somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ধর্মহীন মানুষের নৈতিক মানদণ্ড থাকে না।

০১ লা নভেম্বর, ২০২০ সন্ধ্যা ৭:০৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



এজন্যই বলা হয়েছে: উলাইকা কাল আনআম; তারা পশুর মত। পশু শিশ্নোদরপরায়ণ, তাদের জীবন শিশ্ন (penis) আর উদরকে কেন্দ্র করে আবর্তিত। বস্তুবাদের চোখে মানুষ একটা উন্নত পশু। তাদের কাছে কুকুর আর মানুষের পার্থক্য গুণগত নয়, স্রেফ স্তরগত। এজন্য বস্তুবাদী মানুষের মানবিকতা, নৈতিকতা, আইন, স্বাধীনতা, কথাবার্তা সবকিছুই ভোগ-কে লক্ষ্য করে... সর্বাধিক ভোগে সর্বাধিক সুখ। সাফল্যের চূড়া হল ভোগের চূড়া।
ভোগের maximization যখন যে নৈতিকতা সাপোর্ট করে, সেটাই তাদের নীতিবোধ। কোন আদর্শ নেই যে, আমার ব্যক্তিত্ব এই রেখায় চলবে। রুচিশীল মানুষ এই অগভীর থার্ডক্লাস ব্যক্তিত্ব ধরতে পারবে, যাকে বলা যায় 'শক্তের ভক্ত, নরমের যম' ব্যক্তিত্ব। আজকে আবারও শার্লি হেবদো একটা কার্টুন ছাপিয়েছে প্রচ্ছদে। এরদোয়ান তাদের প্রেসিডেন্টকে পাগল বলেছে, তাই তারা এরদোয়ানের কার্টুন ছেপেছে আন্ডারওয়্যার পরা, এক মদ পরিবেশক নারীর স্কার্ট উঠিয়ে নিতম্ব আলগা করে বলছে: এই তো নবী। এটা একদম নিম্ন লেভেলের রুচি যার, সেও বুঝবে যে হিউমার বলেন, আর বুদ্ধিবৃত্তিক ক্রিটিক বলেন, কিংবা পার্সোনাল এটাকই বলেন, কোনো কিছুতেই এটা কোনো লেভেলেই পড়ে না। সভ্যতা, সুকুমারবৃত্তি, উন্নত মূল্যবোধ, ইত্যাদি যা যা তারা দাবি করে, কোনো কিছুর মধ্যে পড়ে এটা?
সংখ্যালঘু যখন সংখ্যাগুরুকে, ক্ষমতাহীন যখন ক্ষমতাশালীকে নিজের অধিকারের কথা বলে, জুলুমের প্রতিবাদ করে, সেটাকে বাকস্বাধীনতা বলে। দিনের পর দিন মেজরিটি ও ক্ষমতাবান যখন মাইনরিটি ও ক্ষমতাহীনকে টিজ করে, এই ধরনের নিম্নমানের আঘাত হানে অনুভূতিতে; আর মাইনরিটির আওয়াজকে আটকে ধরে, শাস্তি আরোপ করে; সেটাকে বাকস্বাধীনতা নয়, বরং ফ্যাসিবাদই বলে। অথচ এরাই আবার 'ইহুদীদের বিরুদ্ধে যায়, এমন জিনিস' আঁকার জন্য এক কার্টুনিস্টকে বরখাস্ত করেছিল। আজ যারা নবীজীকে ব্যঙ্গ করে কার্টুন আঁকার পক্ষে, এরাই কিন্তু মকবুল ফিদাকে বিতাড়িত করেছিল হিন্দু দেবদেবীর আর্ট করার জন্য। কেন ধর্মনিরপেক্ষ ভারতীয় আর্মিতে একজন শিখ দাড়ি রাখতে পারে, কিন্তু মুসলিম পারে না। কেন ’ধর্মনিরপেক্ষ' দেশে শুদ্ধ সালাম, ইসলামী ড্রেসকোডকে 'উগ্রবাদ' বলে চিহ্নিত করা হয়। জর্জ বুশ বলেছিল: আফগান ও ইরাকী কয়েদী, যারা ইউএস আর্মির হাতে আটক, তাদের উপর 'জেনেভা কনভেনশন' কার্যকর হবে না। আপনি কি মনে করেন এইসব দ্বিচারিতা ইতিহাস-কালের স্বাভাবিক পরিক্রমা? 'নিষ্পাপ’, 'পরস্পর বিচ্ছিন্ন', সরকারগুলো কেন যে স্ট্যান্ডার্ড দাবি করছে, তা মুসলিমদের ক্ষেত্রে মানছে না। কেন এদের কোনো স্ট্যান্ডার্ড নেই, মাপকাঠি নেই।
কেবল মুসলিমদের ক্ষেত্রে এই দ্বিচারিতার কারণ ২টো, আমাদের ভুল ১টা, আর সমাধান একটা। ১ম কারণ, স্ট্যান্ডার্ড যা যা দাবি করা হয় সুন্দর শব্দে, তার ভিতরের দর্শন বিপরীত। তারা শব্দ অনুসারে চলে না, চলে পিছনের দর্শন অনুসারে। 'লিবার্টি-ইক্যুয়ালিটি-ফ্রাটার্নিটি' শুনলে যেমন বুকটা ভরে ওঠে, আসলে সেটা সবার জন্য না। যে আফ্রিকান বা ভারতীয় এটা শুনে আবেশে ঘোরে চোখ বুজে ফেলে সে একটা আকাট মূর্খ এবং লোমকূপ পর্যন্ত গোলাম। গণতন্ত্র মানে সংখ্যাগরিষ্ঠের শাসন না, পশ্চিমা পুঁজিপতিদের শাসন। তাই আফ্রিকায় ওসব দরকার নেই, সৌদি-কাতারে দরকার নেই, কেননা তারা পশ্চিমা পুঁজিপতিদের সেবায়ই নিয়োজিত। স্বাধীনতা মানে পশ্চিমের ভোগের স্বাধীনতা, পশ্চিম ভোগের প্রয়োজনে যে কারও স্বাধীনতা কাড়তে পারে, সাপ্লাই চেইনের নিচে তাই ৪ কোটি মডার্ন স্লেইভ। ওরা ওদের লাইনে ঠিক আছে, আমরাই বরং শব্দে ধোঁকা খেয়েছি।
কিংবা ২য় কারণ, ক্ল্যাশ অব সিভিলাইজেশ্যন। ভোগের সভ্যতা ও ভোগ-ত্যাগ ব্যলেন্স সভ্যতার দ্বন্দ্ব। দেশে দেশে উগ্র ডানপন্থা-হিন্দুত্ববাদ-জায়োনিজমের জাগরণ, নতজানু মুসলিমদের আধিক্য, বস্তুবাদী মুসলিমদের পশ্চিমমুখিতার এই বাড়বাড়ন্ত কী প্রমাণ করে? পশ্চিমের এই প্রতিটি আঘাতে, প্রতিটি দ্বিচারিতায় দুই প্রকার মুসলিম দেখবেন আপনি। একদলের ঈমানে লাগে, প্রতিক্রিয়া ওঠে। আরেকদল কারেন্ট পায় না, গায়রতে লাগে না। গায়ে লাগা মুসলিমদেরকেই দোষে। হাদিসে বলা 'ঈমানের তাঁবু' 'কুফরের তাঁবু' এভাবেই আলাদা হয়ে যাচ্ছে। এই অবিচার, এই নিয়ম-ভাঙা-খেলা, এই আবেগের পরীক্ষা অনিবার্য ছিল কি?
আমাদের ভুল, আমরা ওদের শব্দগুলোকে বিশ্বাস করেছি।
সমাধান একটাই, যেটা প্রযোজ্য 'শক্তের ভক্ত, নরমের যম' ব্যক্তিত্বের মানুষের জন্য।

সর্বশেষ এডিট : ০১ লা নভেম্বর, ২০২০ সন্ধ্যা ৭:০৫
২২টি মন্তব্য ২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

হুজুররা প্রেমিক হলে বাংলাদেশ বদলে যাবে

লিখেছেন মিশু মিলন, ০১ লা মে, ২০২৪ রাত ৯:২০



তখন প্রথম বর্ষের ছাত্র। আমরা কয়েকজন বন্ধু মিলে আমাদের আরেক বন্ধুর জন্মদিনের উপহার কিনতে গেছি মৌচাক মার্কেটের পিছনে, আনারকলি মার্কেটের সামনের ক্রাফটের দোকানগুলোতে। একটা নারীর ভাস্কর্য দেখে আমার... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইসলামের বিধান হতে হলে কোন কথা হাদিসে থাকতেই হবে এটা জরুরী না

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ০১ লা মে, ২০২৪ রাত ১০:৫৫



সূরাঃ ৫ মায়িদাহ, ৩ নং আয়াতের অনুবাদ-
৩। তোমাদের জন্য হারাম করা হয়েছে মৃত, রক্ত, শূকরমাংস, আল্লাহ ব্যতীত অপরের নামে যবেহকৃত পশু, আর শ্বাসরোধে মৃত জন্তু, প্রহারে মৃত... ...বাকিটুকু পড়ুন

লবণ্যময়ী হাসি দিয়ে ভাইরাল হওয়া পিয়া জান্নাতুল কে নিয়ে কিছু কথা

লিখেছেন সম্রাট সাদ্দাম, ০২ রা মে, ২০২৪ রাত ১:৫৪

ব্যারিস্টার সুমনের পেছনে দাঁড়িয়ে কয়েকদিন আগে মুচকি হাসি দিয়ে রাতারাতি ভাইরাল হয়েছিল শোবিজ অঙ্গনে আলোচিত মুখ পিয়া জান্নাতুল। যিনি একাধারে একজন আইনজীবি, অভিনেত্রী, মডেল ও একজন মা।



মুচকি হাসি ভাইরাল... ...বাকিটুকু পড়ুন

জীবন চলবেই ... কারো জন্য থেমে থাকবে না

লিখেছেন অপু তানভীর, ০২ রা মে, ২০২৪ সকাল ১০:০৪



নাইমদের বাসার ঠিক সামনেই ছিল দোকানটা । দোকানের মাথার উপরে একটা সাইনবোর্ডে লেখা থাকতও ওয়ান টু নাইন্টি নাইন সপ ! তবে মূলত সেটা ছিল একটা ডিপার্টমেন্টাল স্টোর। প্রায়ই... ...বাকিটুকু পড়ুন

দেশ এগিয়ে যাচ্ছে; ভাবতে ভালই লাগে

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ০২ রা মে, ২০২৪ দুপুর ১:০৩


বিশ্বব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ১৯৭২ সালে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির হার ছিল নেতিবাচক। একই বছরে পাকিস্তানের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির হার ছিল প্রায় ১ শতাংশ। ১৯৭৩ সালে পাকিস্তানের অর্থনৈতিক উন্নয়নের প্রবৃদ্ধি ছিল ৭... ...বাকিটুকু পড়ুন

×