সবে মাত্র পরিবাহী, অপরিবাহী, রোধ, ইন্ডাকটর, ক্যাপাসিটর বিষয়গুলো জানিতে শুরু করিয়াছি। সবেমাত্র আমার দীর্ঘদিন-লালিত প্রশ্নের জবাব পাইয়াছি যে একটা বাতি জ্বালাইতে দুইটা তার লাগে কেন।
ইতোমধ্যে একদিন জানিলাম কি আমাদের ঘরে যে বৈদ্যুতিক বাতি জ্বলে তাহা আসলে কিছুই না। এই বাতিগুলোকে বলে ইনক্যানডিসেন্ট ল্যাম্প আর এর ভেতরে থাকে একটা ট্যাংষ্টেন এর প্যাঁচানো তার। সুইচ অন করিলে ওই ট্যাংষ্টেন এর তারের ভিতর দিয়ে বিদ্যুৎ প্রবাহিত হয়, সেইটা গরম হইয়া ওঠে আর অতিরিক্ত গরম হইয়া লাল হইয়া ওঠে ফলে আলো বাহির হয়।
ভবেশ রায়ের লেখা "বিজ্ঞানের শত আবিষ্কার" বইটা খুব প্রিয় ছিল আমার। বইটার উপর ভীষণ রকম রাগ হইলো এই কারণে যে এই সাধারণ চুল জিনিস বানানোর লাইগা এডিসন মিয়ার ১০০০ বার স্যাম্পল নষ্ট করা লাগছে। আমি মোটেও ইহার যথার্থতা খুঁজিয়া পাইলাম না।
কহিলাম দাঁড়াও আমিও একটা বানাইয়া দেখাইতেছি।
বাড়ি আসিয়া ছোট বোনের একটি রৌপ্যনির্মিত নূপুর হস্তগত করিলাম এবং আমার ঘরে আসিলাম। আমার পরিকল্পনা এমন যে নূপুরের দুই মাথা সকেটের দুই ফুটাতে ঢুকিয়ে দেব এবং দিয়া সকেটের সুইচ দিয়ে দেব। সাথে সাথে নূপুর গরম হয়ে পুরো ঘর রোশনায় করে আলো জ্বলতে থাকবে।
প্লান মত নূপুর ঢুকিয়ে দিলাম সকেটের দুই ফুটায়। তারপর আস্তে করিয়া সুইচ টিপ্পা দিলাম।
"ঢাশ...................."
বিশাল একটা শব্দ হলো। সাথে সাথে খানকতক আগুনের ফুলকি সকেট থেকে বের হয়ে ছিটকে পড়লো।
তব্দা লাগিয়া থাকিলাম কিছুক্ষণ, তারপর জ্ঞান ফিরিলেই বুঝিলাম যে "আকামা" হইয়া গিয়াছে কিছু একটা। আমি ভালো মানুষের মত নূপুরটা বের করে নিয়ে সটকে পড়লাম।
রাতে বাবা ফিরিয়া আসিয়া দেখিলো পুরো বাড়ি আলো জ্বলে না। মেইন সুইচ উঠাইয়া দিতেই আলো জ্বলিলো কিন্তু কেন মেইন সুইচ পড়িয়া গিয়াছে তদন্ত করিতে যাইয়া দেখিলেন আমার ঘরের বোর্ড পুরাই জ্বলিয়া গিয়াছে। আমাকে ধরিয়া বসিলেন।
আমি আবার ভালো মানুষ সাজিলাম। কোন জবাব না দিয়া মাথা নিচু করিয়া এশার নামাজ পড়িতে রওনা দিলাম।
আমি আবার মিথ্যা বলি না তখন, পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়ি কি না!!!
সর্বশেষ এডিট : ১৩ ই নভেম্বর, ২০১৬ সকাল ১১:৫৭