বেকারের দেশ বাংলাদেশ আবার তিনশ এমপি +পয়তাল্লিশ সং এম্পি তার ঊপর দেশের প্রকৃত মালিক মন্ত্রীরা আর মাননীয় প্রা.-মি. এর হাতের তালুতে থাকা পিং পং বলের নাম ও বাংলাদেশ।
উপরে যাদের কথা স্মরণ করলাম তারা হলেন দেশের রাজা-রানী ও উজির নাজির আর আমরা বাকি সবাই প্রজা। মানুন আর নাই মানুন এরাই কিন্তু আমাদের প্রভু হয়ে আমাদের মাথা কিনে নিয়েছেন।
লজ্জামিশ্রিত গর্ব হয় যখন অর্থনীতি চালায় প্রবাসী শ্রমিকরা তুচ্ছভাবে যাদের লেবার বলেও ডাকা হয়। জিডিপি আর মাথাপিছু আয় কিন্তু দেশের প্রজারা যোগান দেবে কিন্তু কিভাবে যেন নিম্ন মধ্য দেশ হিসেবে নিজের অবদান দেখতে পান প্রভুরা ।গাঁটটি বড় করার একটা ছুঁতো পেয়ে বেতন করেন ডাবল, ট্রিপল আরও বেশি।
মরহুম সাইফুর রহমান এর একটা জনপ্রিয় বচন ছিল “বিদেশে গিয়া বলতে পারিনা আমাদের বেতন মাত্র পাচশ ডলার” তিনি ছিলেন অর্থ বিষয়ক সামন্ত প্রভু। যতদুর জানি ভ্যাট এর মন্ত্র তিনিই সর্বপ্রথম দিয়েছিলেন নব্বই এর দশকে।
কিছুদিন আগে প্রকাশিত কুলদীপ নায়ার একটি প্রবন্ধ থেকে একটু অংশ তুলে দিচ্ছিঃ “নির্বাচিত ব্যক্তিদের একীভূত বেতন দেওয়া উচিত, যার মধ্যে সব খরচ অন্তর্ভুক্ত থাকবে। এর মধ্যে থাকবে আবাসন, যোগাযোগ, বিদ্যুৎ, পানি, টেলিফোন প্রভৃতি। এতে মানুষ জানতে পারবে, নির্বাচিত প্রতিনিধিদের পেছনে সরকারের রাজস্ব ব্যয় কত”
view this link
আমরা জানি বিভিন্ন দেশে যখন বাজেট ঘাটতি দেখা দেয়ার আশংকা থাকে তখন সরকার ব্যয় কমিয়ে দিতে প্রথমে সামরিক-বেসামরিক খাতে কাটছাট করে। ফ্রান্সে এরকম ভাবে ফরাসি প্রেসিডেন্ট ও মন্ত্রীদের বেতন ৩০ শতাংশ কমেছে ।view this link
প্রেসিডেন্ট ওলাঁদ নিজের ও মন্ত্রীদের বেতন কমানোর সিদ্ধান্তের মধ্য দিয়ে তাঁর নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি রাখলেন।এতবড় দেশে মন্ত্রী মাত্র ৩৪ জন !! চেয়ার থেকে পড়ে যাবেন না যেন আবার।
এই একই সময়ে কতগুলো দেশে কত লক্ষ লক্ষ সরকারী কর্মচারী দের ছাঁটাই,বেতন হ্রাস, পেনশন বাতিল করা হয়েছে তার একটা একটা হিসাব পড়ে দেখলে মনে হবে আমাদের রাজা রানীরা দেশে বেহেশত বানিয়েছেন তাই তারা হিসাব নিকাশের উর্দ্ধে।
মহামতি ব্রিটিশ রানীর বিমান বাহী যুদ্ধজাহাজ বেচে দেওয়া হয়েছে জ্বালানীর বিল পাশ হয়না বলে। আমাদের দেশে রাজা রানীরা কয়বার বেতন বাড়িয়ে নিলেন একটু জানাব আজকে।প্রথমে একটু ধারাবাহিক বৃদ্ধির হিসাব পাওয়া যাবে তারপর এই বেতন কার জন্য কত তাও জানান হবে।
ফাজলামীর শুরু ২০০৯ সালে নতুন রাজা রানী ক্ষমতায় ।নতুন বেতনকাঠামো অনুমোদন: বেতন সর্বোচ্চ ৪০,০০০, সর্বনিম্ন ৪,১০০। তারপর আবার চারমাস আগেই বর্ধিত হার ধরা হল।
২০০৯ থেকে শুরু করলাম কারণ ২০০৫ এ সর্বশেষ বেতন বাড়িয়ে নিয়ে মুল্যস্ফীতির ঘোড়ায় চাবুক দিয়েছিল জামাতিবাদীরা।কমপক্ষে দশবছর পরে ভারতে বেতন বাড়ানো হয়ে থাকে । তা শুধু মুখে মুখে নয় কঠোর ভাবে মেনে চলা হয়।এদেশে তা দশ বছর এর বদলে পাচ বছর হোক না। view this link
এরপরের রাজা রানীরা খায়েশ করলেন মানে কানে ডলা দিয়ে বেতন ভাতা বিল পাশ করলেন ৪-৩-১০ তাং এ মন্ত্রী ও সাংসদদের বেতন-ভাতা বেড়ে প্রায় দ্বিগুণ হচ্ছে। view this link এবার মাত্র চার মাসের ব্যবধানে। একজন তো কমেন্ট করলেন “আহারে, আমাদের মন্ত্রী-সংসদ সদস্যরা কী দারিদ্রের মধ্য দিয়েই না জীবন নির্বাহ করেন। মাত্র ১৮৭ জন ব্যবসায়ী, কোটি কোটি টাকা নির্বাচনে বিনিয়োগ করেছেন শুধুই জনগনের খেদমত করার জন্য। সেটি নাহয় তারা তদবির টদবির করে নুতন ব্যবসা করে উঠিয়ে নিলেন, তারপরেও তাদের সংসার চালাতে হবেতো?”
প্রথম সংসদে ব্যবসায়ী সাংসদের সংখ্যা ছিল মোট সাংসদের ২৪ শতাংশ। বর্তমানে এ হার ৫৬ শতাংশ।একই সঙ্গে বাড়ছে সংসদ বর্জনের হার আর সাংসদদের বেতন-ভাতা সংসদ বর্জনের হার ৩৪ শতাংশ, সপ্তমে ৪৩ শতাংশ, অষ্টমে ৬০ শতাংশ এবং নবম সংসদে ৭৪ শতাংশ।
২০১২ তে আবার মন্ত্রী-সাংসদদের ভ্রমণ ভাতা ৪০% বাড়ল
শেষের ভাগে মজা বেশি তাই রাজা রানীরা তাদের প্রণামি বাড়িয়ে নিলেন মানে ধার্য করলেন আরকি।এটা হচ্ছে ২০১৫ সালের সেপ্টেম্বরে ।এবার আবার দ্বিগুণ নিয়ম অনুসরণ করলেন ভদ্র রাজা-রানিরা। আমরাই খালি একটু বেশি বেশি চেঁচাই।
নতুন বেতন কাঠামো ৭৮ হাজার টাকা (নির্ধারিত) ও সর্বনিম্ন মূল বেতন হবে আট হাজার ২৫০ টাকা। view this link
আওয়ামী ব্র্যান্ডের রাজা রানী দের সাইটে লেখা আছে দক্ষতা অনুসারে ইনক্রিমেন্ট হবে।view this link
অর্থাৎ সিলেকশন গ্রেড, টাইম স্কেল এগুলার কথা চেপে যাওয়া হয়।
কেন যে এগুলা বলে শিক্ষকদের চেতায় দিলেন? এ নিয়ে সচিবদের সাথে রেশারেশি শুরু হল। উড়ো খই গোবিন্দায় নমঃ বলে বেতন সমান করে দিলে বোধহয় শিক্ষকরা খুশি থাকতেন। তারা শিক্ষক হয়ে এখানে শিক্ষকের কি ভুমিকা পালন করলেন তা বোধগম্য নয়? অনিয়ম করে যখন বেতন বাড়ছিল- কই ছিল শিক্ষকের নীতি? তারা তখন ব্যস্ত ছিলেন নিজেদের চাকরীর বয়স বাড়িয়ে নিতে।শিক্ষকতা কি শুধু টাকার জন্য? শিক্ষকরাই কিন্তু পারেন জাতির ভাংগা চেতনা-মেরুদন্ড সোজা করতে ,কোচিং করিয়ে নয় বরং ক্লাসেই পড়িয়ে
এরফাকে রাজা-রানীর শুনলেন কিছু রাজকর্মচারী নাকি বেতন বাড়ানোর সুফল পাচ্ছেন না। তাই তারা যেন বেশিদিন ক্ষমতার মধু ভোগ দখল করতে পারেন সে লক্ষ্যে একলাফে দুবছর বাড়িয়ে দেয়া হল সবার চাকরীর বয়স। উরিবাবা একেই বলে রাজার চাল।view this link
কিছু বিতর্ক হয়েছিল সেদিন , যখন দুজন রানী রাজদরবারে ছিলেন বিল পাশ এর সময়। সাবেক রানী বলেন “আমাদের আমলে সবার বেতন বাড়ানো হয়েছিল। সে সময় দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিও ছিল না।” কথাটা বলে তিনি বুঝেন ও নি কি ভুল হয়েছে। আরো কিছু প্যাচাল এর পরে তিনি বলে উঠেন “যে মন্ত্রী সাংসদদের বেতন বাড়ানো হচ্ছে, তাঁদের মনোরঞ্জনে ব্যবহার করা হচ্ছে ইডেন কলেজের মেয়েদের।”
বর্তমান রানী কিন্তু বাঁশ দিলেন ভাংগা সুটকেস কে ।এই মধুর আলাপ নিজের চোখে আমি দেখেছি এবং প্রীত হয়েছি। আসলেই এরকম রানী পাওয়া ভাগ্যের ব্যাপার।view this link
(বাকিটা আগামী পর্বে আসছে )
সর্বশেষ এডিট : ২০ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৫ সন্ধ্যা ৬:৩২