স্বর্গে কখনো যাইনি বটে, তবে অনুভূতিটা টনটনে...তাই ভীষণ ভাল লাগলে ‘স্বর্গীয় অনুভূতি’ শব্দটা লিখতে একটুও হাত কাঁপে না...
আজকে চাঁদটা তেজ দেখাচ্ছে খুব...ফেরি পার হওয়ার সময়ই দেখছিলাম নদীটাকে ভাসিয়ে দিয়েছে আলোয়...রাত বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে পাল্লা দিয়ে তেজটাও বাড়ছে তার...
বড় ইস্টিশনের এই জায়গাটা আমার খুব চেনা...কিন্তু এখন এই রাতে মনে হলো, আজ প্রথম এলাম...গাছের সবুজ পাতাগুলো ঘন কালো হয়ে গেছে চাঁদের আলোয়...গাড়ির বাতি নেভাতেই দেখলাম কালো পাতা চুইয়ে হলদেটে সাদা আলোয় ভেসে যাচ্ছে পুরো শরীর...এরপরই চোখ পড়লো তার দিকে...
ভর দুপুরে স্কুল থেকে ফেরার সময় রিকশায় তাকে দেখার অনুভূতিটা ভুলে গিয়েছিলাম...ঠিক এই মুহুর্তে অনেকদিনবাদে তা ফিরে এলো...বুকটা ধ্বক করে উঠলো...এমনও হয় এই পৃথিবীতে...
মনে হচ্ছে পুরো নদীটাকে কেউ খুব যত্ম করে রুপোলি রঙ করেছে...চাঁদের উজ্জ্বল আলোয় ভেসে গেছে মেঘনা ডাকাতিয়ার মোহনা...জল ভেসে যায় চাঁদের আলোতে, আমি দেখিনি আগে কোনদিন...আমার গা হাত পা কাঁপতে লাগলো...বসে পড়লাম পাড়ের পাথুরে পথের ওপর...সঙ্গীরা ভেবেছে ক্লান্তিতে বসে পড়েছি...
রাত ৩.৪৫...আজকের হাওয়াটা সরাসরি স্বর্গ থেকে বইছে...ভরা পূর্ণিমায় জোয়ারের তোড় বেড়েছে খুব...তবে নদীতে ঢেউ বোঝা যায় না...পাড়ে বসে জলের চপচপাচপ শব্দটা শুনতে কী যে ভাল লাগে...শরীরের রোম দাঁড়িয়ে যায়...
নদীতে আজ একটাও নৌকা নেই...শুধু জল আর আলো...আলো জলে মাখামাখি...আমি শূণ্য দৃষ্টিতে দেখি...দেখলে না তুমি এসবের কিছুই দেখলে না...