগের কথা, আমাদের এক ক্লায়েন্ট যার ফাইল নাম্বার হলো ৬০২। উনার নাম টা গোপন করে যাচ্ছি, ধরে নেই উনার নাম, জালাল।
জালাল সাহেব ঝঞ্ঝাট হীন মানুষ, জীবনে দুটো বিয়ে করেছেন, একটা বউ মারা গেছে রোড এ্যক্সিডেন্টে, আরেকটা পালিয়েছে প্রেমিকের হাত ধরে। এক ছেলে আর এক মেয়ের দায় তার কাঁধেই বর্তেছে। ছেলেটা প্রথম পক্ষের আর মেয়েটা দ্বিতীয় পক্ষের। থাকেন মানে আমাদের ক্লায়েন্ট অবস্থায় থাকতেন মধ্য বাড্ডায়। এখন কোথায় আছেন জানি না। টাকার সম্পর্ক চুকে গেছে, আর খবর নিয়ে আমার কি কাজ।

এইবার মূল গল্পে আসা যাক, জালাল সাহেবের সামান্য ভীরু মানুষ তা উনার সাথে প্রথম দেখাতেই বুঝে গেছি। সেদিন ছিলো বৃহস্পতিবার, গ্রামের বাড়ি থেকে ফেরার পথে এয়ারপোর্ট স্টেশনে নেমেছেন, লোকাল বাসে বাড্ডা ফিরবেন বলে। বিরোধীদলের রাত্রিকালীন হরতালের জন্য বাসের সংখ্যা বেশ কম। মিনিট ৪৫ দাড়ানোর পর একটা বাস পেলেন তিনি। কিন্তু বাসে একটা সমস্যা আছে। বাসটি লাশ বহন করছে। একজন মহিলার লাশ এ্যম্বুলেন্স আসতে পারে নি হরতালের জন্য, তাই বাস ভাড়া করে চলে এসেছে স্বজনেরা। তারা জালাল সাহেব কে বাসে উঠিয়ে নিতে রাজি হলো।

বাস চলছে, কিন্তু এমন সময় জালাল সাহেব খেয়াল করলেন, বাসের মাঝে সামান্য পচা গন্ধ পাওয়া যাচ্ছে। সাইকোলজ্যিকাল ব্যপার ভেব তিনি ঘুমুনোর চেষ্টা করলেন, সামান্যই তো রাস্তা। হঠাৎ করে তিনি ঘুমিয়ে গেলেন, সে এক গভীর ঘুম।

যখন ঘুম ভাংলো তখন তিনি তার বাসায়, মাঝে ক্যালেন্ডারের ৩ টি দিন গায়েব। ছেলে মেয়েরা হোস্টেলে থাকে বলে কেউ বলতে পারলো না, এই তিন টি দিন কি ভাবেই কেটে গেলো, বা তিনি কোথাই -- ই বা ছিলেন। আর বাসার তালাই বা কে খুলে দিলো? কে ই বা তার পোষাক বদলে দিয়েছিলো।
দীর্গ এক বছর তিনি আমাদের সাথে যোগাযোগ করেন, এই সমস্যা টা নিয়ে। সেদিনের পর থেকে তিনি নাকি মানুষ কে বিশ্বাস করতে পারেন না। সব খানেই তিনি মৃত মানুষের গন্ধ পান। উনার এই কেসটা নিয়েছিলেন কাকাবাবু নিজে। তিনি আর আমি নিলে দীর্ঘ সাত দিনের গবেশনার পর বের করি তার সমস্যাটা

কেসের রেজাল্ট টা হলো, জালাল সাহেব দ্বৈত স্বত্বা ধারণ করেন, যে জালাল সাহেব সেই বাসে উঠেছিলেন, সেই জালাল সাহেব বাস থেকে নামেন নি। নেমেছিলেন অন্য জালাল সাহেব। মানে তার দ্বিতীয় স্বত্বা। আর প্রথম স্বত্ত্বা টি অবচেতন মনেই সেই বাস ভ্রমন করে যাচ্ছে। জালাল সাহেবের ৩ দিন লাগে প্রথম স্বত্ত্বার কাছে ফিরে যেতে, যেখানে তিনি নিজেই নিজের কাছে অপরিচিত। আর জাগ্রত প্রথম সত্বার কাছে দ্বিতীয় সত্বা সুপ্ত বা ঘুমন্ত। এটা বুঝতে আমাদের বেশ কিছু সময় লেগেছিলো, এটা ধরা পরেছিলো যখন তিনি হিপ্নোটাইজড অবস্থায় বলতে পারছিলেন না তার নাম। তখন সব গল্প বেরিয়ে আসে। তিনি যে একজন নিরেট ভদ্রলোক নন তা ও বুঝা যায় সে সময়। সে সব থাক, কিছু কথা থাক না গোপন।

বেশ ছোট কেস, প্রথম পরিচয়ে এর চেয়ে লৌমহর্ষক কেসের দিকে গেলে ভালো দেখাবে না, আবার দেখা হবে, পরে কোন দিন। সেবার মিসির আলীর গল্প নিয়ে আসবো ক্ষন।
২৫টি মন্তব্য ২৫টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ব্লগার'স ইন্টারভিউঃ আজকের অতিথি ব্লগার শায়মা

লিখেছেন অপু তানভীর, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ রাত ১১:০৫



সামুতে ব্লগারদের ইন্টারভিউ নেওয়াটা নতুন না । অনেক ব্লগারই সিরিজ আকারে এই ধরণের পোস্ট করেছেন । যদিও সেগুলো বেশ আগের ঘটনা । ইন্টারভিউ মূলক পোস্ট অনেক দিন... ...বাকিটুকু পড়ুন

...এবং উচ্চতায় তুমি কখনই পর্বত প্রমাণ হতে পারবে না

লিখেছেন নতুন নকিব, ০৫ ই মে, ২০২৪ সকাল ৮:৫৬

...এবং উচ্চতায় তুমি কখনই পর্বত প্রমাণ হতে পারবে না

ছবি কৃতজ্ঞতাঃ অন্তর্জাল।

ছোটবেলায় মুরব্বিদের মুখে শোনা গুরুত্বপূর্ণ অনেক ছড়া কবিতার মত নিচের এই লাইন দুইটাকে আজও অনেক প্রাসঙ্গিক বলে মনে হয়।... ...বাকিটুকু পড়ুন

লালনের বাংলাদেশ থেকে শফি হুজুরের বাংলাদেশ : কোথায় যাচ্ছি আমরা?

লিখেছেন কাল্পনিক সত্ত্বা, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:১৪



মেটাল গান আমার নিত্যসঙ্গী। সস্তা, ভ্যাপিড পপ মিউজিক কখনোই আমার কাপ অফ টি না। ক্রিয়েটর, ক্যানিবল কর্পস, ব্লাডবাথ, ডাইং ফিটাস, ভাইটাল রিমেইনস, ইনফ্যান্ট এনাইহিলেটর এর গানে তারা মৃত্যু, রাজনীতি,... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমেরিকার গ্র্যান্ড কেনিয়ন পৃথিবীর বুকে এক বিস্ময়

লিখেছেন কাছের-মানুষ, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:৪১


প্রচলিত কিংবদন্তি অনুসারে হাতে গাছের ডাল আর পরনে সাধা পোশাক পরিহিত এক মহিলার ভাটাকতে হুয়ে আতমা গ্র্যান্ড কেনিয়নের নীচে ঘুরে বেড়ায়। লোকমুখে প্রচলিত এই কেনিয়নের গভীরেই মহিলাটি তার... ...বাকিটুকু পড়ুন

চুরি! চুরি! সুপারি চুরি। স্মৃতি থেকে(১০)

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ২:৩৪


সে অনেকদিন আগের কথা, আমি তখন প্রাইমারি স্কুলে পড়ি। স্কুলে যাওয়ার সময় আব্বা ৩ টাকা দিতো। আসলে দিতো ৫ টাকা, আমরা ভাই বোন দুইজনে মিলে স্কুলে যেতাম। আপা আব্বার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×