somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ইসলামে নারী র্মযাদা ও গুরুত্ব:একটি বশ্লিষেণ

১৮ ই এপ্রিল, ২০১৫ রাত ১:০৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

¯্রষ্টা প্রদত্ত কোন বিধানের মত নির্ভূল, উৎকৃষ্টতম, যথাযথ ও ভারসাম্যপূর্ণ বিধান কেউ তৈরী করতে সক্ষম নয়। ¯্রষ্টার বিধানের শ্রেষ্ঠত্বের কোন তুলনাই হতে পারে না। ¯্রষ্টা প্রদত্ত কোন বিধানের উপর প্রশ্ন উত্থাপন করা বড়ই স্পর্ধার বিষয়। তবে কোন বিধান ¯্রষ্টা প্রদত্ত বলে দাবি করা হলে, সেটা আসলেই ¯্রষ্টা প্রদত্ত কিনা তা যাচাই করা অন্যায় তো নয়ই বরং স্বাভাবিক বিবেক-বুদ্ধির দাবি। বুদ্ধিমানেরা যাচাই-বাছাই করে কোন কিছু গ্রহণ-বর্জন করে থাকে, আর বোকারা অন্যের তালে তালে/বংশ প্রীতির কারনে/আবেগ তাড়িত হয়ে কোন কিছু গ্রহণ-বর্জন করে থাকে।
আমি মুসলিম বংশে জন্মগ্রহণ করেছি। তবে আমি মনে করি না এটা বুদ্ধিমত্তার কাজ কোন কিছু যাচাই-বাছাই না করে অন্ধভাবে অনুসরণ করা। ইসলামকে বলা হয় ¯্রষ্টা প্রদত্ত বিধান। কিন্তু আমি ইসলামের বিভিন্œ বিধান দেখে মানতে পারছি না যে এ বিধান ¯্রষ্টা প্রদত্ত। ইসলামের যে সকল বিধান আমার কাছে প্রশ্নবিদ্ধ বলে প্রতিয়মান হয় তা পর্যায়ক্রমে আলোচনা করবো। ইসলামের এরুপ প্রশ্নবিদ্ধ বিধানের সংখ্যা দু’য়েকটি তা নয়- এর সংখ্যা অনেক। প্রত্যেকটি বিষয় ব্যপক আলোচনার দাবি রাখে। একে একে সব বিষয় আলোচনা করবো। তবে কেউ যদি যৌক্তিক ব্যাখা দিয়ে আমার বক্তব্যর কোন ভূল ধরে দিলে অবশ্যই তা শুধরে নিতে সদা প্রস্তুত।
ইসলামে নারী অধিকার দিয়েছে বলতে যদি বুঝায় ১৪০০ বছরে তৎকালীন সমাজে নারীদের যে অবস্থা ছিল তার তুলনায় নারীদের কতটুকু অধীকার দিয়েছে, তাহলে আমি বলবো অবশ্যই সে তুলনায় ইসলামে নারীদের অনেক অধীকার দিয়েছে। যদি প্রশ্ন করা হয় অন্য ধর্মের তুলনায় ইসলামে নারীদের কতটুকু অধিকার দিয়েছে, আমি বলবো সে বিতর্কে হয়ত আপনি প্রমাণ করতে পারবেন ইসলামে অনেক বেশি নারী অধীকার দিয়েছে। কিন্তু আপনি যদি প্রশ্ন করেন মানুষ হিসাবে ইসলামে নারীদের কতটুক অধিকার দিয়েছে, তাহলে আমি বলবো ইসলাম নারী-পুরুষের মধ্যে বৈষম্য করেছে।
ইসলামে নারীদের উপর পুরুষদেরকে কতৃত্বশীল করেছে। পুরুষ পরিচালক,নারী তার অধীনস্ত। পুরুষরা যাতে নারীদের উপর কর্তৃত্ব খাটাতে পারে সে জন্য পুরুষদের হাতে দেয়া হয়েছে অর্থনৈতিক কর্তৃত্ব। এ নীতি সম্পর্কে আল ক¦ুরআনের বক্তব্য লক্ষ্য করুন( প্রসঙ্গ বুঝার জন্য সম্পূর্ণ আয়াত তুলে ধরলাম):
পুরুষ নারীর র্কতা। এ জন্য য,ে আল্লাহ‌ তাদরে একজনকে অন্য জনরে ওপর শ্রষ্ঠেত্ব দান করছেনে এবং এ জন্য য,ে পুরুষ নজিরে ধন-সম্পদ ব্যয় কর।ে কাজইে সতী-সাধ্বী স্ত্রীরা আনুগত্যপরায়ণ হয় এবং পুরুষদরে অনুপস্থতিতিে আল্লাহর হফোজত ও তত্বাবধানে তাদরে অধকিার সংরক্ষণ করে থাক।ে৫৮ আর যসেব স্ত্রীর ব্যাপারে তোমরা অবাধ্যতার আশঙ্কা করো, তাদরেকে বুঝাও, শয়নগৃহে তাদরে থকেে আলাদা থাকো এবং তাদরেকে মারধোর করো।৫৯ তারপর যদি তারা তোমাদরে অনুগত হয়ে যায় তাহলে অযথা তাদরে ওপর নর্যিাতন চালাবার জন্য বাহানা তালাশ করো না। নশ্চিতিভাবে জনেে রাখো, আল্লাহ ওপরে আছনে, তনিি বড় ও শ্রষ্ঠে। (সূরা আলে ইমরান:৩৪)

তালাক প্রাপ্তাগণ তনিবার মাসকি ঋতুস্রাব র্পযন্ত নজিদেরেকে বরিত রাখব।ে আর আল্লাহ‌ তাদরে র্গভাশয়ে যা কছিু সৃষ্টি করছেনে তাকে গোপন করা তাদরে জন্য বধৈ নয়। তাদরে কখনো এমনটি করা উচতি নয়, যদি তারা আল্লাহ‌ ও পরকালে বশ্বিাসী হয়, তাদরে স্বামীরা পুনরায় সর্ম্পক স্থাপনে প্রস্তুত হয়, তাহলে তারা এই অবকাশ কালরে মধ্যে তাদরেকে নজিরে স্ত্রী হসিবেে ফরিয়িে নবোর অধকিারী হব।ে২৪৯নারীদরে জন্যও ঠকি তমেনি ন্যায়সঙ্গত অধকিার আছে যমেন পুরুষদরে অধকিার আছে তাদরে ওপর। তবে পুরুষদরে তাদরে ওপর একটি র্মযাদা আছ।ে আর সবার ওপরে আছনে আল্লাহ‌ র্সবাধকি ক্ষমতা ও র্কতৃত্বরে অধকিারী, বচিক্ষণ ও জ্ঞানী। (সুরা বাক্বারা:২২৮)


আপনি হয়ত আমার অভিযোগ অস্বীকার করে বলবেন ইসলামে পুরুষকে শাসক করেনি বরং ইসলাম বলে নারী-পুরুষ পরস্পর পস্পরের বন্ধু ও সাথী। আপনাকে প্রথমে স্বীকার করতে হবে পুরষদেরকে নারীদের পরিচালক/কর্তৃত্বশীল করেছে। আপনি বলবেন পুরুষকে যেহেতু নারীর যাবতীয় খরচ বহনের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে, স্বাভাবিকভাবেই পরিচালনার দায়িত্ব তার উপরে চলে আসে। আমি বলব আমার অভিযোগ এখানেই। অর্থ কর্তৃত্ব খাটানোর প্রধান হাতিয়ার। এ অর্থনেতিক কর্তৃত্ব আরো বেশি করে দিতে ইসলাম উত্তারাধিকার সুত্রে পুরুষের অংশ (৯৫% ক্ষেত্রে) নারীর দ্বিগুন নির্ধারন করেছে। আপনাকে যদি প্রস্তাব দেয়া হয় আপনি কারো অধীন হয়ে থাকবেন, যার অধীন হবেন তিনি আপনার সার্বিক খরচ নির্বাহ করবেন। এমনকি মালিকের মৃত্যুর পর মালিকের সম্পদের ভাগের একটি অংশ আপনি ( পেনশন স্বরুপ বা যে নামেই হোক)। একটি কথা সবসময় মনে রাখতে হবে যে চিরজীবন আপনি অধিনস্ত। আপনি কি এমন অধিনস্ত হতে পছদ করবেন?
পুরুষদের কর্তৃত্বশীল করার দি¦তীয় কুফল: যখন একটি নারী ছোট বেলা থেকে বড় হয় এ ভেবে যে সে যত যোগ্যতাই অর্জন করুক না কেন তার কোন মূল্য নেই, যখন তার বিবাহ হবে তাকে তার স্বামীর অধীনে চলে যেতে হবে - এ ভাবনা নারীর প্রতিভা বিকাশের প্রধান বাধা। একজন পুরুষ যখন বড় হয় তখন সে ছোট থেকেই তার উজ্জ্বল ক্যরিয়ার গড়ার স্বপ্ন দেখতে থাকে। এ স্বপ্ন তার প্রতিভা বিকাশে তাকে বহুদুর এগিয়ে নিয়ে যায়। এছাড়া একজন পুরুষ কর্মজীবনে এসে তার কর্মের মাধ্যমে সে তার যোগ্যতার বিকাশ ঘটিয়ে থাকে। উল্লেখ্য, বই পড়ে মানুষ যে বিদ্যা অর্জন করে তার চেয়ে অনেক বেশি বিদ্যা অর্জন করে কর্মজীবনে তার কর্মক্ষেত্রে বাস্তব প্রশিক্ষণ ও অভিজ্ঞতার মাধ্যমে। একটি ৫ম শ্রেনি পাস করা ছেলেও যদি রাষ্ট্র প্রধাণদের সাথে ছোট বেলা থেকে চলা-ফেরার সুযোগ পায় এবং বিভিন্ন রাজনৈতিক কর্মকান্ডের সাথে জড়িত থাকে সে ছেলে বয়স্ক হলে যদি তাকে রাষ্ট্র প্রধাণ বানানো হয় সে যথারিতী রাষ্ট্র পরিচালনা করতে সক্ষম হবে। অপরপক্ষে এম, এ পাস তুখর মেধাবী এক গরীব যুবক যে কোনদিন কোন রাজনৈতিক কর্মকান্ডের সাথে জড়িত হয়নি তাকে যদি হঠাৎ রাষ্ট্র প্রধাণ বানানো হয় তাহলে রাষ্ট্রের কি অবস্থা হবে তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। একজন পুরুষ সমাজের বিভিন্ন শ্রেণীর মানুষের সাথে ইন্টারএকশন এর ফলে তার বিভিন্ন বিষয় ব্যবস্থাপনাগত যোগ্যতাও বৃদ্ধি পায়। অপরদিকে এ ধরনের নীতির সমাজে প্রথমত নারীরা শিক্ষার্জনের প্রতি আগ্রহ তো হারিয়ে ফেলে। দি¦তীয়ত:তাদের কর্মজীবন বলতে সাংসারিক জীবনই সব যেখানে রান্না-বান্নার বিদ্যা ভালো করে রপ্ত করতে হয়। রান্না-বান্না ও ঘর গোছানোর পর অতিরিক্ত সময়টি বেশিরভাগ ক্ষেত্রে কার স্বামী ও কার ছেলে-মেয়ে কেমন ইত্যাদি সব গাল-গল্পে কাটে। এ সকল গাল গল্পের মাঝে বিভিন্ন প্রকার পশ্চাদ আলোচনা-সমালোচনা, পরনিন্দা ইত্যাদি স্থান পায় যা বিভিন্ন ধরণের ঝগড়া বিবাদে বেশ ভালোই অবদান রাখে। আর যেহেতু তারা বাস্তব কর্মজীবনে প্রবেশের সুযোগ পায় না, এ ধরনের সমাজে নারীদেরকে সমাজের বা কোন প্রতিষ্ঠানের কোন গুরুত্বপূর্ণ পদে অধিষ্ঠিত হওয়ার অযোগ্য বলে বিবেচিত হয়।এ ধরনের পরিবেশে বড় হওয়ায়, নারীরা নিজেদেরকে মনে করে সংসার করাই তাদের একমাত্র কাজ ও যোগ্যতা। সমাজের কোন সম্মানজনক কোন পদে অধিষ্ঠিত হওয়া তাদের কাজও নয় এবং যোগ্যতাও নেই। হঠাৎ কোন উদ্ভুত পরিস্থিতি মোকাবিলায় নারীরা সক্ষম নয়। এ যোগ্যতা থাকবেই বা কি করে-ছোট বেলা থেকে যে পরিবেশে ও মনমানসিকতা নিয়ে বড় হয়েছে সেরুপই হওয়ার কথা। মানসিকতা অর্ধেক যোগ্যতা কেড়ে নেয়।যে সিংহ শাবক ভেড়ার পালের মধ্যে বড়, সে সিংহ কখনও সিংহসুলভ আচরণ করতে সক্ষম হয় না।কারণ সে সিংহ জানেই না যে সে সিংহ।তাছাড়া সে তো ভেড়ার আচরন রপ্ত করেছে, সিংহের সাহসিকতা ও কার্যাবলী তো সে শেখেইনি। ছোট বেলা থেকেই মেয়ে শিশুদের সকল পরিস্থিতি থেকে আলাদা করে রাখা হয়। দায়িত্বশীলতামূলক সকল কাজ ছেলে সন্তান দিয়ে করানো হয়, আর শুধু সাংসারিক কিছু কাজ মেয়েদের দিয়ে করানো হয়। সুতরাং পুরুষেরা সকল পরিস্থিতি মোকাবেল, সামাজিক ইন্টারএকশন, ও ব্যবস্থাপনাগত যোগ্যতা রপ্ত করতে করতে বড় হয়ে থাকে। পুরুষেরা সামাজিক বিভিন্ন যোগ্যতা লাভ করছে উভয় দিক দিয়ে- মানসিক ও বাস্তব কর্মক্ষেত্রের মাধ্যমে। কেউ প্রশ্ন করবেন আমি যে ধরনের সমাজের কথা বলছি তাতে নারী-পুরুষের অবাধ মেলা-মেশার সুযোগ দিতে হবে। আর এরুপ সুযোগ দিলে বিভিন্ন ধরনের সামাজিক (যেমন-ইভটিজিং,ধর্ষন ইত্যাদি) সমস্যার উদ্ভব হবে।আমার এখানে আলোচনার বিষয় ইসলামের এ বিধানে কি কি সমস্যা রয়েছে তা ব্যখ্যা করা, এ বিধান থেকে বের হলে কি কি সমস্যা হবে এবং তার সমাধানই বা কি সেটা আলাদা আলোচনার বিষয়। আপনাকে আগে বুঝতে হবে যে এ বিধানে কি কি সমস্যা ও ক্ষতি রয়েছে। এ বিধান না মানলে কি কি সমস্যার উদ্ভব ও তার কি কি সমাধান হতে পারে তা নিয়ে আরেকটি প্রবন্ধে আলোচনা করবো।
কেউ কেউ প্রশ্ন বলবেন নারীরা সৃষ্টিগতভাবে সকল কাজের যোগ্য নয়। তাদের শারীরিক গঠন ও প্রকৃতি সকল কাজের উপযুক্ত নয়। হ্যা,এটা সত্য যে নারীরা শারীরিক গঠনগত দিক ও প্রকৃতিগতদিক থেকে কিছুটা ভিন্ন। তাই বলে তারা সামাজিক সকল কর্মক্ষেত্রের যাওয়ার অযোগ্য, পুরুষের অধীনস্ত থাকতে হবে তা বলা যৌক্তিক নয়। আমাদের সমাজের পুরুষেরা যে সকল কাজ করে তার প্রায় সকল কাজ একজন নারী করতে সক্ষম যদি সে সে ধরনের পরিবেশ,পরিপার্শি¦কতা ও মনমানসিকতা নিয়ে বড়হ য়।
তৃতীয় ক্ষতি: একটি দেশের সবচেয়ে বড় সম্পদ হল মানব সম্পদ। মানুষ বলতে নারী-পুরুষ উভয়কে বুঝায়। এ ধরনের সমাজে যেহেতু নারীরা কর্মজীবনে আসে না, দেশ ও জাতী তাদের সুপ্ত মেধা ও যোগ্যতার সেবা থেকে বঞ্চিত হয়। জাতীর মহামূল্যবান সম্পদ ঘরে আবদ্ধ থেকে অপচয় হয়। একটি জাতীর অর্ধেক সম্পদ থেকে সে জাতী বঞ্চিত হয়।
চতুর্থ ক্ষতি:এ ধরনের সমাজে নারীরা নির্যাতন ও নিগৃহতের শিকার হয়। যেহেতু তারা পুরোপুরি পুরুষ নির্ভর, তারা মুখ উচু করে কথা বলতে পারে না। স্বামীর হাতে নির্যাতীত হওয়ার পাশাপাশি শশুর-শাশুরী ও শশুর বাড়ীর নিকটস্থীয়দের কর্তৃকও নির্যাতীত হয়ে থাকে।
আমার এতটুকু লেখার উপর সাম্ভাব্য যে প্রশ্ন উত্থাপিত হতে পারে তার উত্তর দিচ্ছি:
১.ইসলামে নারীকে চাকরী করার অনুমতি দেয়। ইসলাম নারী সমাজের প্রতিনিধিত্ব করে এমন সকল ক্ষেত্রে নারীদেরকে নের্তৃত্ব দেয়ার অনুমতি দেয়। নারীরা এমনকি নারী বিষয়ক মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রী হতে পারে। ইসলামে জ্ঞানার্জন করা নারী-পুরুষ সকলের উপর ফরয করেছে। সুতরাং জ্ঞানার্জনের নারীদেরকে ইসলাম উৎসাহিত করে। হযরত আয়েশা (র:) ছিলেন একজন মুহাদ্দিস। অতএব আমার অভিযোগগুলো ভিত্তিহীন।
জওয়াব: ইসলামে নারীকে চাকরি করার অনুমতি দেয় স্বামীর দয়ার উপর। স্বামী অনুমতি না দিলে স্ত্রী চাকরি করতে পারবে না। আর স্ত্রী চাকরি করবেই বা কেন, যেহেতু স্বামী থেকে সবকিছু পাচ্ছে। আর যদি কর্তৃত্বের জন্য চাকরি করে, তা তো ইসলামে বৈধ হবে না, কারন স্বামীর আনুগত্য ফরয। বর্তমানে আমাদের দেশে নারীদের চাকরিতে আসার একটি প্রবণতা দেখা যাচ্ছে। এ প্রবণতার মুল অবদান আধুনিক নারী অধীকার আন্দোলনকারীদের। আমি নারী অধিকার আন্দোলনকারীদের বলছি না তারা অনেক ভাল/খারাপ।আমি শুধুমাত্র সত্য তুলে ধরলাম। বর্তমানে আমাদের দেশে নারীদের যতটুকু কর্মক্ষেত্রে আসতে দেখা যাচ্ছে তার অনেকটা অবদান তাদের। পুরুষদের অথনৈতি কর্তৃতে¦র কারনে দীর্ঘদিন যাবৎ নারীরা মুখবুজে নির্যাতন সহ্য করে আসছে। আপনি হয়ত বলবেন নারীরা নির্যাতিত হলে তার জন্য ইসলাম প্রতিকার নারীকে দিয়েছে। প্রথমত নারী সালিসির মাধ্যমে মীমাংসা করার চেষ্টা করবে। মীমাংসা না হলে সে তালাক চেয়ে নিতে পারে। নারীকে অধিনস্ত করে দিয়ে তারপর নির্যাতিত হলে তা থেকে বেরিয়ে আসার এ সমাধান যথার্থ নয়। কারন প্রাথমিক কিছু নির্যাতন আছে যার প্রতিকারে সালিসি ডাকাও সম্ভব নয়। কাজের জন্য স্বামীর বা শশুর-শাশুরীর অন্যায়ভাবে বকা-ঝকা, বিভিন্ন সময় অপমানজনক কথা ইত্যাদি আচরনের মাধ্যমে পরিবারের দি¦তীয় শ্রেনীর সদস্য হিসাবে গণ্য করা প্রাথমিক নির্যাতনের আওতায় পড়ে। দ্বিতীয় স্তরের নির্যাতন হলে সালিশি ডাকা সম্ভব। কিন্তু সেখানে কতটুকু ন্যায় বিচার পাবে তা প্রশ্ন থেকে যায়। আর ন্যায় বিচার না পেলেই যে তালাকের পথে হাটা সবার পক্ষে সম্ভব হয়ে উঠে না। তাছাড়া আদালতের জটিলতা তো আছেই। সামাজিক মান সম¥ানের বিষয় আছে। তাছাড়া তালাক গ্রহণ করলে তালাকের পর সন্তানেরা পিতা থেকে আলাদা হওয়াই তাদের মানসিক সুষ্ঠ বিকাশ বাধাগ্রস্ত হয়। এ মহিলার পক্ষে আবার বিবাহ সম্ভব হয় না। আবার বিবাহ হলেও পূর্বের স্বামীর সন্তানেরা সমস্যার সম্মুখিন হয়। তালাকাবস্থায় জীবনটা মনে হয় যেন অভিষাপের। মেয়ে সন্তান থাকলে তাদের ভালো পাত্রে বিবাহ দেয়া বেশ কঠিন হয়ে দাড়ায়। ইত্যাদি বিবেচনায় একজন নারী স্বামীর নির্যাতন থেকে বাচতে তালাকের পথে হাটার বদলে নির্যাতন সয়ে জীবন কাটানোই ঢের ভাল মনে করে। সুতরাং দেখা যাচ্ছে ইসলাম নারীকে পুরুষের অধীনস্ত রেখে তারপর তারা নিগ্রহিত হলে তা থেকে বাচার যে উপায় বাতলে দিয়েছে তা যথার্থ নয়।
এবার আসি নারী নেতৃত্বের বিষয়ে। নারী বিষয়ক মন্ত্রীত্ব বা নারী বিষয়ক হাতে গোনা কয়েকটি পদে আসতে পারাটা কখনো এ অর্থ করে না যে নারীরা সামাজিক সম¥ানজনক পদে অধিষ্ঠিত হতে পারে।
ইসলাম জ্ঞানার্জন নারী-পুরুষ উভয়ের উপর জ্ঞানার্জন ফরয করেছে। প্রশ্ন হল কোন কোন বিষয়ের কতটুকু জ্ঞানার্জন ফরয। জ্ঞানার্জন ফরয ফলতে কি ৫ম শ্রেনী পর্যন্ত পাস না এম এ পাস করা ফরয? প্রত্যুত্তরে আপনি হয়ত বলবেন ইসলামের মৌলিক জ্ঞানার্জন ফরয। ইসলামের মৌলিক জ্ঞান বলতে নিশ্চয় ইসলামের ফরয বিধান ( যেমন-নামায,রোযা, হজ্জ,যাকাত,জিহাদ ইত্যাদি) ও মৌলিক আকিদা (যেমন-ইমান,ইসলাম,আখিরাত,কিতাব,ফেরেশতা ইত্যাদি) সম্পর্কে জ্ঞানার্জন বুঝায়। এতটুকু জ্ঞানার্জন করলে ফরয তো আদায় হয়ে যায়। বাকি জ্ঞানার্জন মুস্তাহাব। মুসলিব পরিবারগুলো নারীদেরকে বড়জোর একটি হুজুরের অধীনে এতটুকু জ্ঞানার্জন করে ছেড়ে দেবে। আমি বলি নাই যে ইসলাম সরাসরি নারীদের জ্ঞানার্জনে নিষেধ করেছে। আমার বক্তব্য হল নারীদের স্বামীর অধীনস্ত থাকার ইসলামের যে বিধান তা পরোক্ষভাবে নারীদেরকে শিক্ষার ব্যাপারে নিরুৎসাহিত করে। যেহেতু স্বামীর উপার্জনের উপর সে পুরোপুরি নির্ভরশীল তাই ক্যারিয়ার নিয়ে তার কোন স্বপ্নই নেই। বেশি দুরে যেতে হবে না পনের/বিশ বছর আগে বাংলাদেশের নারীদের কি অবস্থা ছিল প্রত্যেক সচেতন বয়স্ক ব্যক্তি জানে। তখন প্রত্যেক পরিবারে ইসলাম ধর্মের প্রভাব বেশি ছিল।
নারী মুক্তি আন্দোলন শুরু হল। তারা চাইল নারীরা ঘরের বাইরে আসুক। তারা কর্ম সচেতন হউক। তারা স্বনির্ভর হলে, স্বামীদের প্রভাব কমে আসবে। তখন স্বামীরা তথা পুরুষেরা একপেশে ভাবে তাদেরকে শোষন করতে পারবে না। এ আন্দোলনের ফলে আজ অনেক নারী কর্মজীবি হয়েছে। এ আন্দোলন শুরু হওয়ায় তখন আলেম সমাজ উদ্বিগ্ন হয়ে পড়ল এ ভেবে যে এ আন্দোলন ইসলামে নারী অধিকার সম্পর্কে যে বিধান রয়েছে তার প্রতি জনমনে বিরুপ প্রভাব পড়বে। তা থেকে রক্ষার জন্য তখন থেকে ইসলামে নারী অধিকার এ বিষয়ে ব্যপক লেখা-লেখি ও বক্তব্য বিবৃতি দেয়া শুরু হয়। এতকাল যে আমাদের দেশে নারীরা নির্যাতীত হচ্ছিল তখন নারী অধিকার সম্পর্কে আলেমদের লেখা-লেখি বক্তব্য-বিবৃতি কিছুই ছিল না। বরং নির্যাতীত নারীরা আলেমদের কাছে প্রতিকার চাইলে তাদের অনেকে এ বলে সান্তনা দিত যে স্বামীর কিছু বকা বা প্রহার করলে প্রতিবাদ করতে হয় না, তাতে আল্লাহ অসন্তুষ্ট হন। তোমরা ধৈর্য্য ধর, আল্লাহ ধের্যশীলদের সাথে আছেন। কোন কোন নারী অভিযোগ দিলে বরং বঞ্চনার শিকার হতো এ বলে যে স্বামী বিরুদ্ধে অভিযোগ দেয়া অসতি নারীর কাজ। স্বামীর সন্তুষ্টির জন্য একনিষ্ঠভাবে কাজ করে যাওয়া বড়ই পূন্যের কাজ। এমনকি এ প্রচারও করা হত যে ’স্বামীর পায়ের নিচে স্ত্রীর বেহেস্ত’। স্ত্রীর জন্য স্বামী কি করবে সে বক্তব্য খুব কমই হত। স্ত্রী স্বামীর সেবায় একনিষ্ঠভাবে নিজেকে নিবেদিত করবে- এমন বক্তব্য আপাত শুনতে ভালই শোনায়। কিন্তু এর পরিণতি অনেক খারাপ হয়ে থাকে। পুরুষদের মধ্যে এ প্রভুত্বসুলভ প্রবণতা তৈরি হয়, আর নারীরা অধীনতামুলক মানসিকতা নিয়ে বড় হয়। যাহোক বলছিলাম নারীবাদী আন্দোলনের ফলে নারীদের এক বৃহদাংশ ঘরের বাইরে আসতে শুরু করে। পর্যায়ক্রমে যারা এ নারীবাদীদের এ আন্দোলনের ঘোর বিরোধী ছিল তারাও তাদের মেয়েদের এখন চাকরি বাকরিতে উৎসাহিত করছে। এখন যে সব নারীরা উচ্চ শিক্ষা গ্রহণ করছে তাদের মুল ইচ্ছা থাকে যে তারা চাকরি করবে, স্বনির্ভরশীল হবে, এবং তাদের এ অর্থনেতি শক্তি দ¦ারা স্বামীর প্রভুত্ব প্রতিহত করবে। এ বাসনা শুধু সাধারণ নারীরাই করে তা নয়, বরং আমি নিজে এমন অনেককে দেখেছি যারা ইসলামী আন্দোলন করে, মুখে ইসলামে নারী অধিকারের বক্তব্য দিয়ে বেড়ায়,অথচ নিজে চাকরি করে এ নিয়তে যাতে সে স্বামীর উপরও প্রভুত্ব করতে পারে। এটা আমার অনুমান নয়,তাদের নিজ মুখে স্বীকারক্তি।
৬টি মন্তব্য ২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

সভ্য জাপানীদের তিমি শিকার!!

লিখেছেন শেরজা তপন, ১৭ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:০৫

~ স্পার্ম হোয়েল
প্রথমে আমরা এই নীল গ্রহের অন্যতম বৃহৎ স্তন্যপায়ী প্রাণীটির এই ভিডিওটা একটু দেখে আসি;
হাম্পব্যাক হোয়েল'স
ধারনা করা হয় যে, বিগত শতাব্দীতে সারা পৃথিবীতে মানুষ প্রায় ৩ মিলিয়ন... ...বাকিটুকু পড়ুন

রূপকথা নয়, জীবনের গল্প বলো

লিখেছেন রূপক বিধৌত সাধু, ১৭ ই মে, ২০২৪ রাত ১০:৩২


রূপকথার কাহিনী শুনেছি অনেক,
সেসবে এখন আর কৌতূহল নাই;
জীবন কণ্টকশয্যা- কেড়েছে আবেগ;
ভাই শত্রু, শত্রু এখন আপন ভাই।
ফুলবন জ্বলেপুড়ে হয়ে গেছে ছাই,
সুনীল আকাশে সহসা জমেছে মেঘ-
বৃষ্টি হয়ে নামবে সে; এও টের... ...বাকিটুকু পড়ুন

যে ভ্রমণটি ইতিহাস হয়ে আছে

লিখেছেন কাছের-মানুষ, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ১:০৮

ঘটনাটি বেশ পুরনো। কোরিয়া থেকে পড়াশুনা শেষ করে দেশে ফিরেছি খুব বেশী দিন হয়নি! আমি অবিবাহিত থেকে উজ্জীবিত (বিবাহিত) হয়েছি সবে, দেশে থিতু হবার চেষ্টা করছি। হঠাৎ মুঠোফোনটা বেশ কিছুক্ষণ... ...বাকিটুকু পড়ুন

আবারও রাফসান দা ছোট ভাই প্রসঙ্গ।

লিখেছেন মঞ্জুর চৌধুরী, ১৮ ই মে, ২০২৪ ভোর ৬:২৬

আবারও রাফসান দা ছোট ভাই প্রসঙ্গ।
প্রথমত বলে দেই, না আমি তার ভক্ত, না ফলোয়ার, না মুরিদ, না হেটার। দেশি ফুড রিভিউয়ারদের ঘোড়ার আন্ডা রিভিউ দেখতে ভাল লাগেনা। তারপরে যখন... ...বাকিটুকু পড়ুন

মসজিদ না কী মার্কেট!

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৮ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:৩৯

চলুন প্রথমেই মেশকাত শরীফের একটা হাদীস শুনি৷

আবু উমামাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, ইহুদীদের একজন বুদ্ধিজীবী রাসুল দ. -কে জিজ্ঞেস করলেন, কোন জায়গা সবচেয়ে উত্তম? রাসুল দ. নীরব রইলেন। বললেন,... ...বাকিটুকু পড়ুন

×