somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

২৪ ঘণ্টা এবং একটি প্রেমের গল্প

২৬ শে এপ্রিল, ২০১৬ দুপুর ১:৪২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

রাত ১২টাঃ
টুং টুং শব্দে ঘুম ভেঙ্গে গেল। মাত্র চোখটা লেগেছিল। ভীষণ রাগ হচ্ছে। এসএমএস এসেছে রুনুর, “দোস্ত আই আম ইন লাভ”।
সকাল ৭টা
ফেসবুক হয়ে গেছে ৩বেলার খাবারের মত। সকাল, দুপুর, রাত অনলাইন হতেই হবে। যথারীতি অনলাইন হলাম। আরে! আমার কলিগ রুনু লিখেছে “ ইন আ রিলাসনশিপ উইথ রায়হান” মনে পড়লো রাতের এসএমএস এর কথা। এই রায়হান টা আবার কে? দেখি অফিসে যাই, রুনু আসুক।
সকাল ৯টা
মাত্র অফিসে ঢুকেছি, রুনু যেন উড়ে আসলো, “ এই আমার এসএমএস পেয়েছিস? রায়হান কে দেখেছিস? সুন্দর না? আজ আমরা এক সাথে লাঞ্চ করব, তুই কিন্তু কোনও বাহানা করবি না।“
আমার ডেস্ক পর্যন্ত চলে এসেছে রুনু। আজ ওকে লাগছে অস্থির প্রজাপতির মত, উড়ে উড়ে বেড়াছে। ওর অনরগল কথার মাধমে বুঝলাম রায়হান ওর ফেসবুক ফ্রেন্ড। মাত্র কিছুদিন হল পরিচয়। চাকরি করে কোনও এক মাল্টি ন্যাশনাল কোম্পানি তে। গতকাল রাতেই যেন আবিস্কার করলো তাদের মাঝে অনেক মিল। দুজনের মন যেন একি তালে, একি লয়ে চলছে। তাই তারা এক মুহূর্ত দেরি করলো না “ভালবাসি” বলতে। হুম! একিই বুঝি বলে নিয়তি। কখন যে কার জোড়া মিলে যায়!
দুপুর ১২টা
কাজের খুব চাপ গিয়েছে সারাটা সকাল। ফেসবুক এ ঢু মারার কোনও সুযোগ হয়নি। ঢুকেই রায়হান এর ছবি দেখলাম। রুনু শেয়ার করেছে। বাহ ! রায়হান তো দেখতে খুব সুদর্শন। রুনুর পাশে খুব মানাবে। রুনু আর রায়হান এর ওয়াল ভরে গেছে লাভ ইউ, মিস ইউ লেখায়। বেশি দূর পরতে পারলাম না, রুনু ফোন দিয়েছে। “ শোন ঠিক একটায় কিন্তু যাব। আমি বলে ছুটি নিয়েছি, আজ হাফ অফিস করব। তুই কিন্তু প্লিজ দেরি করিস না”। হাতের কাজ গুছিয়ে নেই দ্রুত। রুনু আজ একটু দেরি সইবে না।

দুপুর ১টা
অতিথি শুধুআমি, রুনু আর রায়হান পাশাপাশি বসেছে। আমি ছাগলের তিন নাম্বার বাচচার মত তাদের খুনসুটি উপভগ করছি। “শোনও কি বলে জানিস, হানিমুন করতে নাকি প্যারিস যাবে। দেখ এতো টাকা খরচ করার কোনও দরকারআছে?”“আরে আমার বউ জন্যই তো আমার সব আপনি বলেন, আমি কি ভুল বললাম।“ রায়হানের কৃত্তিম অভিযোগ। “ কিন্তু টুনির জন্য কিছু জমাতে হবে না?” “টুনি?” রুনুর কথার রেশ ধরে আমার বিস্ময়। “ ও তোকে তো বলা হয়নি রায়হান ঠিক করেছে আমাদের প্রথম বেবির নাম টুনি রাখবে।” রুনুর গাল লজ্জায় লাল হয়ে গেছে। লাঞ্চ শেষ, আমাকে এবার বিদায় নিতে হবে। দুজন এর সুন্দর ভবিষ্যৎ কামনা করে আমাই চললাম অফিসার দিকে। রায়হান আর রুনু প্রজাপতি হয়ে উড়ে গেল বিকালটা উপভগ করতে। হয়ত আরও কোনও ভবিষ্যৎ প্লান করতে।

বিকাল ৪টা
উফ! এতো কাজ। দুপুরে যে কি খেয়েছি মনে করতে পারছি না। রুনুর কি মজাই না করছে। ওদের ওয়ালে কমেন্ট পরেই যাছে। শুভেছা, কেউ কেউ আবার বিয়ের দাওয়াত চাইছে। একটু হিংসে হচ্ছে। কিভাবে এতো ভাল একটা বর পেয়ে গেল। হা রায়হান কে তো ও বর বলেই ডাকে। আমার তো ফেসবুক আছে কিন্তু রায়হানের মত কোনও ফ্রেন্ড নাই। একেই বলে বদ কিসমত। ইস! রুনু কত মজাই না করছে।

রাত ৮টা
মাত্র বাসায় পৌছুলাম। বিধ্বস্ত। এর মাঝে রুনু কে অনেক বার ফোন দিয়েছি। ধরেনি। এখন কি আর ওর আমার ফোন দেখার সময় আছে? প্রচণ্ড খুধা পেয়েছে। খাবার দিতে বলে ফ্রেশ হতে গেলাম

রাত ১১:৩০টা
রুনু ফোন দিয়েছে। “ কি বেপার, সারা টা দিন লাপাত্তা, আজিই হানিমুন সেরে ফেললি নাকি? আমি তো......”
মুখের কথা শেষ করতে পারলাম না, রুনু কেড়ে নিয়ে বলল “ খবরদার ঐ ছোটলোকটার কথা বলবি না, ওর সাথে সম্পরক রাখলে ২দিনে আমাকে পাবনা যেয়ে ভর্তি হতে হবে, ছিঃ! জানিশ আমার আগেও কত মেয়ের সাথে......., থাঙ্কস গড আমি আগেই জানতে পেরেছি, এই সব ছেলেরা………..”
রুনুর রিলেশনশিপ স্ট্যাটাস সিঙ্গেল হয়ে গেছে। দেয়াল ঘড়িতে ১২ তার ঘণ্টা বাজছে।
সর্বশেষ এডিট : ২৬ শে এপ্রিল, ২০১৬ দুপুর ১:৪৫
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ব্লগার'স ইন্টারভিউঃ আজকের অতিথি ব্লগার শায়মা

লিখেছেন অপু তানভীর, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ রাত ১১:০৫



সামুতে ব্লগারদের ইন্টারভিউ নেওয়াটা নতুন না । অনেক ব্লগারই সিরিজ আকারে এই ধরণের পোস্ট করেছেন । যদিও সেগুলো বেশ আগের ঘটনা । ইন্টারভিউ মূলক পোস্ট অনেক দিন... ...বাকিটুকু পড়ুন

...এবং উচ্চতায় তুমি কখনই পর্বত প্রমাণ হতে পারবে না

লিখেছেন নতুন নকিব, ০৫ ই মে, ২০২৪ সকাল ৮:৫৬

...এবং উচ্চতায় তুমি কখনই পর্বত প্রমাণ হতে পারবে না

ছবি কৃতজ্ঞতাঃ অন্তর্জাল।

ছোটবেলায় মুরব্বিদের মুখে শোনা গুরুত্বপূর্ণ অনেক ছড়া কবিতার মত নিচের এই লাইন দুইটাকে আজও অনেক প্রাসঙ্গিক বলে মনে হয়।... ...বাকিটুকু পড়ুন

লালনের বাংলাদেশ থেকে শফি হুজুরের বাংলাদেশ : কোথায় যাচ্ছি আমরা?

লিখেছেন কাল্পনিক সত্ত্বা, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:১৪



মেটাল গান আমার নিত্যসঙ্গী। সস্তা, ভ্যাপিড পপ মিউজিক কখনোই আমার কাপ অফ টি না। ক্রিয়েটর, ক্যানিবল কর্পস, ব্লাডবাথ, ডাইং ফিটাস, ভাইটাল রিমেইনস, ইনফ্যান্ট এনাইহিলেটর এর গানে তারা মৃত্যু, রাজনীতি,... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমেরিকার গ্র্যান্ড কেনিয়ন পৃথিবীর বুকে এক বিস্ময়

লিখেছেন কাছের-মানুষ, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:৪১


প্রচলিত কিংবদন্তি অনুসারে হাতে গাছের ডাল আর পরনে সাধা পোশাক পরিহিত এক মহিলার ভাটাকতে হুয়ে আতমা গ্র্যান্ড কেনিয়নের নীচে ঘুরে বেড়ায়। লোকমুখে প্রচলিত এই কেনিয়নের গভীরেই মহিলাটি তার... ...বাকিটুকু পড়ুন

চুরি! চুরি! সুপারি চুরি। স্মৃতি থেকে(১০)

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ২:৩৪


সে অনেকদিন আগের কথা, আমি তখন প্রাইমারি স্কুলে পড়ি। স্কুলে যাওয়ার সময় আব্বা ৩ টাকা দিতো। আসলে দিতো ৫ টাকা, আমরা ভাই বোন দুইজনে মিলে স্কুলে যেতাম। আপা আব্বার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×