ইবনে সিনা বা আলকেমী কোন জন যেন সোনা বানানোর ফর্মূলা জানতো। আমার মাথায় সে ভূত আসিয়া চাপিলো।
বাসায় কয়েকটা বোতল ছিল। একটিতে এ্যালকোহল, একটিতে ভিনেগার আর আরেকটিতে কি ছিল মনে পড়ছে না। আর আমি কিনেছিলাম
কর্পূর, নিশাদল, হাইড্রোজেন পার অক্সাইড, বোরিক, বিট লবন এগুলো সব সস্তা জিনিস।
ঘরের আলমিরার উপর সাজিয়ে রেখেছিলাম সব।
রোজ ওগুলো নিয়ে বসতাম। কোনদিন এটার সাথে ওটা, আবার কোনদিন ওটার সাথে এটা, তার সাথে আরেকটা মিশিয়ে মিক্সচার বানাতাম। সিরামিকের কাপে ভরিয়ে সে মিক্সচার দিতাম রেখে আর স্বপ্ন দেখতাম কোন একদিন সকালে উঠে দেখবো আমার কাপ ভর্তি মিক্সচার সোনা হইয়া গিয়াছে। হায়রে কপাল!
সাথে ইহাও স্বপ্ন দেখিতে ভুলিতাম না যে আমার সোনা বানানোর ফর্মূলা দেখিয়া পুরো বিশ্ব মচৎকৃত হইয়াছে, দেশ-বিদেশ হইতে আমার ডাক আসিতেছে, সবাই বলাবলি করিতেছে একবিংশ শতাব্দীর "চেরেষ্ঠ" কেমিষ্ট্রিস্ট হল এই ছোকড়া!
কিন্তু শিকে আর কোনদিন ছিঁড়ে না, আমার কোন মিক্সচারই সোনায় পরিণত হয় না, উপরন্তু এই সম্ভাব্য সোনার মিক্সচার আমাকে দেড় মাসটাক প্রায় অনাহারে রাখিয়াছিল।
সেদিন একটা মিক্সচার বানানোর পর দেখিলাম মিক্সচারের কালারটা অদ্ভূত রকমের সবুজাভ স্বচ্ছ। আমার খুব নজর কাড়িলো মিক্সচারটা।
কি মনে হইলো আমার কহিতে পারি না। একটা চা-চামচে করিয়া খানিকটা মিক্সচার তুলিয়া লইলাম এবং ঠোঁট দু' টি ফাঁক করিয়া জিহ্বার অগ্রভাগ তাহাতে স্পর্শ করিলাম।
আর যাই কোথায়! সোনার মায়েরে বাপ! আমার জিহ্বা যেন জ্বলিয়া, পুড়িয়া ছাড়খাড় হইয়া গেল। দৌড়িয়া গিয়া কুলি করিয়া জ্বলুনি কতকটা থামাইলাম সেক্ষণে কিন্তু জিহ্বার আগায় মারফতী একটা ঘা হইয়া গেল দুয়েক দিনের মধ্যেই।
বহুত দিন ভোগাইলো সে ঘা এবং ঘা শুকানোর সাথে সাথে আমার সোনা সেখানেই থামিয়া গেল।
সর্বশেষ এডিট : ১২ ই নভেম্বর, ২০১৬ সকাল ১০:০৪