somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

শের-ই-বাংলা এ কে ফজলুল হক; অজানা কিছু কথা।

২০ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ সকাল ৮:৪৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

এ কে ফজলুল হককে কেন শের-ই-বাংলা বলা হয়, সেটা নিয়ে তেমন মাথা ঘামাইনি। আমি মনে করতাম, ফজলুল হকের অনবদ্য রাজনৈতিক জীবনই তাঁকে বঙ্গ শার্দূলে তবদিল করেছে। আমি জানতাম, ১৯৪০ এর দশকের শুরুতে তিনি যখন মুসলিম লীগের নেতা ছিলেন, তখন মুসলিম লীগ সমর্থক পত্রিকাগুলো তাঁর শের-ই-বাংলা উপাধীকে অধিকতর জনপ্রিয় করে তোলে। যদিও আবহমান বাংলায় তাঁর প্রতি আরোপিত সবচেয়ে মর্যাদাবান সম্বোধন ছিলো 'হক সাহেব'।

তবে ফজলুল হকের বঙ্গ শার্দূল হবার পেছনে যে তাঁর কিছু অনবদ্য শারীরিক সক্ষমতাও অনুঘটক হতে পারে, তা সিরিয়াসলি ভাবিনি। তবে এখন মনে হয় শের-ই-বাংলা নামক অবিস্মরণীয় এই উপাধীর পেছনে মহাকাব্যিক রাজনৈতিক জীবনের চেয়েও বেশি অনুঘটক হয়েছিলো, তাঁর অনবদ্য দৈহিক শক্তি ও তুখোড় মগজ। রাজনীতিতে এটা বিরল।

ফজলুল হকের জীবনী পাঠে জানা যায়, কৈশোরে ছয় ফুটের বেশি উচ্চতা ও শারীরিক শক্তির দিক থেকে ফজলুল হক মশহুর হয়ে পড়েন। এর সাথে ছিলো বজ্রের মতো ভারী কণ্ঠস্বর। লং জাম্প, দৌঁড়, সাঁতার, লাঠিবাজী, পাঞ্জা, বৃক্ষারোহণ, কাবাডির মতো পুরুষালী খেলাধুলায় তাঁর আগে কেউ ছিলোনা। কাবাডির সময় পাঁচজন মিলেও তাঁকে ধরে রাখতে পারতো না। নারকেল গাছে উঠে তিনি অনায়াসে পাঁচ জোড়া নারকেল নিয়ে নামতে পারতেন। তিনি শখের বশে ঘুসি হাঁকিয়ে ঝুনা নারকেল ছিলতেন, আস্ত সুপারি দাঁতে চিবিয়ে ভাঙ্গতে পারতেন। একবার এক আফগানের সাথে পাঞ্জা লড়তে গিয়ে তার আঙ্গুল মচকে দিয়েছিলেন হক সাহেব।

ফজলুল হকের খাওয়াতেও ছিলো কিংবদন্তী। তিনি নিজেই নাকি স্বীকার করেছেন, হাটের সবচেয়ে বড় কাঁঠালটি তিনি একা সাবাড় করতে পারতেন। এক সঙ্গে ২০ ডাবের পানি, ৪ জগ খেজুরের রস খাওয়ার রেকর্ড ছিলো তাঁর। অবিভক্ত বাংলার প্রধানমন্ত্রীত্ব করার সময় ১৯৪৩ সালে একবার তাঁর একাদিক্রমে ৪৫ ফজলি আম সাবাড়ের কথা অনেক শুনেছি। জীবনসায়ান্হে যখন তাঁকে তরল খাবার খেতে হতো, তখন নাকি তিনি আক্ষেপ করে বলতেন, "হাতীর লাগে কলার বাগান। শুধু পানি খেলে কি সে বাঁচে!"

মেধা শক্তির দিক থেকেও হক সাহেবকে ঘিরে কিংবদন্তীর ছড়াছড়ি। শুনেছি, কোন পড়া তিনি একবারের বেশি পড়তেন না। দাবা খেলায় তিনি কোনদিন হারেননি। মাতৃভাষা ছাড়াও ইংরেজি ও ফার্সীতে তিনি নাকি পণ্ডিত ছিলেন। এতোটাই পণ্ডিত যে, আদালতে ইংরেজিতে সওয়াল জওয়াব করার সময় ইংরেজ জজেরা প্রায়ই তাঁকে থামিয়ে তাঁর বলা কঠিন কোন শব্দের মানে বুঝতে চাইতেন! অবিশ্বাস্যই বটে...!
সর্বশেষ এডিট : ২০ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ সকাল ৮:৪৩
৫টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

সৎ মানুষ দেশে নেই,ব্লগে আছে তো?

লিখেছেন শূন্য সারমর্ম, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১:৪৮








আশেপাশে সৎ মানুষ কেমন দেখা যায়? উনারা তো নাকি একা থাকে, সময় সুযোগে সৃষ্টিকর্তা নিজের কাছে তুলে নেয় যা আমাদের ডেফিনিশনে তাড়াতাড়ি চলে যাওয়া বলে। আপনি জীবনে যতগুলো বসন্ত... ...বাকিটুকু পড়ুন

গরমান্ত দুপুরের আলাপ

লিখেছেন কালো যাদুকর, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৫৯




মাঝে মাঝে মনে হয় ব্লগে কেন আসি? সোজা উত্তর- আড্ডা দেয়ার জন্য। এই যে ২০/২৫ জন ব্লগারদের নাম দেখা যাচ্ছে, অথচ একজন আরেক জনের সাথে সরাসরি কথা... ...বাকিটুকু পড়ুন

রাজীব নূর কোথায়?

লিখেছেন অধীতি, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৩:২৪

আমি ব্লগে আসার পর প্রথম যাদের মন্তব্য পাই এবং যাদেরকে ব্লগে নিয়মিত দেখি তাদের মধ্যে রাজীব নূর অন্যতম। ব্যস্ততার মধ্যে ব্লগে কম আসা হয় তাই খোঁজ-খবর জানিনা। হঠাৎ দু'একদিন ধরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বৃষ্টির জন্য নামাজ পড়তে চায়।

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৩৮



ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষার্থী গত বুধবার বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে বৃষ্টি নামানোর জন্য ইসতিসকার নামাজ পড়বে তার অনুমতি নিতে গিয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এটির অনুমতি দেয়নি, যার জন্য তারা সোশ্যাল... ...বাকিটুকু পড়ুন

=তুমি সুলতান সুলেমান-আমি হুররাম=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:৩৬



©কাজী ফাতেমা ছবি

মন প্রাসাদের রাজা তুমি, রাণী তোমার আমি
সোনার প্রাসাদ নাই বা গড়লে, প্রেমের প্রাসাদ দামী।

হও সুলেমান তুমি আমার , হুররাম আমি হবো
মন হেরেমে সংগোপনে, তুমি আমি রবো।

ছোট্ট প্রাসাদ দেবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×