শেখ হাসিনা বলেছেন, গ্যাস বিক্রি করতে চাইনি বলে ২০০১ সালের নির্বাচনে আইএসআই, ইন্ডিয়ার ‘র’ ও আমেরিকা আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে এক হয়ে গিয়েছিল। তার জন্য আমরা ক্ষমতায় আসতে পারিনি। গত শনিবার গণভবনে কুমিল্ল¬া জেলার (উত্তর) তৃণমূল নেতাকর্মীদের সঙ্গে এক মতবিনিময় সভায় প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
বলাবাহুল্য, প্রধানমন্ত্রীর এ বক্তব্য একদিকে যেমন যুগপৎভাবে বিস্ময় ও সন্দেহের উদ্রেক করেছে তেমনি দেশের চলমান স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব নিয়েও গভীর প্রশ্নের উদ্রেক করেছে। পাশাপাশি এ প্রশ্ন আরো ঘনীভূত হয়েছে যে ‘সিআইএ’, ‘র’, এবং ‘আইএসআই’-এর সাথে যোগসাজশের অভাবে প্রধানমন্ত্রী ২০০১-এ ক্ষমতায় আসতে পারেননি। এবারে যে ২০০৮-এ ক্ষমতায় এসেছেন, সেটা কী তাহলে তাদের সাথে যোগসাজশ করেই এসেছেন?
সেবারে গ্যাস বিক্রি করেননি; এবারে কী তাহলে গ্যাস বিক্রির চুক্তি করেই ক্ষমতায় এসেছেন? সে জন্যই কী দেশবাসী গ্যাস পাচ্ছে না? গ্যাসের অভাবে সব শিল্প-কারখানা একের পর এক বন্ধ হয়ে যাচ্ছে? পঞ্চাশ হাজারের বেশি ফ্ল্যাট হস্তান্তর করা যাচ্ছে না গ্যাসের অভাবে।
প্রধানমন্ত্রী ২০০১-এ ‘র’ এর সাথে অচুক্তি তথা সে সময়ের অসহযোগিতার কথা বলেছেন। প্রশ্ন উঠে এবারে ‘র’ এর সাথে চুক্তি করেই কী তাহলে ক্ষমতায় এসছেন?
সে কারণে বর্ডারে এখন আগের মতো দেশপ্রেমিক দক্ষ সেনা অফিসার নেই। তাদেরকে মেরে ফেলা হল পিলখানায়।
‘র’ এর চুক্তি পূরণ করতেই কী প্রধানমন্ত্রী ভারতকে উজাড় করে সব দিয়ে দিচ্ছেন? ট্রানজিট থেকে ট্রানশিপমেন্ট সব কিছু?
‘র’ এর সাথে চুক্তি বলেই কী ভারত নিজেই এদেশের নদী ভরাট করে রাস্তা বানানোর উদ্যোগ নিয়েছে?
‘র’ এর সাথে চুক্তি বলেই কী শতকরা দেশে ‘ধর্মনিরপেক্ষতা’ সংবিধানে ঢুকেছে?
প্রধানমন্ত্রী যুক্তরাষ্ট্র তথা সি আই-এর সাথে চুক্তির কথা বলেছেন।
প্রসঙ্গত: ‘সি আই এ’-এর সাথে চুক্তি হয়েছে বলেই কী বাংলাদেশ এখন যুক্তরাষ্ট্রের সাথে ক্ষতিকর টি,আই,সি,এফ চুক্তিতে আবদ্ধ হচ্ছে?
‘সি আই এ’-এর সাথে চুক্তি হয়েছে বলেই কী মার্কিন সেনাবাহিনী এখন এদেশে অবস্থান করছে?
‘আই এস আই’-র সাথে চুক্তি হয়েছে বলেই কী পাকিস্তানী ক্রিকেটারদের বি পি এল-এ কেনা হচ্ছে?
মূলত: এসব প্রশ্ন প্রধানমন্ত্রীর বচন থেকেই উদ্ভব হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর বচন যদি সত্যি হয় তবে বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব বিশেষ প্রশ্নবিদ্ধ হয়। কারণ প্রধানমন্ত্রীর বচন অনুযায়ী বিদেশী গোয়েন্দা সংস্থাই এদেশের সরকারের পরিবর্তন ঘটায়।
তাহলে সংবিধানে বর্ণিত ‘সকল ক্ষমতার উৎস জনগণ’-এ কথা প্রযোজ্য হয় না। নির্বাচনের কোনো অর্থ থাকেনা।
আর যদি সংবিধান সত্য হয়
নির্বাচন সত্যি হয়
তাহলে প্রধানমন্ত্রীর বচনেরও কোনো গুরুত্ব থাকে না।