বিজ্ঞান বইয়ে স্লাইড ক্যালিপার্স জিনিসটা আমার বড়ই ভালো লাগিতো। স্কুলের ল্যাবে দেখলেই মনে হতো আমার একটা কিনিতে হইবে। দনোমনো করিতে করিতে একদিন হেড স্যারকে জিজ্ঞাসাই করে বসলাম স্যার এটার দাম কত।
হেড স্যার শায়েস্তা খাঁর আমলের একটা খাতা বাহির করিয়া, অনেক খুঁজিয়া শেষে আমাকে কহিল দাম ১৮০ টাকা।
এবার আমার শুরু হল ১৮০ টাকা জোগাড় করার মিশন। টিফিনের টাকা বাঁচাইয়া, মেলার খরচ অর্ধেক রাখিয়া দিয়া, বিকেলের সদাই খাওয়া কমাইয়া দিয়া বহুত কষ্টে অনেক সময় নিয়া যখন ১৮০ টাকা জমা হইল তখন অপেক্ষা করিতে থাকিলাম কবে বাপজান শহরে লইয়া যায়।
সেই মোক্ষম দিনও আসিল। শহরে গেলাম এবং সাতমাথায় গিয়া বাপজানকে আমার ইচ্ছার কথা প্রকাশ করিলাম।
সাথে সাথে ব্যাঘ্র ফ্রিকোয়েন্সী শুনিয়া চুপ মারিয়া যাইতে হইল। বুঝিলাম কহিয়া ইহা মোটেও সিদ্ধ হইবে না।
আর যখনই দেখলাম বাপ একটু অন্য দিকে খেয়াল করে আমার হাত ছেড়ে দিয়েছে সাথে সাথে আমি চম্পট। সোজা সায়েন্স ল্যাব।
এটা আগে থেকেই চেনা ছিল। পাশের দোকানে বাজান যখন ওষুধ কিনতো আমি দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে এই দোকানের থরে থরে সাজানো কেমিকেলের বোতল আর যন্ত্রপাতি দেখতাম।
যাই হোক, দোকানে দাঁড়িয়ে কেবল জিজ্ঞাসা করেছি "আংকেল স্লাইড ক্যালিপার্স আছে?"
দোকানদার মাত্র বলেছে "আছে বাবু...."
সাথে সাথে আমার ডান কর্ণদেশের অর্ধভাগে বি.....শা......ল একটা টান অনুভব করিলাম...। কান মনে হয় ছিঁড়বে ছিঁড়বে ভাব।
স্লাইড ক্যালিপার্স কেনার শখ আমার শিকেয় উঠলো।