প্রসঙ্গত, স্বীকৃতিপ্রাপ্ত সব বেসরকারি স্কুল, কলেজ, মাদরাসা ও কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষকরা এমপিওভুক্তির (বেতন-ভাতা বাবদ মাসিক সরকারি টাকা) একদফা দাবিতে দীর্ঘদিন আন্দোলন করে আসছে। ওই দাবিতে চলতি বছরে আন্দোলনের তৃতীয় দিনে গত বুধবার শিক্ষকরা শিক্ষা ও অর্থ মন্ত্রণালয় ঘেরাও করতে গেলে পুলিশের হামলায় তা পণ্ড হয়ে যায়। ওই হামলার প্রতিবাদ এবং এমপিওভুক্তির একদফা দাবিতে শিক্ষকরা আমরণ অনশন কর্মসূচির ঘোষণা দেয়।
পূর্বঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনের রাস্তায় গতকাল সকাল ১০টায় শিক্ষকদের আমরণ অনশন কর্মসূচির শুরু হওয়ার কথা ছিল। শিক্ষকরা রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা থেকে সকালে সেখানে এসে দেখেন বিপুলসংখ্যক দাঙ্গা পুলিশ ও র্যাব যুদ্ধংদেহী মনোভাব নিয়ে অবস্থান করছেন। আশপাশের এলাকাও পুলিশ ঘিরে রেখেছে। ওই এলাকায় শিক্ষকদের দাঁড়াতে দেয়া হয়নি। প্রেস ক্লাবে যেতে না পেরে বেলা সাড়ে ১১টার দিকে শিক্ষক-কর্মচারী শহীদ মিনারে জড়ো হতে থাকেন। দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে তাদের অনেকে শহীদ মিনারের বেদিতে ও পাদদেশে শুয়ে পড়েন। পুলিশ এসে দুপুর ২টার মধ্যে শহীদ মিনার থেকে সরে যেতে বলে। বেলা ১টার দিকে তারা মাইকিং করার চেষ্টা চালালে পুলিশ মাইক কেড়ে নেয়। পুলিশের বেঁধে দেয়া সময় পার হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে দুপুর ২টার দিকে মরিচের গুঁড়া স্প্রে করা হয়। মরিচের গুঁড়ার কবলে শিক্ষকরা ছত্রভঙ্গ হয়ে যায়। ঐক্যজোটের সভাপতি এশারত আলী বলেন, সকালে প্রেস ক্লাবের সামনে শিক্ষক-কর্মচারীরা জড়ো হতে চাইলে পুলিশ তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করে। শিক্ষকদের গ্রেফতারের হুমকি দেয়। ভয়ে অনেক শিক্ষকই প্রেস ক্লাবের সামনে আসেননি। এরপরও শিক্ষকরা তোপখানা রোড হয়ে প্রেস ক্লাবের সামনে যেতে চাইলে তাদের বাধা দেয় পুলিশ। তাই তারা কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে কর্মসূচি পালন করার সিদ্ধান্ত নেন। শিক্ষক সমিতির সভাপতির দাবি, মরিচের গুঁড়া হামলায় তিনিসহ (সভাপতি) অন্তত অর্ধশত শিক্ষক-কর্মচারী অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। মরিচের গুঁড়ায় আক্রান্ত হয়ে চোখে জ্বালাপোড়া হচ্ছে সবচেয়ে বেশি। সারা শরীরেও জ্বালাপোড়া হচ্ছে। অসুস্থদের মধ্যে ৩০ জন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। মরিচের গুঁড়ার কবলে পড়েন সময় টেলিভিশনের এক সাংবাদিকও। কর্মসূচি পণ্ড ও মরিচের গুঁড়া হামলা সম্পর্কে শাহবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সিরাজুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, অনুমতি ছাড়াই শিক্ষকরা এখানে জমায়েত হয়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টরের অনুমতি না থাকা এবং কোনো অনুষ্ঠান করার ক্ষেত্রে হাইকোর্টের নির্দেশনা অমান্য করায় শিক্ষকদের শহীদ মিনার ছাড়ার অনুরোধ করা হয়েছিল। তা না হলে তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নিতে পুলিশ বাধ্য হবে বলে তিনি জানিয়েছিলেন। আর এ কারণেই শহীদ মিনার থেকে তাদের সরিয়ে দেয়া হয়েছে।

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।


