যখন সকাল পেড়িয়া দুপুর আসিলো অতঃপর সন্ধ্যার আগমন ঘটিলো। আবার সন্ধ্যে বিদায় লইয়া যখন রাত্রি আসিলো, তখন বালিকা আরও চিন্তিত হইয়া উঠিলো। বালকের কথা, চালচলন, রূপ ও গুণ তাহাকে প্রতি মুহূর্তে দূর্বল করিয়া তুলিতেছিলো। সে হাজার চেষ্টা করিয়াও বালকের চিন্তা মন থেকে ভুলিতে পারিতেছিলো না। বালক অন্ধ ছিলো বটে আর বালিকা অপূর্ব রূপের অধিকারী। বালকের মনেও বালিকার জন্যে আবেগের জন্ম ঘটে তবে নিজেকে বালিকার জন্যে যোগ্য না মনে করায় সেও চুপ করিয়া থাকে। এভাবে সময় কাটিতে থাকে। দিবা-রাত্রি কাটিতে কাটিতে কখন মাস পেড়িয়া বছরে রূপান্তরিত হইলো, কেউ তাহার খেয়াল রাখিলো না। কলেজের পড়ালিখা যা ছিলো বালকের তা বালিকার সহায়তায় পুরা হইতো। নিজের পড়িবার কথা বালিকা ভুলিয়া গেলেও সকাল ৭ঘটিকায় বালকের পড়া করাইয়া দেওয়ার কথা সে ভুলিত না। অতঃপর বার্ষিক পরীক্ষার ফলাফল আসিলো। বালকের ফলাফল সবার ঊর্ধ্বে স্থান করিয়া লয়। আর বালিকা বালকের ভালোবাসায় মগ্ন থাকিবার হেতু অকৃতকার্য হইয়া যায়। তবু বালকের খুশি দেখিয়া সে নিজের কথা ভুলিয়া যায়। বালিকার মাতাপিতা তাহার এরূপ ফলাফলে অসন্তুষ্ট হইয়া শীঘ্রই তাহাকে বিবাহ দেওয়ার সিদ্ধান্ত লইয়া ফেলে। বালিকা আর সহিতে না পারায় বালকের নিকট প্রেমপত্র লেখিয়া পাঠায়। বালক আপন মনে ভাবিলো সে অন্ধ নিজের খেয়াল রাখিতে পারেনা। বালিকারে কীভাবে সুখে রাখিবে। বালিকা যাতে তাহাকে ঘৃণা করিয়া ভুলিয়া যায়, সেই হেতু বালক পত্রের উত্তরে নিজের সম্বন্ধে অহংকার প্রকাশ করে। বালিকা বালকের চুরি ধরিতে সক্ষম হয়। পিতামহ তাহাকে বুঝিতেন দেখিয়া তাহার নিকট বালিকা বালককে বিবাহের ইচ্ছে প্রকাশ করে।
এরপর...
বালক ও বালিকার ২টি ফুটফুটে সন্তানের জন্ম হয়। আর এখন বালিকা বালকের খেয়াল রাখেনা বরং বালকই বালিকের খেয়াল রাখিতে পারে।