"মিথেন গ্যাসের চুলায় ভাত রান্না করবো" এরকম একটা অভিপ্রায় সামনে রাখিয়া দু' প্যাকেট রাজা বেলুন কেনা হইল আট আনা পিস করিয়া। রাজা বেলুনের অরিজিনাল উপকারিতা কি তাহা সম্পর্কে সেসময় অবগত ছিলাম কি না তাহা এক্ষণে ঠিক করিয়া কহিতে পারি না।
যাই হোক বেলুন কেনা হইলো, বালতি/স্যালাইনের নল আনা হইলো, এক দঙ্গল উৎসাহী ছেলেপুলে লইয়া আমি অর্ধপচা পুকুরে নামিলাম।
দু' জন পচা কাদা মারিতে মারিতে সামনে যায়, তাতে কাদার মধ্যে আটকে থাকা মিথেন গ্যাস বুদবুদ হয়ে ওঠে, একজন তার পেছনে বালতি ধরে ধরে এগোয়, বালতির ভেতরে নলের এক মাথা আর আরেক মাথা রাজা বেলুনের ভেতরে ঢুকানো, সেই বেলুন ধরে পাশে পাশে আরেকজন হাঁটে।
এভাবে দুই ঘন্টা ধরে পুকুরের তিন পাড় ঘুরিয়া দুইটা বেলুন ফুলানো গেল কিন্তু এক বুরবক সাগরেদ বেড়ার কাঁটায় লাগাইয়া একটা বেলুন বাড়িতে আনার আগেই ফাটাইয়া ফেলিল।
বাড়িতে চুলা আগেই রেডি করা ছিল। ড্রপ তারের তিনটা এ্যাঙ্গেল বানাইয়া একটা চুলা বানিয়েছিলাম আর তার উপরে খেলনা পাতিলে কিছু চাল পানি দিয়ে রেখে দিয়েছিলাম।
এক ঝাঁক পোলাপাইন আঙ্গিনা ভর্তি রান্না দেখিবার জন্য। আমি স্যালাইনের নলের এক মাথায় একটা চিকন এ্যালুমিনিয়ামের পাইপ লাগাইয়া দিলাম। নাহলে তো আবার আগুনে নল গলিয়া যাইবে। পাইপটা পাতিলের নিচে ফিট করিয়া দিলাম আর সাগরেদরে কহিলাম গ্যাস ছাইড়া দে।
সাগরেদ গ্যাস ছাড়িল, আমি ম্যাচের কাঠি জ্বালাইয়া পাইপের মুখে ধরার সাথে সাথে দপ করিয়া আগুন জ্বলিয়া উঠলো।
আমগোর আলন্দ আর দেখে কে! হক্কলে হুররে দিয়া উঠিলাম.....। পোলাপাইনের মধ্যে মারামারি লাগার অবস্থা কে কার আগে মাথা নিচু করিয়া গ্যাসের আগুন দেখিবে।
কিন্তু একী!!!
এক মিনিটও বোধহয় হয় নাই, বেলুন এমন শুকাইয়া গেল ক্যান!!!
পরবর্তী মাত্র কয়েক সেকেন্ডের মধ্যেই বেলুনের সব গ্যাস শেষ হয়ে আগুন নিভে চলে গেল। সবাই ব্যর্থ মনোরথে চলিয়া গেল। রান্না হইলো না।
রবিবাবু বাঁচিয়া থাকিলে হয়তো লিখিতেন:
ওহে লাটু নরাধম
বুদ্ধি-সুদ্ধি বড়ই কম
না বানিয়ে গ্যাসের ডোম
আনিয়াছ কনডম।