somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বিসিএস পরীক্ষার জন্য জরূরী পরামর্শ

২৮ শে আগস্ট, ২০১২ সকাল ১১:২৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

যাদের এই লেখাটি প্রয়োজন তারা দয়া করে কপি বা সেভ করে রাখুন, এটি একটি সাময়িক পোস্ট।


এই লেখাটির কোন কিছুই নতুন নয় এবং বিষয়গুলোও গ্রুপের দেয়াল জুড়ে বহুল চর্চিত। নতুন বলতে শুধু এটুকুই, লেখাটি একেবারে নতুনদেরকে উদ্দেশ্য করে লেখা। গ্রুপের অনেক সম্মানিত ক্যাডার এবং পুরনো মেম্বার যাঁরা মাশফি ভায়ের মতো স্টারের লেখা পড়ে অভ্যস্ত, তাদের সামনে অত্যন্ত কুণ্ঠার সাথে লেখাটি পোস্ট করছি শুধু এই ভেবে, যদি আমার স্বল্প অভিজ্ঞতার কথা নতুনদের একজনেরও সামান্য উপকারে আসে, সেটাই হবে আমার পরম পাওয়া।

মূল প্রসঙ্গে আসি, লেখাটি লিখিত পরীক্ষা নিয়ে কোন বিষয় ভিত্তিক আলোচনা নয়, এখানে মূলত ‘ লিখিত পরীক্ষার প্রস্তুতির ধরন’ নিয়ে আমার অভিজ্ঞতার কথা আপনাদের সাথে শেয়ার করার চেষ্টা করেছি মাত্র। লিখিত পরীক্ষায় খুব ভালো স্কোর করতে হলে বা ক্যাডার প্রাপ্তি নিশ্চিত করতে হলে আমার মতে নিম্নোক্ত বিষয়গুলোর প্রতি প্রাথমিকভাবে খুব গুরুত্ব দেয়া প্রয়োজন।

১। বিগত বছরের প্রশ্ন সম্পর্কে স্বচ্ছ ধারনাঃ
বিগত বছরের প্রশ্নগুলো থেকে বেশ বড় একটা অংশ লিখিত পরীক্ষায় Repeat হয়। কিছু প্রশ্ন হুবহু Repeat হয়, কিছু প্রশ্ন একটু পরিবর্তিত হয়ে Repeat আসে আবার কিছু Topic আছে যেগুলো থেকে প্রত্যেকবার প্রশ্ন সেট করা হয়। যদিও ২৭ তম থেকে নতুন প্রশ্ন পদ্ধতিতে পরীক্ষা নেয়া হয় তথাপি এর পূর্বের প্রশ্নগুলোও কিন্তু কম গুরুত্বপূর্ণ নয়। প্রশ্ন সবচেয়ে বেশি Repeat হয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি অংশ থেকে এছাড়া বাংলা ব্যাকরণ, সাহিত্য, English Grammar, বিভিন্ন টীকা, Definition, সংবিধানের প্রশ্ন, আন্তর্জাতিক বিষয়াবলীর ছোট প্রশ্ন এবং বাংলাদেশ ও আন্তর্জাতিক বিষয়াবলী থেকে বেশ কিছু বড় প্রশ্ন Repeat করা হয় বা নির্ধারিত Topic থেকে বড় প্রশ্ন আসে। তাই ১০ তম থেকে ৩২ তম বিসিএস পর্যন্ত সকল প্রশ্ন খুব ভালোভাবে Study করা বিশেষ প্রয়োজন।
৩১ তম’তে বাংলাদেশ বিষয়াবলী ২য় পত্রে এবং ৩২ তম’তে বাংলাদেশ বিষয়াবলী ১ম পত্র ও গাণিতিক যুক্তি অংশের মান বণ্টন ও প্রশ্নের সংখ্যাই ব্যাপক পরিবর্তন পরিলক্ষিত হওয়ায় বিষয়টি আমলে নিয়ে মানসিকভাবে প্রস্তুত থাকা ভালো।

২। Target/Priority Zone নির্ধারণঃ
আমাদের প্রত্যেকের কিছু Strong দিক বা Weak দিক থাকে অথবা ভালো লাগার বা খারাপ লাগার Subject থাকে। সেই অনুযায়ী দুর্বল দিকের প্রতি যত্নশীল হওয়া একান্ত প্রয়োজন। কিন্তু আমি Target Zone বলতে বুঝাতে চাচ্ছি, লিখিত পরীক্ষার ৯০০ নম্বরের মধ্যে এমন কিছু ভাগ আছে যেগুলোতে প্রচুর নম্বর উঠানো যায়। সেই ভাগ গুলো নির্ধারণ করে নিজেকে Well Prepared করতে পারলে লিখিত পরীক্ষায় ভালো ফলাফল অবশ্যম্ভাবী। তেমন কিছু Area হলোঃ
o গাণিতিক যুক্তি--------৫০ নম্বর
o মানসিক দক্ষতা-------৫০ নম্বর
o সাধারন বিজ্ঞান-------৫০ নম্বর
o প্রযুক্তি--------------৫০ নম্বর
o বাংলা বাকরণ--------৩০ নম্বর
o বাংলা সাহিত্য--------৩০ নম্বর
o English Grammar----২৫ নম্বর
o বাংলাদেশ বিষয়াবলী-টীকা----৪০ নম্বর (১ম পত্র ২০ ও ২য় পত্র ২০)
o আন্তর্জাতিক বিষয়াবলী—৪০ নম্বর (টীকা ২০ ও ছোট প্রশ্ন ২০)
সর্বমোট=৩৬৫ নম্বর
এই ৩৬৫ নম্বরের Zone কে Target করে নিজেকে প্রস্তুত করা একান্ত প্রয়োজন যাতে এখানে সর্বোচ্চ সংখ্যক নম্বর নিশ্চিত করা যায়। কারণ এ অংশে নম্বর কাটার খুব একটা অবকাশ নাই।

৩। সংবিধানঃ
বিগত বছরের প্রশ্নগুলো পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, ২৭ তম বিসিএস পরীক্ষায় বাংলাদেশ বিষয়াবলী ১ম ও ২য় পত্র মিলে সংবিধান থেকে প্রশ্ন এসেছে ১০০ নম্বরের। তেমনিভাবে, ২৮ তম’তে ৮০, ২৯ তম’তে ৮০, ৩০ তম’তে ৮৫, ৩১ তম’তে ৬০ এবং ৩২ তম’তে ১০০ নম্বরের প্রশ্ন এসেছে সংবিধান থেকে। বুঝতেই পারছেন ‘গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধান’ সম্পর্কে খুব ভালো দখল রাখা কতটা গুরুত্বপূর্ণ।

To the point উত্তর করতে পারলে গণিতের মতো নম্বর পাওয়া যায় সংবিধানের প্রশ্নগুলোতে। সংবিধান বিষয়ে উত্তর লেখার আর একটা সুবিধার দিক হলো এই উত্তরগুলোতে অন্যান্য প্রশ্নের চেয়ে কম লিখতে হয় এবং সময় তুলনামুলক কম লাগে।

আপনি ক্যাডার তথা প্রথম দিকের ক্যাডার পাবেন কিনা তা এক অর্থে নির্ভর করে সংবিধানের প্রশ্নগুলোয় আপনি কতটা ভালো উত্তর করলেন তার উপর।

সংবিধানের উপর মাশরুফ হোসেন মাশফি ভাই এবং গোলাম রাব্বানী সুলভ ভাইয়ের লিখা অমূল্য ২টা Document গ্রুপের Doc Section এ আছে, যা ভালোমতো Study করলে আপনাদের সকল জিজ্ঞাসার অবসান হওয়ার কথা। আমার বক্তব্য থাকবে, “সংবিধানের সূচীপত্র প্রথমেই মুখস্থ করে নিন এবং পুরো সংবিধান কয়েকবার ভালমতো রিডিং দিয়ে প্রশ্নের উত্তর নিজের ভাষায় লিখুন”।

৪। উত্তরগুলো Informative হওয়া বাঞ্ছনীয়ঃ
বড় প্রশ্নগুলো উত্তর করার সময় গতানুগতিক পদ্ধতি অবলম্বন না করে, উত্তরগুলো ছোট ছোট পয়েন্ট আকারে লিখুন এবং প্রাসঙ্গিক Data কথায় না লিখে Table আকারে বা Graph আকারে প্রদান করুন (প্রয়োজনবোধে Map দিতে পারেন)। এভাবে Answer লিখলে স্বল্প সময়ে অনেক Information দেয়া যায়।

৫। Presentation:
যাদের হাতের লিখা ভালো তাদের তো কথায় নেই কিন্তু যাদের লিখার Texture একটু খারাপ তাদের উচিত উত্তরগুলো পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন ও স্পষ্ট করে লেখা। এটা খুব গুরুত্বপূর্ণ, পরীক্ষকের মনোযোগ আকর্ষণ করে ভালো নম্বর প্রাপ্তির ক্ষেত্রে।

উত্তরগুলো সুন্দরভাবে উপস্থাপনের জন্য কালো এবং নীল এই দুই রঙের কলম ব্যবহার করতে পারেন। নীল কালি ব্যবহার করবেন লেখা হাইলাইটস করার জন্য। যেমন- উত্তরের Title নীল কালিতে দিতে পারেন বা Table এর title, Heading, Source বা উত্তরের ভিতরে সংবিধানের অনুচ্ছেদ গুলো কিংবা আপনার স্বতন্ত্র্য কোন তথ্য যা আপনি চাচ্ছেন পরীক্ষকের নজরে পড়ুক, সেগুলো নীল কালিতে দিতে পারেন। এই ধরনের উপস্থাপন নিশ্চিতভাবে ভালো নম্বর প্রাপ্তিতে সহায়ক হবে।

৬। ৩ ঘণ্টা সময়ের মধ্যে যেহেতু অনেকগুলো প্রশ্নের উত্তর দিতে হয় সেজন্য দ্রুত গতিতে লিখে উত্তর Complete করতে হবে। মাথায় রাখতে হবে ৯০০ নম্বরের মধ্যে ১ নম্বরের উত্তরও যেন না ছুটে যায়।

৭। এখন থেকে যা পড়বেন (বিশেষ করে বড় প্রশ্নগুলোর জন্য) তা অবশ্যই আলাদা আলাদা Subject এর খাতায় তুলে রাখুন। সবকিছু তুলতে না পারলেও বড় প্রশ্নের পয়েন্টগুলো, Table গুলো বা বিশেষ কোন তথ্য অবশ্যই তুলে রাখার চেষ্টা করুন। এর ফল আশাকরি হাতে-নাতে পাবেন।

৮। প্রস্তুতির ক্ষেত্রে তথ্য-প্রযুক্তির সর্বোত্তম ব্যবহার নিশ্চিত করুন। ফেইসবুক, উইকিপিডিয়া, Google, বিভিন্ন পত্রিকার অনলাইন ভার্সন যেমন- The Daily Star, সাপ্তাহিক বুধবার, bdnews24.com প্রভৃতির বিশ্লেষণধর্মী লেখাগুলো, TV Talk Show ইত্যাদিতে নিয়মিত চোখ রাখুন দেখবেন আপনার অজান্তেই লেখার মান প্রথাগত লেখনীর গণ্ডী পেরিয়ে ভিন্ন মাত্রা যোগ করছে।

বন্ধুরা পরীক্ষার এখনো যেটুকু সময় বাকি আছে তা সঠিক পদ্ধতিতে কাজে লাগান, সাফল্য আসবেই।

যেকোন ধরনের সমালোচনা, জিজ্ঞাসা, পরামর্শ সাদরে গৃহীত হবে। সবার জন্য শুভকামনা রইল।

সামিউল আমিন
বিসিএস (প্রশাসন)
মেধাস্থানঃ ৭ম
৩১ তম বিসিএস


সূত্র: https://www.facebook.com/groups/bcsourgoal
২টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ব্লগার'স ইন্টারভিউঃ আজকের অতিথি ব্লগার শায়মা

লিখেছেন অপু তানভীর, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ রাত ১১:০৫



সামুতে ব্লগারদের ইন্টারভিউ নেওয়াটা নতুন না । অনেক ব্লগারই সিরিজ আকারে এই ধরণের পোস্ট করেছেন । যদিও সেগুলো বেশ আগের ঘটনা । ইন্টারভিউ মূলক পোস্ট অনেক দিন... ...বাকিটুকু পড়ুন

...এবং উচ্চতায় তুমি কখনই পর্বত প্রমাণ হতে পারবে না

লিখেছেন নতুন নকিব, ০৫ ই মে, ২০২৪ সকাল ৮:৫৬

...এবং উচ্চতায় তুমি কখনই পর্বত প্রমাণ হতে পারবে না

ছবি কৃতজ্ঞতাঃ অন্তর্জাল।

ছোটবেলায় মুরব্বিদের মুখে শোনা গুরুত্বপূর্ণ অনেক ছড়া কবিতার মত নিচের এই লাইন দুইটাকে আজও অনেক প্রাসঙ্গিক বলে মনে হয়।... ...বাকিটুকু পড়ুন

লালনের বাংলাদেশ থেকে শফি হুজুরের বাংলাদেশ : কোথায় যাচ্ছি আমরা?

লিখেছেন কাল্পনিক সত্ত্বা, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:১৪



মেটাল গান আমার নিত্যসঙ্গী। সস্তা, ভ্যাপিড পপ মিউজিক কখনোই আমার কাপ অফ টি না। ক্রিয়েটর, ক্যানিবল কর্পস, ব্লাডবাথ, ডাইং ফিটাস, ভাইটাল রিমেইনস, ইনফ্যান্ট এনাইহিলেটর এর গানে তারা মৃত্যু, রাজনীতি,... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমেরিকার গ্র্যান্ড কেনিয়ন পৃথিবীর বুকে এক বিস্ময়

লিখেছেন কাছের-মানুষ, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:৪১


প্রচলিত কিংবদন্তি অনুসারে হাতে গাছের ডাল আর পরনে সাধা পোশাক পরিহিত এক মহিলার ভাটাকতে হুয়ে আতমা গ্র্যান্ড কেনিয়নের নীচে ঘুরে বেড়ায়। লোকমুখে প্রচলিত এই কেনিয়নের গভীরেই মহিলাটি তার... ...বাকিটুকু পড়ুন

চুরি! চুরি! সুপারি চুরি। স্মৃতি থেকে(১০)

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ২:৩৪


সে অনেকদিন আগের কথা, আমি তখন প্রাইমারি স্কুলে পড়ি। স্কুলে যাওয়ার সময় আব্বা ৩ টাকা দিতো। আসলে দিতো ৫ টাকা, আমরা ভাই বোন দুইজনে মিলে স্কুলে যেতাম। আপা আব্বার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×