অনেকদিন ধরে ইচ্ছে ছিলো শিশিরের সাথে আলিঙ্গন করার।তার জন্য গ্রীষ্মের তাপদাহ,বর্ষার স্নিগ্ধতা,শরতের শুভ্রতা,হেমন্তের কনক লাবন্য আর বষন্তের ফুলেল হাওয়াকে অবজ্ঞা করেছি।পারিনি তারাদের অভ্যর্থনা জানাতে,পারিনি উৎসব করতে,পারিনি চোখ খুলতে।বর্ষার অথৈ জলদিয়েও পারেনি তৃষ্ণা মিটাতে।যার জন্য এত অপেক্ষার প্রহর গুণি,তার যে দেখা মিলেনা।তিমির আর প্রভাতের লুকোচুরির অনেক মুহূর্তইতো কেটে গেছে।উষ্ণতার সাথে কয়েক ফোটা জলের খেলার জন্য অপেক্ষা।
ষড়ঋতুর দেশে এক ঋতুর জন্য অপেক্ষায় থাকাতে পঞ্চ ঋতুরাজ জোট বেঁধে আন্দোলন করছে আমার বিরুদ্ধে।আন্দোলনকে দমাতেই হবে,তা যে করেই হোকনা কেনো।প্রতিরোধের দুর্গ তৈরী করা হল।কে আছে এমন,যে আমাকে দেবীর কন্যার সাথে মিলিত হওয়া থেকে বিরত রাখে?
আন্দোলন প্রতিহত হল।এবার পৌষ মহলে যাওয়ার পালা।পথিমধ্যে পৌষ সজলের রাজপুত্তুর মেঘকুমারের সাথে দেখা।আমি বললাম "আমি তৃষ্ণার্ত!আমি ক্লান্ত!পৌষ মহলের রাজকন্যা শিশিরই পারে আমায় শীতল করতে!" মেঘ কুমার বললো "তুমি চিনো কিভাবে শিশিরকে?" আমি বললাম "কোনো এক শীতে,এসেছিল কুটরীতে,সিক্ত করেছিল আঙিনাকে,মুছে দিয়েছিল কুয়াশাকে।তারই কয়েক ফোটা লেগেছিল অন্তরে।ভুলা যায় কি,স্নিগ্ধদানকারিণীকে?" রাজকুমার মুচকি হেসে বললো"মিলাবো শিশিরের সাথে,বলবে আমার কথা গাঁদা ফুলের নজরানা দিয়ে।"
পৌষমহলে প্রবিষ্ট হলাম।বলবো স্নিগ্ধতার কথা।গীতবিতানে সুরের মূর্ছনায় সময় যেন থেমে গেল।কাটেনা প্রহর সিক্ত হওয়ার।অপেক্ষা করতে করতে ফাগুন এলো হৃদয়ে ধরিয়ে আগুন। কি হলো শিশিরের? শিশির কুয়াশার চাদরের ভিতরে হয়তো কোথাও আছে।কোনো বনের আগুনের ধোঁয়ার মাঝেও তাকে খোঁজা হয়। বর্ষাতে তাই আজো শিশিরের খোঁজা হয়। অপেক্ষায় থাকে শীত।
সর্বশেষ এডিট : ১৭ ই আগস্ট, ২০১৬ রাত ১০:৪২