somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

এই আমার শেষ চিঠি- হয়তো তুমি পড়বেনা

০১ লা সেপ্টেম্বর, ২০১২ দুপুর ২:৫৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



একে কি বলবেন জানি না, যা খুশি বলুন। একান্ত মনের কিছু কথা বলে দিলাম। এই যে আমার দূর দিকে তাকিয়ে থাকা সে তো আপনার দূরে দূরে থাকার জন্যই। আমার যা বোঝার আমি বুঝে গেছি। না, না আর বিরক্ত করবো না। কখনো না, কক্ষনো না। আপনি আপনার সহজাতটুকু বজায় রাখুন। স্বাভাবিক হয়ে চলাফেরা করুন। দ্বিধা রাখবেন না। আমার জন্য বিব্রত হতে হয় এমন কিছুই আমি করবো না।

মনে পড়ে যে গানটা দিয়ে আপনাকে প্রথম আমার ভালোলাগার কথা জানিয়ে ছিলাম? সেই গানটা আমার যে কি প্রিয়ো। মনোসরনী এর –
যে কথা বলতে পারেনি আমার মা/ বাবা
বলতে পারেনি কাউকে
সে কথা বলতে চেয়ে
আমার পৃথিবীতে আসা
সে কথা হলো-
আমি ভালোবাসি তোমাকে
আমি ভালোবাসি তোমাকে
তোমাকে তোমাকে তোমাকে তোমাকে (মুখ (মা)এবং ১ম অন্তরাতে হবে বাবা)

যে কথা বলতে পারেনি আমি নিজে,
বলতে পারেনি তোমাকে
সে কথা বলতে চেয়ে
আমার এই বেঁচে থাকা
সে কথা হলো-
আমি ভালোবাসি তোমাকে
আমি ভালোবাসি তোমাকে
তোমাকে তোমাকে তোমাকে তোমাকে . …. … (২য় অন্তরা)

গানটা এখানে শুনুন

আমায় পছন্দ না করার মতো হয়তো অনেক কিছুই আছে। সে আমার চেহারা, স্বভাব বা আর্থ-সামাজিক অবস্থাও দায়ী। এসবে তো আমার হাত নেই, তাই এসব নিয়ে আগে খুব মন খারাপ হতো। এখন আর করি না। জানেন তো, কিছু কিছু মানুষ নিজেকে ছোট মনে করতে করতে তাদের ঘাড়ই কাত হয়ে যায়। এরপর আর মাথা তুলে উপরে তাকাতে পারে না। আমি তেমনটি হতে চাইনা। যার দায় আমার নয়, সেই দায় নিয়ে আমি এতো মাথা ঘামাবো কেন? সত্যি বলছি কিনা বলুন?

আমি যেমন, আমি তেমনই। এই আমাতে যদি কোন খুঁত থাকে, যে খুঁত আমি নিজে সারাতে পারবো না, তা নিয়ে শত মাথা ঘামালে কি সারবে? যে জিনিস ঈশ্বর আমায় দেন নি, যেখানে আমার কমতি আছে, তাকে মেনে নেওয়াই ভালো। আমি মেনে নেওয়ার চেষ্টা করছি। কিন্তু এইটুকু জানতে মন চায়, কি কমতি থাকলে কাউকে, দূর থেকে পছন্দ করা যায়, কাছে টেনে আপন করা যায় না। কেউ যদি আমায় একটু বলে দিতো!

শুভ্রদেভের একটা গান ছিল না, ‘এই আমার শেষ চিঠি হয়তো তুমি পড়বেনা’। গানটা কেবলই মনে পরছে। কি দরদ দিয়ে গেয়েছিলেন। এই আমার শেষ চিঠি কিনা জানি না, তবে…… মন চাইছে না মুখ ফুটে বলি।

কিছু কথা একান্ত না বললেই নয়, তাই বলা। এসব বলার তেমন কোনো মানে নেই। কিছু কিছু সময় যখন জীবনেরই মানে খুঁজে পাওয়া যায় না, তখন কিছু কথার আর মানে! সেও মানুষ হিসেবে আমার কথা আপনার কাছে হয়তো আরো মূল্যহীন। তবু বলি, সারা জীবন, এই যে ক’দিন হলো এ পৃথিবীতে, যে জ্ঞান, যে বুদ্ধি দিয়ে বেঁচে আছি, এ সবকিছুই যেন একটা Ethics এর উপর দাঁড়িয়ে আছে। আমি মনে প্রাণে চাই আমি যদি বাঁচি, আমার Ethics যেনো বেঁচে থাকে। আমার ছাত্ররা আমায় সম্মান করে আজো। আমাকে নয় আমার Ethics কে। আমার সহকর্মীরা আমায় পছন্দ করে সে মানুষ আমি নই, আমার ধারণ করা Ethics কে। আমার ভেতর যদি কোনো দিন এই Ethics ভেঙ্গে পড়ে- কতদিন বেঁচে থাকবো জানি না- সেদিনই সত্যিকারের আমির মৃত্যূ হবে।

প্রেম, ভালোবাসা, বিয়ে এনিয়েও আমি আমার Ethics থেকে কোনো দিন সরে আসবো না। জানেন? ছোটবেলায়, না না- কৈশরে, যখন একটা ছেলে একটা মেয়ের প্রতি অনুরক্ত হয়, সেই বয়সে, মায়েরা খুব সতর্ক থাকে। কি করে যেন সব টের পেয়ে যায়। এই বয়সটা তারাও তো পার করে এসেছেন। তিনি বলতেন, ‘এই বয়সে প্রেমে পড়েছো তো মরেছো। নারী হলো ভয়ংকর সুন্দর! ছোবল দেওয়ার পর টের পাবে। দেখোনা পতঙ্গ কি উল্লাসে এসে পরে আগুনের গায়ে, আগুন তার ধর্ম অনুযায়ী না পুড়িয়ে কাউকে কি ছেড়েছে?’ জানেন, আমি না, সাপ আর আগুন এ দুটোকেই খুব ভয় পাই। তাই কোনো নারীর সাথে প্রেম তো দূরে থাক স্বাভাবিক কথা-বার্তাও ঠিক মতো বলতে পারিনি অনেক দিন।

এছাড়াও প্রেম নিয়ে আমার নিজস্ব একটা মতামত আছে। এটা বিয়ের আগে প্রেম না পরে প্রেম এসব রকম নয়। আমি কেবল ভালোবাসতে চাই, যে সত্যি কেবল আমার হবে। আমি যাকে বুঝবো, যে কেবল আমাকে বুঝবে। আমাকে আগলে রাখবে। হ্যাঁ, স্বীকার করছি এই বয়সে এসে কাউকেই ভালো লাগেনি, তা না। লেগেছে, তা কেবল মনে মনে। কিছু হিসেব-নিকেষ ছিলো হয়তো, যেখানে মেলানো যায়নি। তাই সব ভালো লাগা মনে মনেই ছিল, মুখ ফুটে বলা হয়নি কাউকে। কেননা আমি কেবল একজনকেই চেয়েছি, খুঁজেছি এবং অবশেষে পেয়েছি। মানে সন্ধান পেয়েছি। কিন্তু সে যে দূরের বাদ্য, আলো নয়, আলেয়া, সে বুজতে বুঝতে ঢের দেরী হয়ে গেলো।

বিশ্বাস করুন, আর কারো জন্য আমার হৃদয় এমন করে কাঁপেনি, রাতের পর রাত আমার দু’চোখ এমন করে কাঁদেনি। সে শুধু রাতের আঁধার জানে এমন নয়, দিনের আলোও জানে। কেউ দেখে ফেললে, এই বলে রক্ষা পেয়েছি- চোখে সমস্যা, ডাক্তার দেখাতে হবে। কি করবো বলুন? মন যে মানে না। কিছু কিছু জিনিসের জন্য মানুষ যোগ্যতা হারায়। সে অভিজ্ঞতা আমার আছে। অনেক আগে, স্কুলে পড়ি। সম্ভবতঃ ক্লাস সেভেনে। স্কুলে গেলেই পিটি করানো হতো। লেফট-রাইট-লেফট, লেফট-রাইট-লেফট, ডাইনে ঘোরো, সোজা হও। আরো যেনো কি সব! এতো দিনে কি আর মনে আছে? একদিন ক্লাসে স্যার জানিয়ে দিলেন, সে বছর আমাদের স্কুল বিজয় দিবসের প্যারডে অংশগ্রহণ করবে। প্যারড গ্রহণ করবেন সম্মানিত প্রধানমন্ত্রী কি রাষ্ট্রপতি। প্রতি বছর টেলিভিশনে দেখি, স্কুলের ছেলে-মেয়েরা কি সুন্দর কুচকাওয়াজে অংশ নেয়। বিশেষ করে ময়মনসিংহের ভারতেশ্বারি হোমসের মেয়েরা কি সুন্দর পারফর্মেন্স করে। সখ করে নাম দিয়ে দিলাম। তাদের সাথেও এবার আমি থাকবো, এই মনে করেই কি যে ভালো লাগছিলো। কিছু দিন প্যারডে অংশ নিলাম। পায়ের সাথে পা মিলিয়ে প্যারডে চলতে হয়, আমার এক বন্ধু আর আমি স্কুলে যেতে আসতে প্যারডের মতো করে হাঁটি। লোকজন কিভাবে যেন তাকায়- তাকাক। এর কয়েকদিন পরেই আমি বাদ পরলাম। বাদ পরার কারণ, ড্রেস কোড। আমার সাদা এক জোড়া জুতো নেই। আমি সেন্ডেল পরে স্কুলে যাই। স্যান্ডল পরে তো আর প্যারড করা যায় না!

জানিনা, ঠিক কোন জিনিসের অভাবে আপনার কাছে আমার যোগ্যতা হারিয়েছি, তবু অপেক্ষা করবো, আমৃত্যূ অপেক্ষা করবো। এখন আমার কাছে কেবল আপেক্ষা করা ছাড়া আর কিছু নেই। আমি নিঃস্ব হয়ে গেছি। এই ব্যাপারটা হয়তো অনেকেই বুঝবেনা, আমিও অনেকদিন বুঝিনি। অনেককে প্রেম টিকছে না দেখে, হা-হুতাস করতে দেখে কত টিটকারী করেছি। না মুখে নয়, মনে মনে। মুখে স্বান্তনা দিয়েছি। বলেছি সব ঠিক হয়ে যাবে। কিন্তু আমার ব্যাপারটাতো কেউ জানেই না। আমাকে স্বান্তনা দিবে কে?

ছোটবেলা থেকে এতো ‘না’ শুনে বড় হয়েছি, এরপর থেকে কারো কাছে কিছু চাইতেই ভয় হতো। যদি ফের ‘না’ বলে দেয়। এই ভয়ে, জীবনের এক সময় সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম- যা আমার নয়, যা আমার নেই, তা তো নেই। সে কখনো আর অন্যের কাছে চাইবো না। সে সব কিছুই বৈষয়িক বিষয়। কিন্তু মন, একজনকে আপন করে পেতে চাইলে, এটা না জানালে পাবো কিভাবে? কিন্তু, এক্ষেত্রেও সেই ভয়, যদি ‘না’ বলে দেয়। এজন্য সাহস কি দুঃসাহস কোনটাই করা হয়ে উঠেনি। কিন্তু এও ঠিক আমার মন আর কারো জন্য এমম ব্যাকুল হয়ে উঠেনি। মনে হয়নি, এমন আত্মার সাথে আমার আত্মার মিলন না হলে, সারা জীবন আমার আত্মা অতৃপ্ত থাকবে। আপনাকে, সেও দীর্ঘদিন দেখে মনে হয়েছে, আমি কেবল যে আত্মার খোঁজ করেছি সে কেবল আপনি। অন্য কেউ নয়। আশেক যেমন মাশেকের জন্য প্রেমে মশগুল থাকে, আমিও তেমনি। আমি কেবল আপনার নেশায় চুর হয়ে আছি।
‘আমার স্মৃতিগুলোকে যদি টুকরো টুকরো করে কাটো তবে দেখতে পাবে, একজন নারীর চিন্তায় অধীর,
আমার স্মৃতিগুলোকে যদি টুকরো টুকরো করে ফালি করো তবে দখতে পাবে, একজন নারীকে সাজাতে সাজাতে আমি এলোমেলো,
আমার স্মৃতিগুলোকে যদি এফোড়-ওফোড় করে দেখো তবে দেখতে পাবে, শুধু একজন নারীই কেবল সাতার কাটে স্মৃতির কোষে কোষে।‘

কেউ হয়তো বলতেই পারেন, আমি কেন আর অন্য কাউকে ভালোবাসতে পারবো না? সবাইতো পারে। হ্যাঁ, হয়তো এটা আর সবার ক্ষেত্রে সত্যি। সবাই পারছে। আমার ধারণা তারা কিছুটা কৃপণ ছিলো। কিছু ভালোবাসা রেখে ভালোবেসেছে। আমি কেবল একজনকেই বলতে চেয়েছি ভালোবাসি, বলেছি। আর কাউকে ভালোবাসি বলার মতো কিছু অবশিষ্ট রেখে বলি নি। কিছু নেই। এই ফতুর হয়ে যাওয়া, শুন্য হয়ে যাওয়া জীবন কেবল অপেক্ষার। আমৃত্যূ অপেক্ষার। মৃত্যূর জন্য। কেবল মৃত্যূই আমায় পরিপূর্ণ করতে পারে। কেননা তখনই কেবল আমি এই শূন্যতা ছেড়ে মহাশূন্যে মিশতে পারবো।

আমার এই প্রেম কেমন যেন তাহসানের সেই অদ্ভুত কাল্পনিক প্রেমের মতো। এখানে শুনুন প্রথম প্রথম যখন তাহসান গাইতো আমি বুঝতে পারতাম না। কেননা, আমিতো কোনো প্রেমে পরিনি তখনো। কারো প্রেমে পরিনি। জানেন, মাঝে মাঝে মনে হয়ছে, মানুষ প্রেমের জন্য ভালোবাসার জন্য কত পাগলামী করে, আমিও না হয় করি। এর একটা নমুনা দেই। এটা আমার পাগলামীর উদ্দেশ্যে চিন্তার নমুনা। এই গেল আপনার জন্মদিনে আমার খুব ইচ্ছা হচ্ছিল আপনাকে দেখতে। কি করে দেখি?! আপনাকে যদি বলি- জানি, বলবেন- না। একবার মনে হলো অফিস থেকে ছুটি নেই। দাঁড়িয়ে থাকবো আপনার অফিসের সামনে, ছুটি পর্যন্ত, দূরে কোথাও। কিন্তু সেই রাতে দূর থেকে কি দেখতে পাবো? সামনে আসতে চাইলেও কেউ দেখে ফেললে আমার চেয়ে আপনিই বিব্রত বোধ করবেন বেশি। আমাকেও তো চেনে অনেকেই আমিই বা কি বলবো? হঠাৎ মনে হলো একটা কেক পাঠিয়ে দেই। ছ’টার মধ্যে আপনাদের অফিসে কেক উপস্থিত হবে। সবাই আশ্চর্য হবে, বিশেষ করে আপনি। কিন্ত কে পাঠালো, এ প্রশ্নে আপনি নীল হবেন, এই ভেবে এ চিন্তাও বাদ। বসুন্ধরা মার্কেটে ঘুরতে ঘুরতে একটা ঘড়ি পছন্দ হলো, একই ধরনের ঘড়ি লেডিস এন্ড জেন্টস উভয়ের জন্য, একই ডিজাইনের। কি যে ভালো লাগলো! দামটা একটু বেশি। কিন্তু তার চেয়ে বড় হয়ে উঠলো, আমি পাঠাবো কিভাবে, কি বলে? আপনি যদি ফেরত দেন এই চিন্তা মাথাতেই আসেনি। শুধু মনে হয়েছে- আফিসে আর বাসায় কি বলবেন। আমার জন্য আপনি বিব্রত হন, কেউ আপনাকে বিব্রতকর প্রশ্ন করুক, এতো কোনোদিন চাইনি। চাইনি, কারণ আপনি আমায় কোনোদিন এমন প্রশ্রয় দেননি। যতটুকু প্রশ্রয় দিলে দাবী নিয়ে এগুলো পাঠানো যায়।

এই শহরে আপনি আছেন, এটা আমার জন্য কতটা আনন্দের সেটা কিভাবে বোঝাবো? যখন আপনি থাকেন না, তখন মনে হয়, এই শহরে কেউ নেই। মনে পড়ে আমার সেই কবিতাটা-
এই শহরে তুমি নেই-
তাই পুরো শহরটাকে কারাগার মনে হয়
এই শহরে তুমি নেই-
তাই যেন কোনো পাখির কলরব নেই
এই শহরে তুমি নেই-
তাই বাগানে ফুল ফোটে না, অবরোধ চলছে
এই শহরে তুমি নেই-
তাই বাতাস বিশ্রামে গেছে, গাছে পাতা নড়ে না।।
(এই শহরে তুমি নেই, তাই- নীল আগুন)

জানেন, গতবার ঈদুল ফিতরে ঈদের পর দিনই সুন্দরবন চলে যাই। পারলে ঈদটাও বাইরে করতাম, এবার যেমন করলাম। হায়! সমুদ্রের যে রূপ দেখে এসেছি, সেটা এখানে অপ্রাসঙ্গিক তবু, এইটুকু বলি আমার এতটুকু ভয় লাগেনি। মৃত্যূকে এত কাছ থেকে এর আগে দেখা হয়নি। তাই, এইবার যখন বাইরে যাচ্ছিলাম, বার বার মনে হচ্ছিলো, আর যদি ফেরত না আসি? আর যদি কথা না হয়, দেখা না হয়। এই শহরে আপনি না থাকলে আমার থাকতে মন চায় না, ভালো লাগে না, কেন? এই সব অর্বাচীণ অনুভূতি আমাকে কোথায় তলিয়ে নিতে চায়, সে শুধু আমি জানি।

এমন কেন হলো? নিজের কাছে সৎ থাকার মানে কি তবে কষ্ট পাওয়া? আমি ছোটবেলা থেকেই অনেকটা নিরেট নিরীহ প্রকৃতির। জোর করে কারো কাছ থেকে কিছু নিয়েছি, এমন মনে পড়ে না। এই স্বভাবটা মোটেও নেই। আপনি যদি আমায় কিছু বলতেন, আপনার ভালো লাগা, মন্দ লাগা, পছন্দ-অপছন্দ, ইচ্ছা-অনিচ্ছা, তবে নিজেকে অনেকটা গুটিয়ে নিতে পারতাম। মিলিয়ে নিতে পারতাম, আরে এমনতো আমি নই। আপনার নিরবিচ্ছিন্ন নীরবতা, আমাকে অন্ধকারে রেখেছে। শুধু আপনার সম্পর্কে তা নয়, আমার সম্পর্কে আপনার কি চিন্তা, ধারণা তা থেকেও। ভালো-মন্দ যা হোক মেনে নেওয়ার সাহস ও শক্তি তো আমার ছিলো। কিন্তু নীরবতার যে ভিন্ন মানে থাকে। আমার মন কেবল সেই ভিন্ন মানে খুঁজতে চেয়েছে। কেবলই মনে হয়েছে, আপনি আমায় কিছু বলতে চান, বলতে পারছেন না, সময় নিচ্ছেন। আমি আমার জীবনের সমস্ত সময় নিয়ে অপেক্ষা করছি।

কিন্তু যেদিন মনে হলো, আমায় কিছু না বলেই, আপনি আমায় উপেক্ষা করছেন, এড়িয়ে যাচ্ছেন- খুব কষ্ট পেয়েছি। ছটফট করেছি। কেবল মনে হয়েছে, আমি কি এতোটাই নগন্য? নিজেকে কি যে বেহায়া লেগেছে! দিনের পর দিন আমি অপেক্ষা করেছি। সামাজিক যে সাইটে আমরা বন্ধু সেখনে আপনার উপস্থিতি কামণা করেছি, অন্ততঃ বোঝার চেষ্টা করেছি আপনি বাসায় ফিরেছেন কিনা? কখনো এতটুকু জোরে বাতাস হলে, মনে হয়েছে- ‘ও কি এখন বাইরে? রিক্সায়?’ হাওয়াকে মিনতি করেছি, ‘ও হাওয়া তুমি এতো অস্থির হয়ো না, ধীরে বহো’। একদিন দেখি শিলা বৃষ্টি হচ্ছে। ছোটবেলায় বারান্দায় এসে ছোট ছোট শিলার টুকরো টোকানো ছিলো আনন্দের। নিয়েই সরাসরি মুখে। আব্বু মানা করতেন, কে শোনে মানা? কিন্তু সেদিন, আমার মনটাই খারাপ হয়ে গেলো। এই সময় আপনার ইউনিভার্সিটিতে যাওয়ার সময়। একদিন অফিস শেষে বাইরে বের হতে পারি না। বৃষ্টি। কি যে বৃষ্টি হচ্ছে! যেন সেই ছোট বেলার Cats & Dogs বৃষ্টি। আমি কেবল মনে মনে ঝপছি- ‘আল্লাহ ওকে একটা রিক্সা পাইয়ে দাও’। এই সব অনুভূতি মূল্যহীন। যে ক’রাত আমার বালিশ ভিজেছে চোখের জলে, রাত্রি তার আঁধার দিয়ে পৌরুষের লজ্জার আব্রু রক্ষা করেছে। সেই থেকে রাত, অন্ধকার কি করে যেন আমার প্রিয়ো হয়ে গেছে। আমার বন্ধু হয়ে গেছে।

আমি কখনো চাইনা, আপনি আপনার চিন্তা থেকে, ইচ্ছা থেকে, সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসুন। আমি চাই আপনি সব ক্ষেত্রে জিতুন। জানেন তো, প্রতিদিনের প্রার্থনায় এও আমার এক প্রার্থণা যেন, ঈশ্বর আপনার মনের বাসনা পূরণ করুন। সেখানে আমি থাকি আর না থাকি, কিছু আসে যায় না। আপনি সুখী হোন। পৃথিবীর সমস্ত সুখ ঘিরে থাক আপনার চারদিকে। সেই বেষ্টনীর বাইরে দাড়িয়েও আমি প্রার্থনা করবো- এই বন্ধন যেন আরো দৃঢ় হয়।

এই সব অকথন কি অতিকথন পড়ার সময় ও কি আপনার আছে? যদি কষ্ট করে পড়েও ফেলেন তবে এই সময়টুকু নষ্ট করার জন্য দুঃখিত। সম্বোধনহীন এই চিঠিতে আরো কতো কি যে লেখার ইচ্ছা ছিলো, তাই ইচ্ছে করেই ইতি টানলাম না। সত্যিকারের ভালোবাসার কোন ইতি নেই।



সর্বশেষ এডিট : ০১ লা সেপ্টেম্বর, ২০১২ রাত ৮:০৬
৩টি মন্তব্য ৩টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

যে ভ্রমণটি ইতিহাস হয়ে আছে

লিখেছেন কাছের-মানুষ, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ১:০৮

ঘটনাটি বেশ পুরনো। কোরিয়া থেকে পড়াশুনা শেষ করে দেশে ফিরেছি খুব বেশী দিন হয়নি! আমি অবিবাহিত থেকে উজ্জীবিত (বিবাহিত) হয়েছি সবে, দেশে থিতু হবার চেষ্টা করছি। হঠাৎ মুঠোফোনটা বেশ কিছুক্ষণ... ...বাকিটুকু পড়ুন

আবারও রাফসান দা ছোট ভাই প্রসঙ্গ।

লিখেছেন মঞ্জুর চৌধুরী, ১৮ ই মে, ২০২৪ ভোর ৬:২৬

আবারও রাফসান দা ছোট ভাই প্রসঙ্গ।
প্রথমত বলে দেই, না আমি তার ভক্ত, না ফলোয়ার, না মুরিদ, না হেটার। দেশি ফুড রিভিউয়ারদের ঘোড়ার আন্ডা রিভিউ দেখতে ভাল লাগেনা। তারপরে যখন... ...বাকিটুকু পড়ুন

মসজিদ না কী মার্কেট!

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৮ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:৩৯

চলুন প্রথমেই মেশকাত শরীফের একটা হাদীস শুনি৷

আবু উমামাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, ইহুদীদের একজন বুদ্ধিজীবী রাসুল দ. -কে জিজ্ঞেস করলেন, কোন জায়গা সবচেয়ে উত্তম? রাসুল দ. নীরব রইলেন। বললেন,... ...বাকিটুকু পড়ুন

আকুতি

লিখেছেন অধীতি, ১৮ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৪:৩০

দেবোলীনা!
হাত রাখো হাতে।
আঙ্গুলে আঙ্গুল ছুঁয়ে বিষাদ নেমে আসুক।
ঝড়াপাতার গন্ধে বসন্ত পাখি ডেকে উঠুক।
বিকেলের কমলা রঙের রোদ তুলে নাও আঁচল জুড়ে।
সন্ধেবেলা শুকতারার সাথে কথা বলো,
অকৃত্রিম আলোয় মেশাও দেহ,
উষ্ণতা ছড়াও কোমল শরীরে,
বহুদিন... ...বাকিটুকু পড়ুন

স্প্রিং মোল্লার কোরআন পাঠ : সূরা নং - ২ : আল-বাকারা : আয়াত নং - ১

লিখেছেন মরুভূমির জলদস্যু, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ১০:১৬

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম
আল্লাহর নামের সাথে যিনি একমাত্র দাতা একমাত্র দয়ালু

২-১ : আলিফ-লাম-মীম


আল-বাকারা (গাভী) সূরাটি কোরআনের দ্বিতীয় এবং বৃহত্তম সূরা। সূরাটি শুরু হয়েছে আলিফ, লাম, মীম হরফ তিনটি দিয়ে।
... ...বাকিটুকু পড়ুন

×