somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

রাবীন্দ্রিক চৌর্যবৃত্তির উপাখ্যান: একটি চুরি করা গান কেন হবে আমাদের জাতীয় সঙ্গীত?

০৬ ই মে, ২০১২ সকাল ১১:৩৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

১৪১৯ ফসলী সনের পঁচিশে বৈশাখে আবার রবীন্দ্র পূজার আয়োজন করছে শেখ হাসিনার মহাজোট সরকার। এবার ভারতের অর্থমন্ত্রী, যে প্রবল বাংলাদেশ বিদ্বেষী এবং যে চাল নিয়ে এদেশের সাথে বেঈমানি করেছিল, সে প্রণব মুখার্জীকে এবার প্রধান অতিথি করা হবে। রবীন্দ্র সঙ্গীত নিয়ে গালভরা বুলি আওড়ানো হবে, চটকদার সেমিনার করে মানুষের নিকট রবীন্দ্রনাথকে দেবতা হিসেবে তুলে ধরার অপচেষ্টা চালানো হবে। কিন্তু এটা অনেকেই জানে না যে, রবীন্দ্রনাথের রচিত বাইশশ’ গানের অনেকগুলোই বিশুদ্ধ নয়, রবীন্দ্রনাথের মৌলিক গান নয়। অন্য কোনো গানের সুর থেকে সরাসরি নকল করা বা সেগুলোকে ভেঙেচুরে রবীন্দ্রনাথ নিজের মতো করে নিয়েছে। রবীন্দ্রনাথের এই সমস্ত চুরি করা গানকে ভাঙা গান হিসাবে বিবেচনা করা হয়। রবীন্দ্রনাথের ভ্রাতুষ্পুত্রী ইন্দিরা দেবী রবীন্দ্রনাথের ভাঙা গানের একটা তালিকা করেছিল। সেখানে সে ২৩৪টি গানকে ভাঙা গান হিসেবে বিবেচনা করেছিল। ইন্দিরা দেবীর বক্তব্যকে যদি সত্যি বলে ধরে নেই, তাহলেও দেখা যাচ্ছে যে রবীন্দ্রনাথের সৃষ্ট গানের এক দশমাংশেরও বেশি অন্যের সৃষ্ট সুর থেকে চুরি করা।
বাউল গানের সুর চুরি করতে গিয়ে গগন হরকরার সাথে পরিচয় ঘটে রবীন্দ্রনাথের। গগন হরকরার জন্ম শিলাইদহের আড়পাড়া গ্রামে। কাজ করত ডাক বিভাগে ডাক হরকরা হিসাবে। সে একজন বাউল গীতিকার ছিল। রবীন্দ্রনাথ প্রায়শই গগন হরকরাকে কাচারিতে ডেকে নিয়ে আসত গান শোনার জন্য। গ্রামের এই সহজ সরল বাউল তখনও ভাবেনি রবীন্দ্রনাথের মনের মধ্যে কী রয়েছে। গগন হরকরার ‘আমি কোথায় পাবো তারে’ এই গানটার অনুকরণে রবীন্দ্রনাথ কবিতা লেখে ‘আমার সোনার বাংলা’ বলে। এই গগন হরকরাদের কথা, বাউলদের কথা কিন্তু ইন্দিরা দেবী বলেনি। বলেছিল পাশ্চাত্যের গীতিকার যারা পরিচিতমুখ, যাদের সুর রবীন্দ্রনাথ চুরি করেছিল তাদের কথা। রবীন্দ্রনাথ পথে কোনো পথচারীর মুখে কোনো গান শুনে ভালো লাগলেও তাকে থামিয়ে কাগজে সেই সুর টুকে নিত, পরে সুবিধামতো তার গানে তা বসিয়ে দিত। সেগুলো কিন্তু ভাঙার গান হিসেবে ধরা হয়নি, অর্থাৎ মাত্র ২৩৪টি নয়, তার চুরি করা আরো গান রয়েছে।
মূলত, রবীন্দ্রনাথের মতো চৌর্যবৃত্তির পরিচয় খুব কম লোকই দিতে পেরেছে। কারণ সে ছিল জমিদার, চুরি করলেও তার প্রতিবাদ করার মতো পরিস্থিতি তৎকালীন সময়ে ছিল না, উপরন্তু ব্রিটিশরা ছিল তার পৃষ্ঠপোষক। কিন্তু একবিংশ শতাব্দীতে এদেশের মুসলমান কেন একজন তস্করকে শ্রদ্ধা করবে? একটি চুরি করা গানকে এদেশের জাতীয় সঙ্গীত হিসেবে বেছে নেয়াটা এদেশের জন্য অপমানজনক। এবং দেশের সম্মান রক্ষা করাটাই শাসকশ্রেণীর কর্তব্য। এই কর্তব্য পালন করতে না পারলে ক্ষমতার মসনদে থাকাটা অর্থহীন।
সূত্রঃ
২১টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ছিঁচকাঁদুনে ছেলে আর চোখ মোছানো মেয়ে...

লিখেছেন খায়রুল আহসান, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:০৯

ছিঁচকাঁদুনে ছেলে আর চোখ মোছানো মেয়ে,
পড়তো তারা প্লে গ্রুপে এক প্রিপারেটরি স্কুলে।
রোজ সকালে মা তাদের বিছানা থেকে তুলে,
টেনে টুনে রেডি করাতেন মহা হুলস্থূলে।

মেয়ের মুখে থাকতো হাসি, ছেলের চোখে... ...বাকিটুকু পড়ুন

অহমিকা পাগলা

লিখেছেন আলমগীর সরকার লিটন, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:১৪


এক আবেগ অনুভূতি আর
উপলব্ধির গন্ধ নিলো না
কি পাষাণ ধর্মলয় মানুষ;
আশপাশ কবর দেখে না
কি মাটির প্রণয় ভাবে না-
এই হলো বাস্তবতা আর
আবেগ, তাই না শুধু বাতাস
গায়ে লাগে না, মন জুড়ায় না;
বলো... ...বাকিটুকু পড়ুন

হার জিত চ্যাপ্টার ৩০

লিখেছেন স্প্যানকড, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩




তোমার হুটহাট
চলে আসার অপেক্ষায় থাকি
কি যে এক ছটফটানি
তোমার ফিরে আসা
যেন প্রিয় কারো সনে
কোথাও ঘুরতে যাবার মতো আনন্দ
বারবার ঘড়ি দেখা
বারবার অস্থির হতে হতে
ঘুম ছুটে... ...বাকিটুকু পড়ুন

জীবনাস্ত

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৪৪



ভোরবেলা তুমি নিশ্চুপ হয়ে গেলে একদম,
তোমার বাম হাত আমার গলায় পেঁচিয়ে নেই,
ভাবলাম,তুমি অতিনিদ্রায় আচ্ছন্ন ,
কিন্তু এমন তো কখনো হয়নি
তুমি বরফ জমা নিথর হয়ে আছ ,
আমি... ...বাকিটুকু পড়ুন

যে দেশে সকাল শুরু হয় দুর্ঘটনার খবর দেখে

লিখেছেন এম ডি মুসা, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:১১

প্রতি মিনিটে দুর্ঘটনার খবর দেখে অভ্যস্ত। প্রতিনিয়ত বন্যা জলোচ্ছ্বাস আসে না, প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনার খবর আসে। আগে খুব ভোরে হকার এসে বাসায় পত্রিকা দিয়ে যেত। বর্তমানেও প্রচলিত আছে তবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×