(লেখাটি সেভ হিউম্যানিটি ফ্রম ওয়েস্টার্ন সায়েন্স ম্যাগাজিনে প্রফেসর ম্যাককিক গ্র্যাফিটির লেখার ভাবানুবাদ মাত্র। লেখার সাথে বিবর্তন-বিরোধের কোনো সম্পর্ক নেই। )
আমি এখন পাশ্চাত্য সভ্যতার এক অন্ধকারাচ্ছন্ন দিকের বিষয়ে আলোকপাত করব। বিজ্ঞানকে এই সভ্যতা একটি অস্ত্র হিসাবে ব্যবহার করে আমাদের সাংস্কৃতিক উপনিবেশ বানাতে চায়। আমাদের দীর্ঘদিনের সভ্যতা আজ এই সভ্যতার হাতে ক্ষতবিক্ষত। কিভাবে আমাদের সভ্যতা বিজ্ঞানের করালগ্রাসে পড়েছে তার একটা নমুনা তুলে ধরব এবার।
যেমন ধরা যাক মহাকর্ষ সূত্র। এই সূত্রের কোনো প্রমাণ নেই, আদপে সূত্র শুরুই হয় কিছু স্বতঃসিদ্ধ দিয়ে যেগুলোকে কেউ কোনোদিনও প্রশ্ন করতে পারবে না। দুটি মহাজাগতিক বস্তু একে অপরকে নাকি নিজের দিকে টেনে নেবার চেষ্টা করে। কেন করে তার কোনো উত্তর নেই। অথচ সেই অর্ধসত্যই বছরের পর বছর ধরে আমাদের স্কুলে ক্লাসে পড়ানো হয়ে চলেছে। এইভাবে আমরা আমাদের প্রাচীন ধর্মগ্রন্থে ঈশ্বরের বাণী ভুলে তারই পেছনে পড়েছি।
মহাকর্ষ সূত্র নিয়ে সংশয়ের শেষ নেই। আপেল পৃথিবীর মাটিতে পড়লে পৃথিবীরও তো আপেলের দিকে কিছুটা এগোনোর কথা – কিন্তু আমরা কি সেটা দেখতে পাই, বিজ্ঞানীরা কি সেটা মাপতে পারেন? বললে তো তারা হাস্যকর দাবী জানান, পৃথিবীর বিচ্যুতি নাকি এতই কম হয় যে তা মাপাই যায় না। শুধু তাই নয়, বলা হয় দুটো এরকম বস্তুর মধ্যে আকর্ষণ বল নাকি তাদের ভরের গুণফলের সমানুপাতিক। এও এক মজার গল্প – আসলে বল মাপার কোনো যন্ত্রই তো আবিষ্কৃত হয় নি, তাই এই ভাওতাবাজী চলবেই। তাই বল মেপে এই সূত্রকে রিফিউট করার কোনো সম্ভাবনাই নেই। এরপরে আসে এই কাল্পনিক মহাকর্ষ বল নাকি বস্তুদ্বয়ের দূরত্বের বর্গের ব্যস্তানুপাতিক। বাঃ, ভরের বেলায় সোজাসুজি, আর দূরত্বের সময় বর্গ কেন? কোন উত্তর নেই।
সবথেকে বড় জালিয়াতি তো সেই বল মাপার সময়। কি একটা ধ্রুবক দিয়ে গুণ করে বল মেপে ফেলা হচ্ছে। এর মানে কি? ইচ্ছা হলেই কি কোনো প্রাকৃতিক রাশিকে এভাবে গুণ করে ফেলা যায়? বাঃ, তাহলে তো আমিও এবার থেকে দূরত্বকে একটা ধ্রুবক দিয়ে গুণ করে বলব। আমার বাড়ি থেকে অফিস পাঁচ মাইল রাস্তা পাঁচ গজ হবে – কি মজা।
আরও বড় প্রশ্ন সময়কাল নিয়ে। আজকে দুটো বস্তু নাহয় একে অপরকে আকর্ষণ করে – কালকে তা নাও করতে পারে। আর কে দেখেছে আজ থেকে কয়েক হাজার বছর আগে যে এই বলের অস্তিত্ত্ব ছিল? শুধু তাই নয়, কয়েক বছর পরে তথাকথিত মহাকর্ষ বল দূরত্বের সমানুপাতিক হয়ে যেতে পারে, সে নিয়ে কি কেউ গবেষণা করছে?
মহাকর্ষ সূত্র একটা হাইপোথিসিস মাত্র যা দিয়ে সৌরজগতের কিছু গ্রহের আর চাঁদ-তারার অবস্থান সঠিকভাবে জানা যায় আপাতত। তাও সেই হাইপোথিসিসও সর্বজনগ্রাহ্য নয়, ইলেক্ট্রিকাল চার্জ বা ম্যাগনেটিজমের জন্যও আপাত-মহাকর্ষ প্রভাব হয়ে থাকতে পারে। কিন্তু পশ্চিমারা আমাদের এমনই অন্ধ করে রেখেছে যে আমরা ঈশ্বর-বিশ্বাস দূরে থাক, বিজ্ঞানের অলটারনেটিভগুলোও ভেবে দেখাও ভুলে গেছি।
তবে পশ্চিমাদের এই অপবিজ্ঞান আর বেশীদিন ধামাচাপা দিয়ে তারা রাখতে পারছেনা। এখন আবিষ্কৃত হয়েছে ডার্ক ম্যাটার – ঈশ্বরের নবতম সৃষ্টি। ডার্ক ম্যাটার এতদিনের বিজ্ঞানীদের সব হিসাবনিকেশ উলটে দিতে পারে। ঈশ্বর মনে হয় যেন মানুষকে শিক্ষা দেবার জন্যই এর উপস্থাপনা করেছেন। ঈশ্বরের সৃষ্ট জগতের রুলস শুধু তিনিই জানতে পারেন – তিনি সর্বশক্তিমান। শুধু তাই নয়, তিনি কিছুদিনের মধ্যেই মহাকর্ষ সূত্র পালটে ফেলে সারা পৃথিবীর মানুষকে শিক্ষা দিতে চান। আমরা যারা ঈশ্বরের মহিমায় বিশ্বাসী – তারাই কেবলমাত্র বেঁচে যাব। যারা অবিশ্বাসী তারা মহাকর্ষ সূত্র মেনে চলে এমন যন্ত্রে (যেমন স্পেশশিপ বা এরোপ্লেন) চড়তে যাবে আর ধুপধাপ পড়ে মরবে। এখনও সময় আছে আমাদের নিজেদের পথে ফেরার। এ জন্য দরকার রাষ্ট্রীয় উদ্যোগ আর ধর্মের প্রতি আস্থা ফেরানো।
সবশেষে মহাকর্ষ-বিশ্বাসীদের প্রতি একটা শেষ চ্যালেঞ্জ। পৃথিবীর কোনো জায়গায় দুটো বস্তু রেখে তাদের মধ্যে ন্যূনতম আকর্ষণ মেপে দেখাতে পারবেন কি তারা? না পারলে কে তাদের অধিকার দিয়েছে এই আজগুবি মহাকর্ষ সূত্র আমাদের ওপর চাপিয়ে দেবার?
সর্বশেষ এডিট : ০৪ ঠা মে, ২০০৯ রাত ১১:৫৯