একটু দূরেই সেই কাঁচ ঘর। এটা পেরোলেই দেশের সীমানা পেরিয়ে যাওয়া। এখন রাত আট টা বেজে কুড়ি মিনিট আট টা বেজে চল্লিশ মিনিটে ওই কাঁচ ঘরে ঢুকতে হবে ইমিগ্রেশনের সব কাজ সারবার জন্য। অনেক মানুষ লাইনে। এর মাঝে একজন আমি আরেকজন সে। আমরা জানি আমরা যাচ্ছি আর কেউ জানে না। আমি দূর থেকে মেয়েটিকে দেখছি। নিজের বিষন্নতাকে লুকিয়ে রাখছি। মেয়েটি বেশ আবেগী নিজের কষ্টকে লুকিয়ে রাখতে পারছে না। যদিও প্রাণ পন চেষ্টা করছে। নিজের দেশ, নিজের মানুষ ছেড়ে এমন একটা দেশে যাওয়া যে দেশের মানুষের ভাষা আমরা জানি না। সম্বল মাত্র এই ভাঙ্গা ভাঙ্গা ভিক্টোরিয়ান ইংরেজী। মেয়েটি সব জেনে সব বুঝে আমার মতো একটা ক্যবলাকান্তের সাথে ওই দূর দেশে পাড়ি দেবার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
হাতে আছে আর ১৫ মিনিট। আমার সাথে কেউ আসে নি। আমি আসতে দেই নি। আর ওর সাথে এসেছেন তার জীবনের স্বর্বস্ব। ওর মা আর বাবা। হঠাৎ মেয়েটি কেঁদে উঠলো, “মা, আমি তোমাদের ছেড়ে কোথাও যাবো না। ও মা, আমি বাড়ি যাবো, আমারে বাড়ি নিয়ে যাও”। আমি দেখছি কিনতু কিছুই করতে পারছি না। এ যেন শতাব্দী কালের জন্য সময় থেমে গেছে...। যদি সে বাড়ি ফিরে যায়। যদি ধরা পড়ে যাই...।
সর্বশেষ এডিট : ১৩ ই জুন, ২০১৬ রাত ১২:১০