গত শুক্রবার হয়ে গেল মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষা। জুনিয়রদের টানটান উত্তেজনাটা অনুভব করতে পারি। সাথে রয়েছে প্রশ্ন ফাসের গুজবের কিছু কেলেঙ্কারী। প্রশ্ন পাবার জন্য সবার যত উৎসাহ, অধ্যাবসায়, সেটা দেখে রবার্ট ব্রুসও মনেহয় লজ্জা পেয়ে যেত!
এত কষ্ট করে, এত টাকা খরচ করে প্রশ্ন নিয়ে জুনয়িররা কোথায় আসবে সেটা কি তারা জানে? মেডিকেল চান্স পাওয়াটাকে তারা যতটা ক্রেডিট ও মেধার পরিচিতি বলে ভাবছে আমি নিশ্চিত সামনের ফেব্রুয়ারী মাসে তারা জীবণের সবচেয়ে বড় ভুলটার জন্য হতাশাগ্রস্থ হয়ে পড়বে। (জানুয়ারীতে ক্লাস শুরু হবে)
মেডিকেলে ভর্তি হওয়াটা যদি কঠিন/যন্ত্রণার লাগে তবে পড়াটা কতটা যন্ত্রণার তা যদি জুনিয়রদের দেখানো হত তাহলে, ফর্মপূরণ করার মত কাউকে পাওয়া যেত কিনা সন্দেহ আছে।
আমি মেডিকেলে পড়তে নিরুৎসাহী করছি না। তবে যারা প্রশ্নের ধান্ধায় ঘুরে বেরিয়ে প্রকৃত মেধাবীদের সুযোগ থেকে বন্চিত করে, তারা জেনে রাখুক- ক্লাস ওয়ান থেকে ইন্টার পাশ করতে তারা যত পরিশ্রম ঢেলেছে, ভর্তির প্রথম ছয় মাসে তাদের সেই পরিশ্রমও হার মানবে।
এই পরিশ্রমের পর কৃতিত্ব হিসাবে যা মিলবে তা হল- গাধা, ছাগল উপাধি, কিছু ফেল করার অভিজ্ঞতা, প্রচুর ইন্সাল্ট, নিজের আত্মবিশ্বাস ভেঙ্গে চুড়মার হয়ে যাওয়া এবং জীবণের বড় একটি ভুলের ব্যাপারে আত্মপলদ্ধি অর্জন।
মেডিকেল থেকে পালিয়ে যাবার সময় এক জুনিয়রকে আটকানোর অভিজ্ঞতা হয়েছিল। মনের দুঃখে ব্যাগ গুছিয়ে পালিয়ে যাবার সময় আমি আটকাই, তার চোখে সেদিন দেখেছিলাম আত্মবিশ্বাস ভেঙ্গে-চুরে, দুমড়ানো-মুচড়ানো পরাজিত এক ছেলের ছবি। আমার উৎসাহে সেদিন সে থেকে গিয়েছিল, আশা পেয়েছিল, জানিনা প্রশ্ন পেয়ে চান্স প্রাপ্তরা সেই আশা পাবে কিনা?
মেডিকেল যাদের কাছে স্বপ্নের রাজ্য, মনেরাখ এই স্বপ্নের পেছনে আছে কিছু দুঃস্বপ্ন। তাই প্রশ্নপেয়ে এতকষ্ট করে এখানে আসার মত বোকামীর মাশুল হয়তো কখনোই তুলতে পারবেনা। ভর্তি হতে পারলেই তুমি ডাক্তার হতে পারবেনা, প্রতি মূহূর্তে তোমাকে প্রেশারে থাকতে হবে, মানসিক টর্চারের প্রেশার।
তাই আশা করছি মেডিকেল হয়ে উঠুক, প্রকৃত মেধাবীদের জায়গা, যারা সেই লোড সহ্য করে সহজ জীবণে অভ্যস্থ হতে পারবে। সবার জন্য শুভকামনা।
ফেসবুকে কর্ণেল সামুরাই