চারিদিকে ডেঙ্গুর ভয়বহতা, সামনে সেপ্টেম্বর মাসে আরো বাড়তে পারে। কিন্তু রাজনৈতিক মাঠ সরগরম থাকার ফলে এখন এদিকে কারো কোন খেয়াল নেই। প্রতিটি হাসপাতাল ডেঙ্গুরোগীতে পূর্ণ। এবং হাসপাতালগুলি চিত্র, ব্যবস্থাপনা ও হাসপাতালের আশেপাশের পরিবেশ দেখলে মনে হবে না যে রোগ নিয়ন্ত্রণ হবে বরং রোগ ছড়াবে একথা বলা যায়। ডেঙ্গু গবেষণায় ছিল এ মশা বিকেল সন্ধ্যার আগে, ভোরের মিষ্টি আলোয় কামড়ায় কিন্তু এখন দেখা যাচ্ছে যে কোন সময় কামড়াতে পারে। তেমনি ভাবে গবেষণা বলছে এ মশা স্বচ্ছপানিতে ডিম পারে, অস্বচ্ছপানিতেও যে ডিম দেয় না একথা জোড় দিয়ে বলা যাবে না কেননা রূপ বদলাতেও পারে। তাই সরকার বা সিটি করপোরেশন একক ভাবে ডেঙ্গু মোকাবেলা করতে পারবে না। পারত যদি এদেশে আইন প্রয়োগকারী সংস্থাকে রাজনৈতিক তোষামদী না করতে হত। তাই আমাদের সম্মিলিত ভাবে কাজ করতে হবে।
আমরা একটু লক্ষ্য করলেই দেখতে পাই করনো কালীন সময়ে ডেঙ্গু বা মশা বাহিত রোগের প্রকট কম ছিল যার প্রধান কারণ তখন প্রতিটি ঘরে ঘরে স্যানিটাইজার, বিলিচিং, সাবানের যথাযথ ব্যাবহার ছিল করনো থেকে বাচার তাগিদে। বাসাবাড়ির হাউজের পানিই ড্রেনে গিয়ে পরে যার ফলে মশার উৎপাদন কম ছিল। কিন্তু করনো বিধি নিষেধের সাথে সাথে আমরা আবার সেই আগের অবস্থানে, নেই স্বাস্থ্য বিধি, নেই কোন ব্লিচিং পাউডারের ব্যাবহার। আর জাতিগত ভাবে আমরা কখনও ময়লা যথাস্থানে ফেলতে পারি না। আমাদের ময়লা ফেলার যথাপুযুক্ত স্থান ড্রেন, যার ফলে প্রতিটি ড্রেন একএকটা ময়লার স্তুপ। অনেকেই বলবেন ওসব ময়লা স্থানে ডেঙ্গু মশা ডিম পারে না, কিন্তু সাধারণ মশা তো বংশবিস্তার করছে।
মশাবাহিত রোগ থেকে বাচতে হলে প্রথমেই আমাদের পরিস্কার পরিচ্ছণতার দিকে নজর দিতে হবে। নিজ বাসা, বাসার আশে পাশে পরিস্কার পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে, অনন্ত ১৫দিনে একবার ব্লিচিং পাউডার ব্যবহার করতে হবে যেন জীবানু ধ্বংশ হয়। যদিও দুঃখের বিষয় এই দেশে মানুষ কোরবানির সময় সিটি করপোরেশনের ব্যাগ ও বিলিচিং পাওডারের আশায় বসে থাকে লাখ টাকার পশু জবাই দিয়ে, তারা যে বাড়ি, বাড়ির আশে পাশে ব্লিচিং পাউডার স্প্রে করবে না একথা সহজে বলা যায়। কিন্তু বাঁচতে হলে ছেচড়ামি ভুলে কাজে লাগতে হবে। সচেতনতা মূলক কর্মসূচীতে এ জাতি কোন দিন সচেতন হয়নি তাই সরকারী সংস্থাকে এ বিষয়ে কঠোর হতে হবে। আমাদের যুব সমাজকে ইউটিউব, টিকটক আর ফেসবুক ব্লগিং এর পাশাপশি সামাজিক কাজে বিশেষ করে পরিষ্কার পরিচ্ছণাতা মূলক কাজের ক্যামপিং, নিজে সচেতন, প্রতিবেশিকে সচেতন করতে হবে। বাড়ির মালিকদের ছ্যাচড়ামো ভুলে পরিষ্কার পরিচ্ছন হতে হবে, ভাড়াটিয়াদের বস্তিবাসির ন্যায় বসবাস না করে সভ্যসমাজের মত বসবাস করে ময়লা যত্রতত্র জানালা দিয়ে বাইরে না ফেলে নিদিষ্টি স্থানে ফেলতে হবে। অন্যথায় সরকার যত পদক্ষেপই নিক না কেন কোন পদক্ষেপেই কাজ হবে না।
সর্বশেষ এডিট : ৩১ শে আগস্ট, ২০২৩ দুপুর ১২:১৩