যাই হোক আমি অনেকটা পাগলা গোছের। মানুশের সাথে মিশে যাই সহজে। আমার পার্সোনাল সার্কেলে ঢোকা একটু কঠিন হলেও বের হওয়া আরো কঠিন . আমার সাথে প্রথম পরিচয় হয় মায়াবতী নীলকন্ঠি। অসম্ভব মায়াবতী । আমি পাগলের মত গড়্গড়িয়ে যা তা বলি সেটা সে সুন্দর করে হজম করে ফেলে। . একদিন তার স্ট্যাটাসে তার সাথে টাঙ্কি মারা সময় হুঙ্কার করে ছুটে এলো টেস্টিং সল্ট . তার ডায়লগ মায়াবতী শুধুই আমার। চোখ তুলে তাকালেই চোখ খুলে ফেল্বো . টেস্টিং সল্টের সাথে কিছুক্ষন টুং টাং কেচাক করার পর টেস্টিং সল্ট আমাকে ফলো মারলো আমিও তাকে ফ্রেন্ড রিকু দিলাম সাথে সাথেই এক্সেপ্ট .তারপর শুরু হলো আবার আমাদের ঢিসুম ঢিসুম। এ যে আশ্চর্য একজন। পুরাই আমার টাইপ। চ্যাটে কথা হলো। তখন জানলাম আমার স্কুল ফ্রেন্ডের কলেজ ফ্রেন্ড ও। বাসা আমার সেকেন্ড হোম গ্রাউন্ডের পাশেই। বহুক্ষন গ্যাজানোর পর ঠিক করলাম মায়াবতী ঢাকা আসলেই আমরা দুই বান্দর আরেক সুন্দর দেখা করবো।
হরতালে বাসায় বসে থেকে থেকে পায়ে খিল ধরে যাচ্ছিল। মনে হচ্ছিলো বাইরে গেলে দম ছাড়তে পারতাম।
গত পরশু সকাল ১০ টায় অনলাইনে পেলাম টেস্টিং সল্টকে- দ্বিধা না করেই বললাম। এই আমি তোর এলাকায় আসবো। সন্ধ্যায় ফোন দেয়া মাত্রই ঘর থেকে বের হবি .
লক্ষ্মী বাচ্চাটা- কেনো, কি জন্যে জিজ্ঞেস না করেই বলল -ওকে আসার আধা ঘন্টা আগে জানাইস।
আমিঃতুমি কি পার্লারে যাইবা? তোমারে আধা ঘন্টা আগে বলতে হবে
টেস্টিং সল্টঃ না, এমনি। ইফতার করে একটু রিলাক্স হবো না
২ টার দিকে টেস্টিং সল্ট আমাকে ফোন দিয়ে বলে। এই কখন আসবি? আমিতো রাস্তায় রাস্তায় ঘুরতেছি ।
আমিঃ আমি না ইফতারের পর আসবো বলছিলাম .
আহারে ভালুবাসা !!!আমি আসার ৫ ঘন্টা আগেই সে রাস্তায় নেমে গেছে
আমি ততক্ষনে জুহরের নামাজও পরিনাই . তাড়াহুড়া করে নামাজ পড়ে আম্মুকে গিয়া বললাম-আম্মু, বিত্তি আপুর বাসায় যাবো।
আম্মুঃ এই হরতালের দিন কেনো যাবি?
আমিঃ বৃষ্টি আপুকে দেখতে ইচ্ছা করে .
আম্মুঃ ভাগ্যভালো বৃষ্টির কোন ভাই নাই .
আম্মুর সাথে বেশি কথা না বাড়িয়ে ছুটে গেলাম বেইলি রোডে 'ভালুবাসার টানে কাছে আনে'র মত। যেতে যেতে টেস্টিং সল্ট আমাকে দুইবার ফোন দিয়ে ফেলল। কতক্ষন লাগবে যামুগা কিন্তু .
আমি হু হু করে দৌড়ে চলে গেলাম বেইলি রোড। তখন মহাশয়ের দেখা নেই . রোজা রমজানের দিন কাওয়ার মত বি এফ সি র চার পাশে চক্কর দিতে লাগলাম। . কিছুক্ষণ পর আমার ফোন গেয়ে উঠল-
As sly as a fox, as strong as an ox
As fast as a hare, as brave as a bear
ফোন ধরতেই অপরপাশ বলছিল ফোনটা রাখ। রাখতেই দেখলাম। একটা ফতুয়া, কালো জিন্স আর কনভার্স পায়ে ভাব দেখাইতে দেখাইতে টেস্টিং সল্ট চলে আসছে . ওকে দেখেই দৌড়ে জরিয়ে ধরলাম। যেনো কত বছর ধরে চিনি। কত বছর পর দেখা হল। . আমার হাতে পোর্টফোলিও ছিল। ফিল্মি স্টাইলে ওগুলো ছুড়ে দিয়েই ওর কাছে দৌড় দিয়েছিলাম।পরে ওটা বাসার গেইটে রেখেই উনার সাথে হাটা ধরলাম। হাটতেই আছি হাটতেই আছি। আমরা এভাবে কথা বলছিলাম যেনো দুজনকে দুজন কত বছর ধরে চিনি। যথেস্ট ফানি, ফ্রেন্ডলি আর অন্যরকম একটা চরিত্র। দুজনে বেশ কিছুক্ষণ রাস্তায় বসে আড্ডা দিলাম।তারপর ইফতারের একটু আগেই দুইজন দৌড় দিলাম পানি আনতে। পানি নিয়ে আমাদের জায়গায় ফিরে আসতে আসতে আজান দিয়ে দেয়। দুইজন একটা এ টি এম বুথের সামনে বসে পানি খেয়ে আবার সেই জায়গায়। বকবক করতে করতে কখন যে রাতের পৌনে দশটা গিয়েছিলো বুঝেই উঠতে পারনি . মনে হচ্ছিল এই মাত্র আমাদের বক বক শুরু হল . কি আর করা "যেতে নাহি দেবো তবু যেতে দিতে হয় " দুইজন শান্তিনগর মোড়ে এসে দুইকাপ চা খেলাম। টেস্টিং সল্ট লাইক আদার ফ্লেভার দেয়া চা। চা খেয়ে হাটতে হাটতে টেস্টিং সল্টের বাড়ির কাছে গেছি। তখন তার লেবুর শরবত খাবার শখ চাপছে। দুইজন দুই গ্লাস লেবুর শরবত খেলাম। ও তখন বলছিলো বাসায় চিনি, বিটলবন এতো কিছু দেই তবুও শরবত মজা হয় না কেন? আমার রিপ্লাই ছিলো- কারন ওটাতে রাস্তার ধুলা থাকেনা ।
অতপর তাহাকে বিদায় দিয়া আমি আমার প্যাভিলনে ব্যাক করিলাম।
টেস্টিং সল্ট এর সনাক্তকারী বৈশিষ্ট্যঃ এক কথায় মাইন্ড ব্লোয়িং। যতক্ষণ একসাথে ছিলাম। মনেই হয়নি যে এই আমাদের প্রথম দেখা। খুন্সুটি, ঝগড়া ঝাটি, মারামারি, হাসাহাসি কি ছিলোনা !! বহুত স্ট্রং সে। আই লাইক ইট। ও আমাকে একবার বলছিলো টেস্টিং সল্টের দেখা টেস্টিং সল্টের হাগ মানুষ সহজে পায়না। নিজেকে ভাগ্যবতি মনে কর . সেদিন আমরা দুজন গল্পে এতোই মশগুল ছিলাম পানি ছাড়া ইফতারে কিছুই খাইনি। তবুও কোন ক্লান্তি ক্ষুধা আমাদের স্পর্শ করছিলো না।
আসলেইরে। তুই অসাম। তুই অন্যরকম। তোকে পেয়ে আমি ধন্য।
আশা করি আজিবন আমরা এমনি থাকব।
"জীবন আধারে পেয়েছি তোমারে
চিরদিন পাশে থেকো বন্ধু
আমার সুখে,আমার দুখে
তুমি ভরসা ওগো বন্ধু "
আমাদের প্রথম সাক্ষাতের কাহিনি নিয়ে টেস্টিং সল্টের ব্লগ :দ
ও হ্যা আমাদের গেট টুগেদারের ছবি দিতে ভুলেই গেছিলাম। এই যে আমাদের গেট টুগেদারের ছবি