১) এরিস্টটলের সময় নারী আর দাসদের মানুষ বলেই গণ্য করা হত না।সেসময়কার বিজ্ঞান এইভাবে চিন্তা করত বলে নারী ও দাসদের ব্যাপারে অন্য কোন আলাপ তখন সম্ভবপর হয় নাই।আমাদের বামপন্থীরা তখন দুনিয়াতে বিরাজ করলে নারী ও দাসদের ব্যাপারে কোন বৈপ্লবিক আলাপ করতে পারতেন না।বড়জোড় প্লেটোর শিষ্য হতেন, এখন যেমন আরেক ইউটোপীয়ান মার্ক্সের শিষ্য।
২) ডেকার্ত ভাবতেন, প্রাণীকুলের কোন বোধ বুদ্ধি বা অনুভূতি নাই।তারা automata বা অটোমেটিক মেশিন।আমাদের বামপন্থীরা সেইসময় হাজির থাকলে তারা প্রাণী হত্যা নিয়ে কোন আলাপই তুলতে পারতেন না।বুদ্ধের যুগে জন্ম নিলে বড়জোর প্রাণী বিষয়ক দয়া দেখাতেন, তাতে মানুষের জন্য ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়া ও ভাইরাসের মরণের বিরূদ্ধে নিশ্চয়ই উচ্চকন্ঠ হতেন।
৩) আধুনিক জ্ঞানতত্ত্ব অজৈব যৌগের উপরে 'প্রাণ' নামক ধারণার প্রয়োগ ঘটাতে ইচ্ছুক নয়।ফলে রামপালে প্রাণ ও প্রকৃতি নষ্ট হবে বলে উনারা উচ্চকন্ঠ হয়েছেন।কিন্তু এই ডিসকোর্সও একসময় চেঞ্জ হয়ে যাবে,যেতে পারে। আবার অনেক দার্শনিক ধর্মীও বয়ানও জড় বস্তুতে প্রাণের ধারণা আরোপ করে। আমার ধারণা বিজ্ঞানের প্রাণের ধারণা বিস্তৃতিরর কাল আসন্ন।তখন বিজ্ঞান দিয়েই অনেক জড়বাদী বিশ্বাসী প্রমাণ করতে পারবে যে তার/তাদের ধর্মই বিজ্ঞানসম্মত।মার্ক্সবাদীরা ১৯ শতকের বিজ্ঞানের ধামা ধরে যেভাবে তাদের তত্ত্বকে জাস্টিফাই করেছে তেমনভাবে।তো এমন সময় যদি আসে যে বিজ্ঞান প্রাণের ধারণার বিস্তৃতি ঘটিয়ে অজৈব পদার্থ বা অণু পরমাণুতে পর্যন্ত আরোপ করা শুরু করল, তখন এই বামপন্থীরা কি রামপালকে স্বাগত জানাবে? কেননা তখন কার্বন নাইট্রোজেন ইত্যাদি ইত্যাদিও প্রাণ আকারে গণ্য হবে, এবং প্রাণের এই উৎপাদনের জন্য রামপালের প্লান্টকে স্বাগত জানানোর রাস্তা তৈরি হবে।মানুষের ক্ষতির ধূয়া যারা তুলবেন তারা তখন প্রকৃতিকে কেবল 'মানুষ-কেন্দ্রিক' তত্ত্বায়নের জন্য নিন্দিত হবেন।তো এই যখন মাপকাঠির অবস্থা, তাই রামপাল নিয়ে বামপন্থীরা যেন অন্য ধরণের তত্ত্বায়ন করেন।কেননা ইতোমধ্যেই বিজ্ঞানের স্কেলে ঘুণপোকায় ধরেছে।
সর্বশেষ এডিট : ২৪ শে জুলাই, ২০১৬ দুপুর ২:০৫