somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

ক্লে ডল
কান্না হাসির এই খেলা ঘরে।আমি এক জীবন্ত মাটির পুতুল।সব খেলা সাঙ্গ হবে একদিন।অপূর্ণ স্বপ্নদের কাকুতি থেমে যাবে।মায়ার পৃথিবীর সাথে হবে চির ছাড়াছাড়ি।

রাগ,অহংকার, প্রতিহিংসা, পরচর্চা..... এ খাঁচা ভাঙ্গব আমি কেমন করে!!

১২ ই আগস্ট, ২০১৭ দুপুর ১২:০১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



পাপবোধ নিশ্চিন্তে যতই মানুষের মনে বসবাস করুক, আমি সুবোধকে পালিয়ে যেতে বলব না। বলব, সুবোধকে জাগ্রত হতে। পাপ পুণ্যের নাগরদোলায় মানব জনম দুলে চলে আমৃত্যু। কখনো পাপের দিকে ঝুঁকে পড়ে আবার কখনো ঝোঁক সামলে খানিকটা পুণ্য লাভ করে।
পাপের বোধ মানুষের না হতে পারে, সে নিশ্চিন্ত থাকতে পারে কিন্তু পাপ কখনো মানুষকে শান্তি দেয় না। দৈনন্দিন এমন অনেক কর্মকাণ্ড আছে যা অন্যায় না ভেবেই মানুষ করছে, ধর্মের মাপকাঠিতে যাকে পাপ বলে আর আত্মিক বিচারে আমি বলব অশান্তি। কিন্তু আপত দৃষ্টির অগোচরে রয়ে যায় সে অশান্তির উৎস।


রাগঃ একেবারেই রাগ হয় না বা রাগ নেই এমন মানুষ বোধ হয় পৃথিবীতে খুঁজে পাওয়া যাবে না। রাগ না হওয়াটাও অস্বাভাবিক। কিন্তু গুণের বিষয় হল এই রাগটাকে কে কত সাবলীলভাবে নিয়ন্ত্রণ করছে। রাগ প্রকাশ করলে বা যার উপর রাগ হল তাকে দুকথা শুনিয়ে দিলে, বা দুঘা কষে দিলে মানুষ শান্তি পায়। কিন্তু সে শান্তির স্থায়িত্ব তো খুবই সামান্য।
ধরা যাক, কেউ রিকশা করে অফিস যাচ্ছে। খুব জরুরী মিটিং। দেরী হলে বসের বকুনি শুনতে হবে। এমন সময় রিকশার চেইন পড়ে গেল। ঠিক করতে রিকশাওয়ালা ১০ মিনিট সময় নিল। কিছুদূর যাওয়ার পর আবার চেইন পড়ল। এ অবস্থায় রাগ না হওয়াটাই অস্বাভাবিক। রিকশাওয়ালার সাথে চিল্লা পাল্লা করলে মন কিছুটা শান্তি পেতে পারে।

কিন্তু এই রাগ প্রকাশ, পরিস্থিতি কি পাল্টাতে পারবে? যে কথাগুলো অভিযুক্তকে বলা হচ্ছে আসলেই কি বলা দরকার বা তার শোনা দরকার? দরকার হলেও ইতিবাচক কিছু বলা হচ্ছে কি?
রাগ প্রকাশের আগে এ প্রশ্নগুলো নিজেকে কয়জনই বা করে?

অহংকারঃ আত্মম্ভরিতা আর আত্মমর্যাদা শব্দদুটির মধ্যে বিস্তর ফারাক রয়েছে। আত্মমর্যাদা হল নিজেকে সম্মান করা, আত্মম্ভরিতা কিন্ত ভিন্ন জিনিস। এর অর্থ নিজের জন্য অহংকার, গৌরব করা। অধিকাংশ মানুষই আত্মমর্যাদা আর আত্মম্ভরিতাকে গুলিয়ে ফেলে। নিজেকে সম্মান করতে গিয়ে নিজের জন্য অহংকার করে বসে। আত্মসম্মান জিনিসটা বিনয়। কিন্তু আত্মঅহংকার অন্যকে আঘাত করে। এ এমন এক বিধ্বংসী নেশা যা একবার জড়িয়ে ধরলে তার থেকে বেরিয়ে আসা কঠিন। মন পরিস্থিতি বুঝবে না, অন্যের আঘাত পাওয়া বুঝবে না, প্রশান্তি পাবে না, শুধু চাইবে নিজের বড়ত্ব জাহির করতে।

প্রতিহিংসাঃ প্রতিহিংসাকে আমি রাগের ভাইরা ভাই আর ক্ষমার উল্টো দিক বলি। এই প্রতিহিংসা পরায়ণ হয়ে মানুষ তীর্যক চাহনি থেকে শুরু করে খুন পর্যন্ত, কিনা করতে পারে! অথচ একটু ক্ষমার দৃষ্টি, অল্প ত্যাগ কত বড় বড় বিবাদ মিটিয়ে দিতে পারে। মানুষ প্রতিহিংসা পরায়ণ হয় মূলত দুটি কারণে,
১. ভয়। সে ভাবে প্রতিশোধ না নিলে হয়ত ঘটে যাওয়া অন্যায়ের পুনরাবৃত্তি হবে।
২. রাগ। প্রতিশোধের মাধ্যমে মানুষের একটা আত্মতুষ্টি তৈরি হয় যে পরিস্থিতি তার নিয়ন্ত্রণে আছে।

কিন্তু আসলে ব্যাপারটা পুরোপুরিই ভ্রম। এ যেন নিজে ইঁদুরের বিষ খেয়ে অপেক্ষা করা যে ইঁদুর মারা যাবে। ক্ষমাহীনতা মানুষের আত্মার শক্তিকে নষ্ট করে দেয়।
ইংরেজি ‘Tit for tat' কথাটির পাশাপাশি ‘Mercy for tat' ও যুক্ত করা উচিৎ।


পরচর্চাঃ শুধু সক্রেটিসের ট্রিপল ফিল্টার টেস্টের গল্প বলি: একদিন সক্রেটিসের এক পরিচিত এসে তাকে বলল,
- স্যার! জানেন আমি আপনার বন্ধুর সম্পর্কে একটি খবর শুনে এলাম!

- দাঁড়াও। তোমার খবরটাকে আগে ট্রিপল ফিল্টার টেস্ট করে নেয়।

- ট্রিপল ফিল্টার?

- হ্যাঁ ট্রিপল ফিল্টার। প্রথম ফিল্টার হল সত্যতা।তুমি আমাকে বল, আবার বন্ধুর সম্পর্কে যা বলতে চাইছো তার সত্যতার বিষয়ে তুমি কি নিশ্চিত?

- না নিশ্চিত না। আমি শুনে এসেছি।

- আচ্ছা। তুমি কি আমার বন্ধুর কোন সদগুণ বলবে?

- নাহ। তাও না। ভাল কিছু নয়।

- তাহলে ব্যাপারটা দাঁড়াচ্ছে, তুমি আমার বন্ধুর দোষ বলবে অথচ তার সত্যতা সম্পর্কে তুমি নিশ্চিত নও। তবে ৩নম্বর ফিল্টার পার হতে পারলে তুমি খবরটি বলতে পারো। ৩নম্বর ফিল্টার হল উপকারিতা। তুমি আমার বন্ধুর সম্পর্কে যা বলবে তা কি তোমার অথবা আমার জন্য উপকারী?

- (আমতা আমতা করে) না। উপকারীও নয়।

- তুমি যা বলতে চাও তা সত্য না,ভালো কিছু না, আবার আমার বা তোমার কোনো উপকারেও আসবে না।তাহলে কেনইবা আমি অহেতুক কাজে সময় নষ্ট করব?
লোকটি চলে গেল।

অন্যের বিষয়ে রসিয়ে আলাপ করার আগে সক্রেটিসের ট্রিপল ফিল্টার টেস্ট করে নেওয়া উত্তম নয় কি?
সর্বশেষ এডিট : ১২ ই আগস্ট, ২০১৭ দুপুর ১২:০৯
৯টি মন্তব্য ৯টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

স্মৃতিপুড়া ঘরে

লিখেছেন আলমগীর সরকার লিটন, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:৩০



বাড়ির সামনে লম্বা বাঁধ
তবু চোখের কান্না থামেনি
বালিশ ভেজা নীরব রাত;
ওরা বুঝতেই পারেনি-
মা গো তোমার কথা, মনে পরেছে
এই কাঠফাটা বৈশাখে।

দাবদাহে পুড়ে যাচ্ছে
মা গো এই সময়ের ঘরে
তালপাতার পাখাটাও আজ ভিন্নসুর
খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে... ...বাকিটুকু পড়ুন

গরমান্ত দুপুরের আলাপ

লিখেছেন কালো যাদুকর, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৫৯




মাঝে মাঝে মনে হয় ব্লগে কেন আসি? সোজা উত্তর- আড্ডা দেয়ার জন্য। এই যে ২০/২৫ জন ব্লগারদের নাম দেখা যাচ্ছে, অথচ একজন আরেক জনের সাথে সরাসরি কথা... ...বাকিটুকু পড়ুন

রাজীব নূর কোথায়?

লিখেছেন অধীতি, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৩:২৪

আমি ব্লগে আসার পর প্রথম যাদের মন্তব্য পাই এবং যাদেরকে ব্লগে নিয়মিত দেখি তাদের মধ্যে রাজীব নূর অন্যতম। ব্যস্ততার মধ্যে ব্লগে কম আসা হয় তাই খোঁজ-খবর জানিনা। হঠাৎ দু'একদিন ধরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বৃষ্টির জন্য নামাজ পড়তে চায়।

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৩৮



ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষার্থী গত বুধবার বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে বৃষ্টি নামানোর জন্য ইসতিসকার নামাজ পড়বে তার অনুমতি নিতে গিয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এটির অনুমতি দেয়নি, যার জন্য তারা সোশ্যাল... ...বাকিটুকু পড়ুন

=তুমি সুলতান সুলেমান-আমি হুররাম=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:৩৬



©কাজী ফাতেমা ছবি

মন প্রাসাদের রাজা তুমি, রাণী তোমার আমি
সোনার প্রাসাদ নাই বা গড়লে, প্রেমের প্রাসাদ দামী।

হও সুলেমান তুমি আমার , হুররাম আমি হবো
মন হেরেমে সংগোপনে, তুমি আমি রবো।

ছোট্ট প্রাসাদ দেবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×