জাতি হিসেবে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে তাঁর প্রাপ্ত স্বীকৃতি দেয়া আমাদের কর্তব্যের অংশ।বঙ্গবন্ধুর যে দিকটি লেখক এবং আলোচকরা এড়িয়ে গেছেন তা হল নেশন স্টেট বা জাতি রাষ্ট্র বিনির্মাণে তাঁর প্রজ্ঞার দিকটি।বহুকাল ধরেই আমাদের এখানে নানা রাজনৈতিক এবং ঔপনিবেশিক মিথস্ক্রিয়ায় 'বাঙালি' আর 'মুসলমান' নামক ক্যাটাগরী দুটি আলাদা হয়ে পড়েছিল।এর জন্য হিন্দু মহাসভা আর কংগ্রেস যেমন দায়ী ছিল তেমনি দায়ী ছিল অভিজাত মুসলমানেরা।অথচ একটা প্রপার জাতিরাষ্ট্র তৈরীর ক্ষেত্রে প্রথমেই দরকার ছিল এ দুটো কনফ্লিকটিং ক্যাটাগরীর মিলন ঘটানো। সেক্যুলার কিন্তু অবর্ণবাদী রাষ্ট্র নির্মাণের জন্য তাই প্রয়োজন হয়ে পড়েছিল এ দুটো ক্যাটাগরীকে স্বীকার করে নিয়ে সামনের দিকে আগানো।এতে করে ইউরোপীয়ান সেক্যুলার রাষ্ট্র ব্যবস্থার ভেতরে থেকেও ধর্ম (বিশেষত ইসলাম) কি করে স্পিরিট আকারে ফাংশন করতে পারে তার বাস্তবিক প্রয়োগ ঘটানো যায়।বঙ্গবন্ধু এ ব্যাপারটি বেশ ভালো উপলব্দি করেছিলেন।তাই তিনি তাঁর ঐতিহাসিক স্বদেশ প্রত্যাবর্তন ভাষণে বলেন, "আমি বাঙালী, আমি মুসলমান, একবার মরে, দুইবার মরে না।" বস্তুত, এ বক্তব্যের মধ্য দিয়েই সদ্য স্বাধীন দেশের স্বাধীনতার স্পিরিট এবং জাতি-রাষ্ট্র হিসেবে একে গড়ে তোলার জন্য যে নতুন উদ্যোগ তাঁর প্রথম বীজ বপন হয়। আজকে বাংলাদেশের রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক সমস্যার ক্ষেত্রে ঔপনিবেশিক ডিসকোর্সের যে ফাংশান আমরা লক্ষ্য করছি বঙ্গবন্ধুর এ উচ্চারণ সেসবের কাউন্টার ডিসকোর্স হিসেবে আমাদের জাতিরাষ্ট্র বিনির্মাণ ও সাবজেক্ট ফরমেশনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
সর্বশেষ এডিট : ৩১ শে মে, ২০১৬ সকাল ৮:৫৪