
কাস্টম হাউজ থেকে বাসে করে যাচ্ছিলাম কর্ণফুলি মার্কেটের দিকে। সাথে আসুসের নতুন ল্যাপটপ। হঠাৎ করে ল্যাপটপটি নো পাওয়ারে চলে গেছে। মূলত এটাকেই হাসপাতালে নিয়ে যাচ্ছি।
গাড়ি চলছে। এটাকে কী আসলেই চলা বলে? দু’ মিনিট চলে তো পাঁচ মিনিট জ্যাম। এভাবে দশ কিলোমিটার যেতে যে কত সময় লাগবে সে হিসেব করতে ক্যালকুলেটরকেও বুঝি বেগ পেতে হবে!
সময় কাজে লাগাতে মোবাইলের নেটে ডুব দিলাম। বারেক বিল্ডিংয়ের মোড়ের কাছে বাস থামতেই সদলবলে বিশ-পঁচিশ জন লোক হুরমুর করে বাসে উঠল। কেউ সিট পেল, কেউবা দাঁড়িয়ে রইল।
আমি একনজর চোখ বুলিয়ে আবারও নেটে ডুব দিলাম। আগ্রাবাদের আগেই সাত-আটজন নেমে গেল। আর ঠিক তখনই একলোক চিৎকার করে উঠল-আঁর মোবাইল! আঁর মোবাইল! সে দ্রুত নেমে সাত-আটজনকে চেক করতে লাগল। এরই মধ্যে বাকিরাও নেমে গেল। সে একা কতজনকেই বা চেক করবে! আর এভাবে গণহারে চেক করাও কি সাজে?
আমি হতভাগা সে যাত্রীর দিকে তাকালাম। মোবাইল হারিয়ে সে যেনো রীতিমতো খেই হারিয়ে ফেলেছে। তার চোখেমুখে পর্যন্ত তাকানো যাচ্ছে না। গাড়ি এগিয়ে চলছে। পেছন থেকে কয়েকজনে বলাবলি করছে-ওরা মোবাইল চোর/ছিনতাইকারি পার্টির লোক!
কথাটি শোনামাত্রই আমি আঁতকে উঠলাম। অসুস্থ ল্যাপটপকে বুকের মাঝে টেনে আনি। নির্মাণাধীন ফ্লাইওভারের দিকে তাকিয়ে থাকি। নিরাপত্তাহীনতার অস্থিরতায় চোখ ঝাপসা হয়ে আসে।
চোখ ফেরাই পাশের সুউচ্চ অট্টালিকাগুলোর দিকে। মুহূর্তেই সে বৃহৎ অট্টালিকার ভেতর থেকে অস্ফুট রোদন ভেসে আসে। চোখ কচলিয়ে পুনরায় তাকাই। ওমা! সেকি! এযে সেই মোবাইল খোয়ানো সাদা পোশাকের লোক! ফুটপাতে তার নিথর দেহের পাশে ক্রমেই মানুষের ভিড় বাড়ছে।
মুনশি আলিম
৩০শে ডিসেম্বর ২০২২
হালিশহর, চট্টগ্রাম
সর্বশেষ এডিট : ৩০ শে ডিসেম্বর, ২০২২ সন্ধ্যা ৬:৫১

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।


