সদ্য প্রয়াত, দোযখবাসী হিন্দু দালাল কবীর চৌধুরী একবার ম-পে গিয়ে বলেছিলো, দুর্গাপূজা হলো বাঙালি সংস্কৃতি। শুধু দুর্গাপূজা কেন, রাখীবন্ধন, নববর্ষ, মঙ্গলপ্রদীপ জ্বালানো থেকে শুরু করে প্রত্যেকটি বিষয় বাঙালি সংস্কৃতি- এই নাম দিয়ে বাঙালি মুসলমানদের উপর চাপ দেয়া হচ্ছে এগুলো পালন করতে। এতে মূলত বাঙালি মুসলমানদের যে একটি নিজস্ব ভাষা এবং সংস্কৃতি আছে তাই অস্বীকার করা হচ্ছে। যারা করছে তারা বঙ্কিম, রবীন্দ্রনাথের মতো উগ্রপন্থী সাম্প্রদায়িক হিন্দুদের ভাবশিষ্য। এরা এদেশের মুসলমানদের বাঙালি বলে মানতে চাইতো না, বলতো বিদেশী। এবং মুসলমানরা তাদের ভাষায় বিদেশী বলে তাদেরকে ভারত থেকে বের করতে হবে, এটাই উগ্রতাবাদী হিন্দুসমাজের মূল নীতি।
বঙ্কিম ও রবীন্দ্রনাথরা এদেশের মুসলমানদের সবকিছুই অস্বীকার করেছে। এবং এদেশে এক শ্রেণীর লেখকও আছে যারা ইতিহাসে বাঙালি মুসলমানদের ভূমিকাকে তুচ্ছতাচ্ছিল্য করে থাকে। সুকৌশলে এদেশের পরবর্তী প্রজন্মের মধ্যে এরা হীনমন্যতা সৃষ্টি করছে, তাদের পূর্বপুরুষ সম্পর্কে মানহানিকর তথ্য দিয়ে। মুসলমানরাই বাংলা সাহিত্যের জনক, অথচ আজকাল প্রকাশিত বিভিন্ন প্রবন্ধে মুসলমান কবি সাহিত্যিকদের তুচ্ছতাচ্ছিল্য করা হয়। তারা বলে নববর্ষ পালন করতে, অথচ বাঙালি মুসলিম বীর মীর নিসার আলী তিতুমীর রহমতুল্লা¬হি আলাইহি তিনি এই নববর্ষেরই অনুষ্ঠান হালখাতা বা পূণ্যাহর বিরোধিতা করতে গিয়ে হিন্দু জমিদারদের সাথে যুদ্ধে জড়িয়ে পড়েছিলেন। ১৮৫৭ সালে সিপাহী বিদ্রোহের পর পুরান ঢাকায় বর্তমান বাহাদুর শাহ পার্কে দেশপ্রেমিক মুসলিম আলেমদের গাছের ডালে ডালে ফাঁসিতে ঝোলানো হয়। এগুলো নতুন প্রজন্ম জানে না। নতুনেরা শুনে রাখো, আমাদের প্রথম পরিচয় আমরা মুসলমান, কিন্তু তারপরও আমরা ওইসব পা চাটা কাপুরুষ, গোবরখোর, যবন, ¤ে¬চ্ছ, অস্পৃশ্য হিন্দুদের তুলনায় ঢের ঢের বেশি বাঙালি, ঢের ঢের বেশি দেশপ্রেমিক! আমরা বুকের রক্ত দিয়ে বাংলা ভাষার অধিকার নিশ্চিত করেছি, যেখানে কলকাতার রাস্তাঘাটে বাংলা ভাষায় লেখা সাইনবোর্ডও হিন্দি আর ইংরেজির দাপটে খুঁজে পাওয়া যায় না।