ব্লগে লিখতে অনেকের মত আমিও অনেকটা উৎসাহ হারিয়ে ফেলেছি। তারপরও বিবেকের তাড়নায় মাঝে মাঝে লিখি। দেশের চলমান রাজনীতি অঙ্গনে প্রধান দুই রাজনৈতিক দলের নিজস্ব সাংগঠনিক সভাসমূহে, নেতৃবৃন্দের আলোচনা দেখে মাঝে মাঝে চিন্তা করি, সংবাদের শিরোনামটা কি হতে পারে ?
একটি দলের কার্যনির্বাহী কমিটির সভা, বার্ষিক সাধারন সভা, এলাকা ভিত্তিক তৃনমূল নেতৃবৃন্দের সাথে আলোচনা সভা সহ সংগঠনের সকল সাংগঠনিক সভায়, দলের প্রধান সহ সকল নেতৃবৃন্দের কন্ঠে যত না নিজ দলের সাংগঠনিক আলোচনা থাকে, তার চেয়ে কমপক্ষে তিনগুন বেশী থাকে বিরোধী দলের পর্যালোচনা। আর তৃনমূল নেতৃবৃন্দের কন্ঠে থাকে না পাওয়ার হতাশার বেদনা আর একগাদা গুনকীর্তনের মোসাহেবী বক্তব্য।
অথচ, এই সকল সভায় দল ও দেশের স্বার্থে অনেক গুরুত্বপূর্ন সিদ্ধান্ত নেবার কথা।দেশের রাজনৈতিক দলসমূহ যে, মেধাশূন্য এবং আমলাতান্ত্রিকতায় পরিবেষ্টিত হচ্ছে, এটা তার প্রকৃষ্ট প্রমান।
সম্প্রতি একজন শীর্ষ নেতা বলছিলেন, প্রধান দুই দলের রাজনীতি এখন শুধু নির্বাচনমূখী, যেখানে ক্ষমতাই মূখ্য। এমন কোন আদর্শ তারা দাড় করাতে পারেননি, যার মাধ্যমে তারা জনমূখী রাজনীতি করতে পারবেন।সেজন্যই তাদের সাংগঠনিক সিদ্ধান্ত নিতে হয়না। নেতা নির্বাচিত হয় সিলেকশন কমিটির মাধ্যমে।
প্রকৃতপক্ষে, এই দুই দলের আদর্শ এখন জরাজীর্ন ভাগাড়, প্রথমত, ধর্মনিরপেক্ষতা এখন আর কোন আদর্শের নাম নয়, কারও কারও মতে এটাও একটি ধর্ম ব্যবসায়ী, সুবিধাবাদী মতবাদ। বিশ্বের সকল স্থানে এই আদর্শের ধারক বাহকদের দেখা গিয়েছে ধর্মের নামে সংখ্যালঘুদের স্বার্থ নিয়ে রাজনীতি করতে এবং সুবিধামত সময়ে সংখ্যা গরিষ্টদের সাথে হাত মিলিয়ে রাজনীতি নামের ছদ্মাবরনে সুকৌশলে চাতুরি করতে।
আর জাতীয়তাবাদী আদর্শও এখন নিশ্চল। কারন আমি বাঙ্গালী না বাংলাদেশী এটা গ্লোবালাইজেশনের যুগে আদর্শ নয়। সবচেয়ে বড় কথা -আমি মানুষ, এ দেশ আমার।
বস্তুত নেতারাও এই কথাটা বুঝেন। তারা সবসময় একটা সাময়িক ইস্যু তৈরী করে ঝুলিয়ে পরবর্তী বৈতরনী পারের চিন্তা করেন। এ জন্যই হয়তবা আমলানির্ভর মন্ত্রীসভা আমাদের দেখতে হয়, বিশল মন্ত্রীর বহরে নিজ দলের দু-একজনকে দেখা যায় সাজিয়ে রাখা গোলাপের মত।
হয়তবা সেদিন বেশী দূরে নয় , যেদিন এদেশের পরবর্তী প্রজম্ম ইতিহাসে পড়বে, বাংলাদেশে আওয়ামীলিগ এবং বিএনপি নামের দুইটি দল ছিল, তাদের প্রতিষ্ঠাতারা জীবদ্দশায় যা করে গিয়েছেন, পরবর্তীতে তার উত্তরসূরীরা হাটে তা বিক্রি করে রাজনীতির সংসার চালাত। অগত্যা তাদের পন্য যখন পুরনো হয়ে গেল , মাছি ছাড়া তাদের কাছে আর কেউ ভিড়ে নাই । ফলে, না খেয়ে তারা মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েছিল।