বিজ্ঞান বইয়ে থার্মোমিটার পড়িতেছিলাম। আরে ইহা তো আমার বাড়িতেই রহিয়াছে। ছুটিয়া গিয়া তাহা নিয়া আসিয়া বাপজানের নকল করিয়া আগে লেজ ধরিয়া কয়ডা ঝাঁকি মারিলাম, মুখের মধ্যে কতক্ষণ পুরিয়া রাখিলাম, তারপর সেটাকে বিভিন্ন এ্যাঙ্গেলে ধরিয়া/কাত করিয়া/চিৎ করিয়া যে ক্ষণে তাপমাত্রা বাহির করিতে পারিলাম তখন আমার "আলন্দ" দ্যাখে ক্যাঠায়।
ক্রমে শুরু হইল আমার একের পর এক তাপমাত্রা মাপন প্রক্রিয়া।
মুখের মধ্যে রাখিয়া একবার। বগলে রাখিয়া একবার। এবং বিভিন্ন অন্ত:অঙ্গেরও তাপমাত্রা পরিমাপ শেষে যখন দেখা গেল শরীরের আর কোন অংশই বাদ নাই তখন ভাবিলাম তাহলে আগুনের তাপমাত্রা পরিমাপ করা যাক এক্ষণে।
ছুটিয়া গেলাম রান্নাঘরে। দেখিলাম চুলা জ্বলিতেছে না, আগুন নাই; তবে একখানা বালতিতে গ্যাভ্রকে(গাভী) খাওয়ানোর উদ্দেশ্যে উৎপাদিত ভাতের মাড় ভর্তি করা আছে এবং সেখান হইতে ধোঁয়া উঠিতেছে, বুঝিলাম যথেষ্ট গরম হইবেক, ইহারই তাপমাত্রা মাপা যাক এক্ষণে।
ডুবিয়ে দিলাম থার্মোমিটার সেখানে। এক সেকেন্ড হয়েছে কি হয় নি অতিশয় সূক্ষ্ণ একটা ঝাঁকুনিমূলক অনুভূতি হল আঙ্গুলের ডগায়। থার্মোমিটার উঠিয়ে দেখি হায় হায়............ হেতের মাথা কনে.... মাথা নাই থার্মোমিটারের, তাপের চোটে ফাটিয়া পড়িয়া গিয়াছে।
বাপে আমার যে পরিমান প্যাদায়....! এইটা জানিতে পারিলে নিশ্চিত কপালে খারাবী আছে। তবে আশার কথা হইল বাসা মে কই নেহি হে।
সুরসুর করিয়া গিয়া ভালো মানুষের মত ওই ভাঙ্গাটাই প্যাকেটে পুরিয়া যথাস্থানে রাখিয়া দিয়া ভাগিলাম।
পর দিন সকাল বেলা দোতলায় জানালার কাছে বসিয়া পড়িতেছি। এই নিচ হইতে ব্যাঘ্রসম ফ্রিকোয়েন্সীতে বাপজানের চিল্লানি কানে আসিল।
"থার্মোমিটারের এই মাথাডি ভাঙ্গছে ক্যাঠায়.................."
আমি ভালো মানুষের মত পড়িতে শুরু করিলাম।
গ্রীক দার্শনিক এ্যারিষ্টোটল বলেছেন, গ্রীক দার্শনিক এ্যারিষ্টোটল বলেছেন(জোরে), গ্রীক দার্শনিক এ্যারিষ্টোটল বলেছেন(আরো জোরে)
সর্বশেষ এডিট : ০৮ ই নভেম্বর, ২০১৬ বিকাল ৪:৪০