কোনও রাষ্ট্র নিয়ে বেশি ধনাই-পানাই, নিজের দেশ বলে আত্মহারা হওয়া আমার কাছে, দেশদ্রোহিতা নয়, মানবদ্রোহিতা লাগে~আমার, আমার করা যেমন বিস্বাদ জিনিস তেমন আরকি~ঠিক এই কারনেই জন্ম নেয় হিংসা, অন্যদের কথা আর মনে থাকেনা~চালাও গুলি~মেরে ফেল।
এসব কারনেই আমি যদি বাংলাভাষা নিয়ে কথা বলতে থাকি, এমনভাবে যে, সেটা যেন বোঝা হয়ে না দাঁড়ায়~সেতু হয় ভাষা~অন্তরায় নয়।
আমি বাঙালি বলে বাংলা নিয়ে বলব তা নয়, এখানে শোষক ও শোষিতেরই গল্প। বাংলা নামে ভাষার কথা বটে কিন্তু এসব ইতিহাসের শিক্ষা, ইতিহাসের স্বপ্নভঙ্গও বটে। অঞ্চলভেদে ভাবপ্রকাশের সংকেত পাল্টেছে কেবল, ভাব-প্রকাশই ভিত্তি শর্ত, ফলে রক্তের রঙ লালই প্রকাশিত উদাহরন, উৎপ্রেক্ষা, উপমা, অভিন্ন এক এবং উপশম।
১৯ মে ১৯৬১, বাংলা ভাষার দাবীতে ১১ জন মারা যান পুলিশের গুলিতে শিলচরে। ভারতের আসামের একটি শহর। যেখানে সিলেটি-রূপ প্রাধান্য, যেটা ইতিহাসের জারজ অধ্যায়, রেফারেন্ডামে টুকরো হয়ে যাওয়া বাঙালীর ক্রীড়া অথবা ক্রীড়নক নৈপুণ্য।
আজও পথের ধারে কুকুরের পেচ্ছাপ করার আঁড়াল হয়ে শহীদবেদি দাঁড়িয়ে যত্রতত্র। আজ সকালের বাসী ফুল ও শব্দ প্রাবল্য। যে রেলস্টেশনটি মানুষের মাংস ও রক্ত শুঁকে লিখে রাখে বাংলায় বানান, সেটি ভাসা শহিদ স্টেশন নয়, ইন্দিরা গান্ধী আন্তর্জাতিক এরাপোর্ট থেকে সরাসরি এখনও উড়ে আসা যায় না ঐ শহরে।
রেলওয়ে বোর্ডের চেয়ারম্যান ভাষা শহীদ এক্সপ্রেস সপক্ষে ভেটো দেন, ফিতা কাটা হয়, শিলচর-আগরতলা ইন্টারসিটি মেইল, ঝিকঝিক করে ১৯৪৭ থেকে ২০০৮ সনে উত্তর-পূর্ব ভারতের কোনও রাজ্যের রাজধানীতে প্রথমবারের মত ঢুকে পড়ে হুইসেল বাজিয়ে, নারকেল ফাটিয়ে, হাতনাড়া দেখতে দেখতে। পরদিন যায় ঐ ট্রেন আবার, কাউন্টার বলে দেয়, টিকিট ছাপানো চলছে।
একাদশ ভাষা শহীদের পরিবারেরা কোথায় থাকেন? কেউ জানেন?
২১ জুলাই ১৯৮৬, বাংলা-বাংলা বলে মাত্র দুইজন শিলচরের কাছে করিমগঞ্জে পুলিশের গুলিতে ..........মাত্র দুইজন।
১৪ মার্চ, ১৯৯৬, এবার সংখ্যায় আরও কম, মাত্র একজন, করিমগঞ্জের পাথারকান্দিতে রেলস্টেশনে...........বিষ্ণুপ্রিয়া মনিপুরি ভাষা।
কেন গুলি? রেল অবরোধ, পরিষেবা বিঘ্নিত, জনগন ভুগছে, পাব্লিক অ্যাসেট.............
বছরে ৮/৯ মাস, ত্রিপুরায় ট্রেন ঢোকে না, চাল, কেরোসিন, লবন ঢোকে না...ট্রাক ঢোকে......এত পরিশ্রমের দাম মেটায় জনগন।
আসামের নিজেরই একটা বড় অংশ এই ট্রেন না ঢোকায় বন্ধকী থাকে, মিজোরাম, আরেকটা রাজ্য, তারা কেন নিজেদের ভাববে আমাদেরই লোক?
সালাম, বরকত, জাব্বার............................. কমলা ভট্টাচার্য,শচীন্দ্র পাল, বীরেন্দ্র সূত্রধর, কানাই লাল নিয়োগি, চন্ডীচরন সূত্রধর, সত্যেন্দ্র দেব, হিতেশ বিশ্বাস, কুমুদ রঞ্জন দাস, তরনী দেবনাথ, সুনীল সরকার,
সুকুমার পুরকায়স্থ~জগন্ময় দেব, দিব্যেন্দু দাস এবং সুদেষ্ণা সিংহ।
এই নামগুলো চলুন ভাল করে পড়ি। কেউ এদিক থেকে ওদিকে, কেউ ওদিক থেকে এদিকে বা এদিকে থেকে ওদিকে মানা।
আবার দেখুন, এদিকে থেকে অন্য একদিকে সমর্থন, সেই সমর্থন নেওয়া পক্ষের উচ্ছেদ অভিযান।
তালগোল থেকে কী বলা, বলা এইযে শোষিতের জাত, ভাষা এক হচ্ছে না
বলেই ভাষাশহিদ নিয়ে আমাদের মায়া কান্না এখনও জারি।
রাজনীতি বুঝি না, রাজনীতি ভাল না, এরাই সব শেষ করে দিচ্ছে, এই আলাপও এবার শেষ হোক, এর জন্য শহীদ কে হবেন?
সুশীল শহীদ কিছু হয় না।