মেয়ে: আব্বু তুমি আওয়ামী লীগকে ভোট দিয়েছিলে কেন? দেখেছো দেশের কি অবস্থা করে ফেলেছে।
বাবা: কোন অবস্থার কথা বলছো মা?
মেয়ে: এই যে গ্যাস, পানি, বিদ্যুৎ, রাস্তাঘাটের করুণ অবস্থা, দুর্ণীতি, বিশ্ববিদ্যালয়গুলি সন্ত্রাসী তৈরির কারখানা বানিয়ে ফেলেছে।
বাবা: কিন্তু বিএনপির আমলে তো এগুলোর অবস্থা আরো বেশি খারাপ ছিল।
মেয়ে: ও আচ্চা। আব্বু আরেকটি কথা।
বাবা: বল মা।
মেয়ে: এতো টাকা খরচ করে জিয়া আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের নাম পরিবর্তন করা কি ঠিক হয়েছে?
বাবা: অবশ্যই ঠিক হয়েছে, একজন খুনীর নামে কেন বিমানবন্দরের নাম থাকবে?
মেয়ে: কিন্তু অনেক টাকা খরচ হয়ে গেলো না এতে? সম্ভবত ১৪০০ কোটি টাকা। ঐ টাকাটা আমাদের ভাঙ্গা রাস্তাঘাট ঠিক করার কাজে লাগানো যেত না?
বাবা: দেশের রাস্তাঘাট ভাঙ্গা কোথায়? বিএনপির আমলে তো আরো খারাপ ছিলো।
মেয়ে: ও আচ্চা। আব্বু শুনেছো আমার এক বন্ধুকে ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীরা কুপিয়ে ফেলে দিয়ে গেছে।
বাবা: কি বল? ছাত্রলীগের ছেলেরা করেছে এটা কে বলেছে?
মেয়ে: পেপারে লিখেছে। ছবিও দিয়েছে।
বাবা: খোজ নিয়ে দেখো ওরা ছাত্রলীগ করে না ওরা অন্য কারা।
মেয়ে: ও আচ্চা। বাবা পেপারে দেখেছো সিদ্দিপাশা গ্রামে একটি মেয়েকে কারা ধর্ষণ করে ফেলে গেছে। কারো কোন নিরাপত্তা দিতে পারছে না সরকার।
বাবা: কিন্তু বিএনপির আমলে তো আরো বেশি অনিরাপদ ছিল দেশ।
মেয়ে: আব্বু ঠিক আছে ধরে নিলাম তখন ১০০ টা খুন হতো আর এখন ৯০ টি খুন হয়, কিন্তু এই ৯০ টি খুন কি খুন না?? অপরাধ না?
বাবা: হ্যা অবশ্যই অপরাধ।
মেয়ে: কিন্তু তোমার কথা শুনে তো মনে হচ্ছে এটি অপরাধ না।
বাবা: আমি সেটি বলিনি, আমি বলেছি -------
মেয়ে: ধরে নিলাম তখন ১০০ টি মেয়ে ধর্ষণের শিকার হতো এখন ৯০ টি মেয়ে ধর্ষণের শিকার হচ্ছে, এখানেও বিএনপির চেয়ে আওয়ামীলীগ ভাল। কিন্তু এগুলো বন্ধ হবে কবে বাবা? বন্ধ করা কি এতোটাই কঠিন? তুমি বারবার বিএনপির দোহায় দিচ্ছ কিন্তু এটি স্বীকার করতে চাইছো না যে তোমরাও খারাপ।
এর কিছুদিন পর:
আদরের মেয়ে বাসায় আসছে না দেখে বাবা উৎকন্ঠায়। মেয়ে বাসায় আসে না কেন? মোবাইল ফোনটিও বন্ধ। কোন আত্নীয়স্বজনের বাসায়ও যায় নি। অবশেষে মেয়ের ক্ষত বিক্ষত লাশ এলো রাত ১২ টায়। ডাক্তারী রিপোর্ট বলছে তাকে ধর্ষণ করার পরে খুন করা হয়েছে।
বাবা কান্দে আর বলতে থাকে: সকাল বেলা আমার মেয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে গেল সুস্থ আর এখন লাশ হয়ে ফিরে এসেছে। কেমন দেশে বাস করছি আমরা ছেলে মেয়েদের জীবনের কোন গ্যারান্টি নেই।
সর্বশেষ এডিট : ১৩ ই ডিসেম্বর, ২০১২ সন্ধ্যা ৬:০২