somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

রঙিন পানসী কোথায় হারিয়ে যায়!

০৬ ই আগস্ট, ২০১৯ সন্ধ্যা ৬:০৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


এই প্রমত্তা নদীটাকে বুকের মাঝে কিভাবে যে লুকিয়ে রাখি! হৃদয়ের দুকূলে উচ্ছ্বসিত ঢেউগুলোর অবিরাম আছড়ে পড়া। এ এক মধুর পীড়ন !
পৃথিবীর সবচেয়ে ক্লান্তিকর মানসিক কাজ নাকি অপেক্ষা করা?
আমার উপলব্ধিতে তো সেই ক্লান্তিটা একেবারে অদৃশ্য।
একে যদি বলি আসক্তি, ভুল নেয়। যদি বলি উন্মাদনা অশুদ্ধ হবে না।
যদি বলি ছেলেমানুষী,
-আশ্চর্য!! মনের বয়স কি বছর গুণে বাড়ে?

যেদিন জাপানের হিরোশিমাতে এটোম বোমার বিস্ফোরণ হয়। ঠিক তার ৬৫ বছর পর একই দিনে আমার হৃদয়েও একটা এটোম বোমার বিস্ফোরণ ঘটে। আমার পৃথিবী বদলে যায়। একটা অপেক্ষার জপমালা আমার হাতে এসে পড়ে। আর আমি জপতে থাকি এক একটা অপেক্ষার প্রহর। অনন্ত অপেক্ষা, বহু বর্ণের অপেক্ষা।

ও অনেক ভেবেছে। অনেকটা পথ পাড়ি দিয়েছে। তারপর এসেছে।
আমিও অনেক সয়েছি। বুকের ভেতর নিভৃত পাথরে খোদাই করেছি কখনো বর্ণিল, কখনো সাদাকালো স্মৃতি।
আমরা অনেক অপেক্ষা করেছি।
তারপর,
ভোরের রবি উদার হাতে আমাদের শরীরে যখন কিরণ ছিটিয়ে দেয়। আমরা আড়মোড়া ভাঙ্গি। মহৎ মাধুর্যময় একটা ছন্দ ওঠে, আমাদের ঘরে।
আমি ওকে বলি, “শোনো”
ও উত্তর দেয় “বলো”
আমি চেয়ে থাকি নিশ্চুপ, কিছু কথা বলব বলে। ও চেয়ে থাকে নিশ্চুপ, কিছু কথা শুনবে বলে।
পার্থিব ব্যস্ততায়, রৌদ্রের প্রখরতায় কিভাবে যেন সেই ছন্দের পতন হয়। অপার্থিব সম্পদ টুকু হাত ফসকে চলে যায়।
তারপর আমি অপেক্ষা করি। আমরা অপেক্ষা করি। নাগরিক কোলাহলে ছন্দটা দূরে চলে যায়! দূর থেকে বহুদূর!
আমাদের ঘরে, অলস দুপুরে, ভ্রমর আসে। মোহনীয়, মাতাল করা সুর তোলে। গুনগুন গুনগুন।
আমি ওকে বলি, “শোনো”
ও উত্তর দেয় “বলো”
সাংসারিকতায়, সামাজিকতায় সেই সুর কেটে যায়। ভ্রমর সভয়ে লুকিয়ে ফেলে প্রেম বিতরণী সুকোমল ডানা। ভ্রমরটাকে আর দেখি না।
তারপর আমি অপেক্ষা করি। আমরা অপেক্ষা করি সুর জোড়াবার। অনন্ত অপেক্ষা।

শুক্লা পক্ষের রাতে জানলার গরাদ বেয়ে জ্যোৎস্না নামে, আমাদের ঘরে। জ্যোৎস্নার ধমনী থেকে রূপালী কনিকাগুলো মর্মমূলে তীব্র ঢেউ তোলে। মুগ্ধতায় মুখর এক রঙিন পানসী ভাসিয়ে দেয় আমরা। মোহাবিষ্ট পালে হাওয়া দেয় সোনালী সময়।
বৈষয়িক সাফল্য ব্যর্থতা, স্বার্থোদ্বারের নানান কথকতার কর্কশ হস্তক্ষেপে হঠাৎ মোহভঙ্গ হয়। পাল ছিড়ে যায়। পানসী হারিয়ে যায় দূরে ।দূর থেকে বহুদূরে।

আমাদের মাঝখানে নিষ্পাপ, নিস্পন্দ একটা শূণ্যতা আসে।
এপার থেকে আমি ওকে বলি, “শোনো”
ওপার থেকে, ও উত্তর দেয় “বলো”
আমাদের কিছু বলা হয় না। কিভহু শোনা হয় না।
আমি সেই শূন্যতা পেরুতে চাই। আমরা সেই শূন্যতা পেরুতে চাই।
আমরা অপেক্ষা করি শূন্যতা পেরুবার। অপেক্ষা করি রঙিন পানসী ভাসাবার।
অনন্ত অপেক্ষা, বহু বর্ণের অপেক্ষা।
সর্বশেষ এডিট : ০৬ ই আগস্ট, ২০১৯ সন্ধ্যা ৬:০৮
১১টি মন্তব্য ৮টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। কালবৈশাখী

লিখেছেন শাহ আজিজ, ১৭ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:২৪



গত পরশু এমনটি ঘটেছিল , আজও ঘটলো । ৩৮ / ৩৯ সে, গরমে পুড়ে বিকেলে হটাৎ কালবৈশাখী রুদ্র বেশে হানা দিল । খুশি হলাম বেদম । রূপনগর... ...বাকিটুকু পড়ুন

একজন খাঁটি ব্যবসায়ী ও তার গ্রাহক ভিক্ষুকের গল্প!

লিখেছেন শেরজা তপন, ১৭ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:০৪


ভারতের রাজস্থানী ও মাড়ওয়ার সম্প্রদায়ের লোকজনকে মূলত মাড়ওয়ারি বলে আমরা জানি। এরা মূলত ভারতবর্ষের সবচাইতে সফল ব্যবসায়িক সম্প্রদায়- মাড়ওয়ারি ব্যবসায়ীরা ঐতিহাসিকভাবে অভ্যাসগতভাবে পরিযায়ী। বাংলাদেশ-ভারত নেপাল পাকিস্তান থেকে শুরু করে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইরান-ইজরায়েল যুদ্ধ

লিখেছেন মঞ্জুর চৌধুরী, ১৭ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:০৮

আমরা সবাই জানি, ইরানের সাথে ইজরায়েলের সম্পর্ক সাপে নেউলে বললেও কম বলা হবে। ইরান ইজরায়েলকে দুচোখে দেখতে পারেনা, এবং ওর ক্ষমতা থাকলে সে আজই এর অস্তিত্ব বিলীন করে দেয়।
ইজরায়েল ভাল... ...বাকিটুকু পড়ুন

নগ্ন রাজা কর্তৃক LGBTQ নামক লজ্জা নিবারনকারী গাছের পাতা আবিষ্কার

লিখেছেন মুহাম্মদ মামুনূর রশীদ, ১৭ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:৪০

LGBTQ কমিউনিটি নিয়ে বা এর নরমালাইজেশনের বিরুদ্ধে শোরগোল যারা তুলছেন, তারা যে হিপোক্রেট নন, তার কি নিশ্চয়তা? কয়েক দশক ধরে গোটা সমাজটাই তো অধঃপতনে। পরিস্থিতি এখন এরকম যে "সর্বাঙ্গে ব্যথা... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছিঁচকাঁদুনে ছেলে আর চোখ মোছানো মেয়ে...

লিখেছেন খায়রুল আহসান, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:০৯

ছিঁচকাঁদুনে ছেলে আর চোখ মোছানো মেয়ে,
পড়তো তারা প্লে গ্রুপে এক প্রিপারেটরি স্কুলে।
রোজ সকালে মা তাদের বিছানা থেকে তুলে,
টেনে টুনে রেডি করাতেন মহা হুলস্থূলে।

মেয়ের মুখে থাকতো হাসি, ছেলের চোখে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×