(যাদের কাছে জন্মগতভাবে পাওয়া ধর্মের চেয়ে সত্য কল্যানের ধর্মই বেশি গুরুত্বপূর্ণ তাদের জন্য এ লেখা।)
আল কুরআন যে নারী নীতিমালা দিয়েছে তা নারী জাতীর জন্য অনেক বঞ্চনার কারন। স্রষ্টা পদত্ত কোন বিধান এমন হতে পারে না। এ সম্পর্কে বিস্তারিত লিখেছি নিম্নের লিঙ্কের প্রবন্ধে যার সারাংশ এখানে তুলে ধরছি:
যে কারনে কুরআনকে স্রষ্টা পদত্ত বিধান বলা যায় না (পর্ব-২) (সবচেয়ে বড় কারনগুলোর একটি)
আল কুরআন এর দৃষ্টিতে নারীর পরিচালক পুরুষ। অর্থ্যাৎ নারীরা পুরুষের অধীন হয়ে থেকে পুরুষের অনুগত্য করবে। সতিসাধ্ধি নারী তারাই যারা পুরুষের চরম অনুগত।অর্যা ্ৎ সংসারের সকল সিদ্ধান্ত নিবে পুরুষ, নারীর পরামর্শ পুরুষে নিতে পারে তবে তা ঐচ্ছিক। আর নারীকে অধীনস্ত করে রাখার হাতিয়ার হিসাবে পুরুষকে দিয়েছে অর্থনৈতিক কর্তৃত্ব।আমাদের দেশে অন্যন্য আইনগুলো কুরআন থেকে নেয়া না হলেও পারিবারিক আইনটি কুরআন থেকে নেয়া।যার কারনে এ আইনের কুফল এ দেশের নারীরা বহুকাল আগের থেকে নিজ চোখে দেখে আসছে। নিম্নে কুফলগুলো তুলে ধরা হল(কুফলগুলো বিশ্লেষন করা হয়েছে মুল প্রবন্ধে যার লিঙ্ক উপরে দেয়া হয়েছে):
১. এ নীতি নারীদের শিক্ষা ও উন্নত জীবন গঠনে অনুৎসাহীত করে
২. নারীদের মেধা ও যোগ্যতা বিকাশে প্রধান অন্তরায়
৩. ব্যবস্থানাগতক্ষেত্রে এ নীতি নারীদের অযোগ্য করে তোলে
৪. জাতী তার অর্ধেক সম্পদ(নারী)এর কল্যাণ থেকে বঞ্চিত হয়
৫. এ নীতির ফলে নারীরা মানসিক ও শারিরীকভাবে নির্যাতন ও নিগৃহিতের শিকার হয়
৪ নং পয়েন্টের উপর যে আপত্তি উঠতে পারে তার যথার্থ জবাব দেয়া প্রয়োজন মনে করছি। যে অভিযোগ উত্থাপিত হয়ে থাকে তা হল নারী ঘরে থাকলে সন্তান পালনের যে দায়িত্ব পালন করে তাকে আমি খাটো করে দেখছি।
আচ্ছা, যদি ধরেও নেই যে সন্তান লালন পালনের ন্যয় গুরু দায়িত্ব পালনের জন্য নারীকে ঘরেই থাকা উচিত, তাহলে কি সব সমস্যার সমাধান হয়ে যায়? স্বামীর অধিনস্ত হয়ে ঘরে আবদ্ধ থাকলে উপরে উল্লেখিত অন্যন্য যে সমস্যাগুলোর উদ্ভব হয় সেগুলোর ব্যপারে আপনি কি বলবেন?
একটি সমাজের হাজার হাজার প্রতিষ্ঠানের মধ্যে পরিবার একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান।ইসলামের দৃষ্টিতে নারীরা এ একটি প্রতিষ্ঠান নিয়ে থাকবে আর পুরুষদের প্রতিষ্ঠান হবে পরিবার সহ হাজার হাজার প্রতিষ্ঠান। একজন নারী ঘরে থাকলে সন্তানকে বেশি সময় দিতে পারে ঠিকই কিন্তু তাকে ঘরে থাকতে হলে পুরুষের অধীন হতে হয় যা তাকে বঞ্চনার শিকার করে। আর সন্তান লালনে মা এর ভূমিকা বেশি বলতে পারেন তবে ১০০% নয়। আর মায়ের কাছে থাকার কারনে সন্তান যে সবসময় মা এর কাছ থেকে কল্যাণ পায় তা নয়। মা যদি সুশিক্ষিত না হয় তাহলে ঘরে থেকে সন্তানটি মায়ের থেকে বিভিন্ন কুসংস্কার, অন্ধ বিশ্বাস, অসদাচারন ইত্যাদিই শিক্ষা পেয়ে থাকে।কুরআনের নীতি মানলে যেহেতু নারীদেরে অর্থনৈতিক দায়িত্ব থাকে না, সেহেতু ক্ষুদ্রতম সংখ্যক নারীই শিক্ষা গ্রহণে আগ্রহী হবে। এ নীতি থাকলে আপনি শুধু ওয়াজ করে, শিক্ষার গুরুত্ব ইত্যাদি বুঝিয়ে খুব বেশি একটি সংখ্যক নারীকে শিক্ষা গ্রহণে আগ্রহী করতে পারবেন না।
নারী যদি ঘরের বাইরে বৃহ্ত্তর কর্মক্ষেত্রে আসে তাহলে কি সন্তানকে আদর্শ করে লালন-পালন সম্ভব নয়? অবশ্যই সম্ভব। এক্ষেত্রে রাষ্ট্রকে বেশ কিছু পদক্ষেপ নিতে বাধ্য করতে হবে। তাহল:
১. সন্তান ভুমিষ্ট হওয়ার সময় থেকে ১ বছর বাধ্যতামূলক ছুটি।
২. সন্তান ভুমিষ্ট হওয়ার পর দ্বিতীয় বছর থেকে পরবর্তী ৩ বছর (সন্তানের বয়স ৪ বছর হওয়া পর্যন্ত)সন্তানের মায়ের জন্য অর্ধ-বেলা (৪ ঘন্টা)অফিস সময় বাধ্যতামুলক করা যাতে করে মা সন্তানের কাছে বেশি সময় দিতে পারে।এরুপ সুযোগ দু’টি সন্তান নেয়ার ক্ষেত্রে করা যেতে পারে। এর চেয়ে বেশি সন্তান নিলে দায় দায়ীত্ব পিতা-মাতার।
৩. সন্তানের বয়স ৪ বছর হলে সে সকল সন্তানের জন্য কিন্ডারগার্টেন এর ন্যয় শিশু কেয়ার সেন্টার খোলা যেতে পারে।যেখানে শিশু মনস্তাত্বিক বিদ্যার উপর বিশেষ প্রশিক্ষন প্রাপ্ত শিক্ষক, শিশুর শারীরিক মানসিক বিকাশে বিশেষ প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত লোক নিয়োজীত থাকবে যারা খেলাচ্ছলে শিশুদের সুন্দর মানুষ হিসাবে গড়ার ক্ষেত্রে বিশেষ ভুমিকা পালন করবে।শিশুর সুন্দর মানসিক বিকাশে ভাল প্রশিক্ষন প্রাপ্ত অভিজ্ঞ লোকের প্রয়োজন যে প্রয়োজন এমন নারীরা যার চাকুরী না করে ঘরে থাকে তারাও পুরন করতে সক্ষম নয়।
এটা আমার প্রস্তাবনা।প্রকৃতপক্ষে এ নিয়ে আরো গবেষণা করে এর চেয়ে সুন্দর সমাধান বের করা যেতে পারে।যা নিয়ে গবেষণা হয় তা বিকাশ লাভ করে। যেমন শিক্ষা ব্যবস্তা,শিক্ষা দান পদ্ধতি ইত্যাদি নিয়ে গবেষণা হচ্ছে।একজন শিক্ষক ছাত্রদের নিকট শিক্ষাকে কিভাবে আনন্দদায়ক করবে তা নিয়ে অনেক গবেষণা হয়েছে, এর অনেক রেজাল্টও পাওয়া গেছে। আগামি দিনগুলোতে হয়ত ইহা আরো বিকাশ লাভ করবে।শিক্ষাকে আনন্দঘন করার গবেষণায় ব্রিটেন বিশ্বের মধ্যে সবচেয়ে এগিয়ে আছে।ঠিক একভাবে উপরোক্ত সমস্যা নিয়ে বিজ্ঞজনেরা রাষ্ট্রীয় সহযোগিতা গবেষণা চালিয়ে গেলে আরো সুন্দরতম সমাধান বের হয়ে আসবে। আমার উপরোক্ত প্রস্তাবনা বুঝার সুবিধার্থে উদাহরণস্বরুপ দেয়া হয়েছে।
একটি সমাজ, সভ্যতা গঠিত হাজারও প্রতিষ্ঠান নিয়ে।সকল প্রতিষ্ঠানে নারী-পুরুষ উভয়ের মেধা, যোগ্যতার ছোয়া ও অবদান থাকে সে সমাজ ও জাতির বিকাশ উন্নয়ন অতি ত্বরান্বীত হবে।আর কুরআনের দৃষ্টিতে নারী শুধু সমাজের একটি প্রতিষ্ঠারে ভুমিকা রাখে যে প্রতিষ্ঠানে নারীর কোন চিন্তা গবেষনার প্রয়োজন হয় না, কর্মের নব নব ক্ষেত্র পায় না, কর্মের বৈচিত্রতা নেই যার ফলে এ সকল নারীরা গীবত-চোগলখুরি সহ বিভিন্ন ধরনের রোগে আক্রান্ত হয়। কার স্বামী ভাল কার স্বামী খারাপ, কার সন্তান কবে কি করেছে ইত্যাদি সহ বহু অর্থহীন কাজে তারা জড়িয়ে যায়।