চোখের মনিদুটোকে
বানিয়ে কামানের গোলা
আমি দৃষ্টি নিক্ষেপ করি
আরেক বাংলার আকাশে
আমি ছুটি মৈত্রী গড়তে
মৈত্রী নিয়ে ছুটে আমায়
বিরহে -
রেললাইনের স্লিপার কেঁপে উঠে
আমি তো ওদের কখনো ভালোবাসি নি
ওদের হৃদয়ের রাহাজানি শুনি নি
তবুও ওরা আমায় সংগ দেয়
আর আমার জাতি-
আমায় বেড়ি পড়ায়
আমি আকাশের দিকে তাকাই
বিষাদে আকাশ রুপ নেয় কালোর
বাদুড়েরা দিনের বেলায়-
দেখা পায় আলোর
আমি চিৎকার দিতে দিতে
কখনো বন্দনা করি মেঘের
কখনোবা বৃষ্টির
কখনো বন্দনা করি খরার
(যদিও খরা আমার ক্রোধের কাছে মরা,
তবুও বন্দনা করি,
প্রাণ ভরেই বন্দনা করি,
'ওদের চোখকে পুড়িয়ে দাও'-
বারংবার বলি।)
কখনো সখনো পাখির বন্দনা করি
(ডানাহীন পাখির নয়,
অন্ধ পাখির নয়,
বজ্রপাতে চমকে যাওয়া পাখির নয়,
মুরগি, হাঁস ও কবুতরের নয়,
যারা কিনা গৃহমায়ায় বন্দী)
আমি বাতাসের বন্দনা করি
(এমন বাতাস না,
যা হর মাহিনায় -
পরিশোধ করিতে হয়,
এমন বাতাস নয়
যা নীল বা সাদা কলারের গরিমায়-
ভেস্তে যায়।)
আমি প্রায়ই বন্দনা করি মাটির
যদিও জোয়ারের শত বর্ষ পেরুলেও-
দেখা মিলে না ভাটির।
(সেই মাটি কখনো চাই নি
যে মাটিতে গড়েছিল কর্নেল ঘাটি
নি:সংগতার শতবর্ষেও
পায় নি যে কোন চিঠি,
এমনকি চীনামাটি বা পোড়ামাটিরও!)
কেউ তো কখনো চিঠি দিলো না
কখনো গোপন অনুসরণ করলো না
ঝোঁপের আড়ালে লুকিয়ে দেখলো না কেউ
দেখলো না কেউ বক্ষেসৃষ্ট ঢেউ
গড়লো না কাঁদামাটি দিয়ে মূর্তি কেউ
তবে....
কুকুরগুলো আমায় দেখে আনন্দে করে ঘ্যাও ঘ্যাও
মাদী মার্জারগুলো করে ম্যাও ম্যাও।
জানো আকাশ,
আমার প্রিয়র হাত নেই,
চোখ নেই, নাক নেই,
( কোন কিছুতেই আমাদের দুজনার
নাক গলাতে যায় না কেউ)
ওর ঠোঁট নেই,
জানো ও হাসতেও জানে না!
(দাঁত নেই বলে হাসা যাবে না-
তা কি হয় -
এমনটা আমার মুখ থেকে ওর বিরুদ্ধে
প্রায়ই বের হয়।)
বলতে গেলে আমার প্রিয়র কোন রূপ নেই,
আকার-আকৃতি নেই,
বিশ্লেষণ বা মিশ্রণ কোনটাই নেই!
এমন লোকের প্রতি মানুষের প্রেম জাগে?
ভাবতেও ভাবনারা মূর্ছা যায়!
তবে কিভাবে অনন্তকাল আমাদের প্রেম টিকে রয়? -
প্রশ্নটা প্রায়ই শুনতে হয়।
আচ্ছা, ওর যেগুলো নেই
সেগুলো কখনো কি ছিল আমার?
তবে?
'আকাশকে জিজ্ঞেস করে নিও,
সাক্ষী আকাশ।
আমাদের তো ঠিকানা বলতে ওই আকাশই!'-
আমি ইশারায় বলি।
তবুও কারা যেন
(ঠিক আমি এদের চিনি না,
কেউ তাদের চিনতে পারে না,
কখনো কেউ তাদের আসলে-
চিনে উঠতে পারে না।)
প্রশ্ন করে, 'এপার বাংলার আকাশ
না অপার বাংলার আকাশ? '
আকাশটাকে আপনারা ভাগ করেছেন,
আমরা তো ভাগাভাগি করেছি-
আমাদের ভালোবাসা!
আমাদের কাছে আকাশটা আমাদের,
না এপার বাংলার না ওপার বাংলার!
কিছুক্ষণ পর প্রমিথিউস আমাকে বলে,
মা মেডুসা, তুমি ওদের পাথর করে দিলে!
আমি বলি, 'সে ক্ষমতা আমার নেই,
আমি কাউকে কখনো পাথর বানাতে পারি না,
কেউ কাউকে পাথর বানাতে পারে না,
পাথর হয়েই পাথরের জন্ম হয়,
পাথরের ধর্ম মানিতে গিয়ে পাশানেরা-
সীমানাভাগের খেলায় মত্ত রয়।'
মুহূর্তেই আকাশ কাঁটাতারের সীমানাকে অশরীরীর চাদর পড়িয়ে দেয়।
আলোকচিত্র ঋণ : গুগল
সর্বশেষ এডিট : ১৭ ই আগস্ট, ২০১৬ সকাল ৭:২৯