[পূর্বকথা - যুধিষ্ঠির কৃষ্ণের অনুমতি নিয়ে রাজসূয় যজ্ঞের আয়োজন করেন ....... মুনিরা হোম যজ্ঞের আয়োজন শুরু করেন......দেবগণকে নিমন্ত্রণ করতে অর্জ্জুন যাত্রা করেন ...বাসুকি নাগকে নিমন্ত্রণে পাতালে পার্থ যাত্রা করেন... বাসুকিকে যজ্ঞস্থানে যেতে দেওয়ার জন্য পার্থ গান্ডীবে ক্ষিতিকে ধারণ করলেন...দ্রুপদ ও অন্যান্য গণ্যমান্য রাজারা আসতে লাগলেন... ভীমপুত্র ঘটোৎকচ মা হিড়িম্বাকে নিয়ে এলেন..... ]
দক্ষিণ ও পূর্ব দ্বারে বিভীষণের অপমানঃ
লঙ্কেশ্বর বিভীষণ
পার্থের মুখে কৃষ্ণের বার্তা পেয়ে লঙ্কার রাক্ষস ঈশ্বর বিভীষণ আনন্দে রোমাঞ্চিত হলেন।
তিনি সারাক্ষণ মুনিদের কথা স্মরণ করেন –বসুদেবের গৃহে স্বয়ং নারায়ণ জন্মগ্রহণ করেছেন। নিরন্তর যাকে দেখার জন্য মন ব্যকুল তিনি স্বয়ং দয়া করে ডেকে পাঠালেন। সর্বতত্ত্ব অন্তর্যামী ভক্তবৎসল প্রভু অনুগত জনকে মনোগত ফল প্রদান করেন। আমিও যে তার ভক্ত প্রভু সে কথা বুঝেই আমাকে তিনি স্মরণ করেছেন। এই ভেবে বিভীষণ আপ্লুত হলেন।
হৃষ্টচিত্তে তিনি তার সুহৃদজনদের ডেকে বলেন –শীঘ্র নিজ পরিবার নিয়ে প্রস্তুত হও। আমরা সবাই কৃষ্ণের দর্শনে যাব। আমার ভাণ্ডারে যত ধনরত্ন আছে সব নিয়ে নাও। সব কিছু আমি দেব দামোদরকে দান করব। নিজের চর্মচক্ষে আমি কমললোচনকে দর্শন করে জন্মাবধি কৃত পাপ থেকে মুক্ত হব।
এই বলে লঙ্কেশ্বর বিভীষণ প্রস্তুত হয়ে রথে আরোহণ করলেন। তার সাথে লক্ষ লক্ষ নিশাচরেরা চলল। সঙ্গে বিবিধ বাদ্য রাক্ষসী বাজনা বাজিয়ে শত শত শ্বেতছত্র দুলিয়ে অনুচরেরা চলল।
তারা ইন্দ্রপ্রস্থের দক্ষিণ দ্বারে এসে উপস্থিত হল। চারদিক রাক্ষসের ভীড়ে ভর্তি হয়ে গেল। বিকৃত আকারের নিশাচরদের দেখে সকলে বিস্মিত ও ভীত হল। তাদের দুই তিনটি করে মুখ, কেউবা অশ্বমুখের, বক্র দন্ত , চোখ নাকের স্থানে গভীর গর্ত।
এদিকে বিভীষণ রথ থেকে নেমে যজ্ঞস্থান দর্শন করতে চললেন। কিন্তু চারদিকে এত মানুষের ভীড়! উচু, নিচু, জল, স্থল সবই লোকারণ্য। কোথাও একপদের মানুষের ভীড়, কোথাওবা দীর্ঘকর্ণের দল। কোথাও আবার বিবর্ণবদন মানুষের জটলা। কোথাও কিরাত ম্লেচ্ছদের ভীড়। কৃষ্ণ অঙ্গ তাম্রকেশ।
কোথাও দেবতারা দৈত্যদের সাথে ক্রীড়ামত্ত। এভাবে চারদিকে চারদিকে সুর-অসুররা একসাথে ঘুরে বেড়াচ্ছে।
সিদ্ধ, সাধ্য, ঋষি, যোগী, প্রচুর ব্রাহ্মণও সেই সাথে আছেন। আবার বিবিধ বাহনে যমদূতরাও ঘুরছে।
কোটি কোটি অশ্ব, হস্তী, রথ, পদাতিক দাঁড়িয়ে।
পথেঘাটে অবিরাম নৃত্যগীত চলছে। সব দেখে শুনে বিভীষণ ভাবেন –এমন অদ্ভূত ব্যাপার তো কখনও চোখে দেখিনি! যে দেব দানব পরস্পরের সর্বদা শত্রু, তারাই এখানে একসাথে খেলছে।
যে ফণী আর গরুড়ের কখনও দেখা হয় না, তারা এমন ভাবে খেলায় মত্ত যেন তারা পূর্বসখা।
রাক্ষসরা জানতাম মানুষ পেলেই খেতে যায়। কিন্তু এখানে সব নিশাচররা আনন্দে মানুষের আজ্ঞা পালন করছে।
সব দেখে শুনে অবাক হয়ে রাজা মুখে হাত দিয়ে ভাবেন –এসবই শ্রীনাথ প্রভুর মায়া। স্বর্গ, মর্ত, পাতালবাসীদের এভাবে একসাথে দেখে নয়ন স্বার্থক হল। এখানে দেখছি কোন ভেদাভেদ নেই। সবাই একসাথে আনন্দে ভোজন করছে।
এসব দেখে অভিভূত বিভীষণ রথে পরিবারদের রেখে পদব্রজে ভীড় ঠেলে এগতে লাগলেন। কিন্তু এত মানুষের ভীড়, পিঁপড়ের নড়ার স্থান নেই। কতদুরে দ্বার দেখাও যায় না। বহু কষ্টে সেখানে গিয়ে দেখেন রাজারা সব পাহাড়ের মত দাঁড়িয়ে। দ্বারীরা দুইধার থেকে ভীড়কে বাড়ি মারছে, তবু মানুষরা দুই হাতযুড়ে ভিতরে প্রবেশের জন্য অপেক্ষা করছে। পথ না পেয়ে বিভীষণ একস্থানে দাঁড়িয়ে গেলেন।
অন্তর্যামী নারায়ণ সব দেখলেন। কে আসছে, কে খাচ্ছে, কে কি পাচ্ছে না সকল দিকেই তার দৃষ্টি। প্রতিজনকে তিনি মিষ্টি হেসে কুশল বিনিময় করেন।
দূর থেকেই রাক্ষস অধিপতি তাকে দেখে অষ্টাঙ্গে লুটিয়ে করযোড়ে প্রভুর স্তুতি করতে থাকেন, দুই চোখে তার অবিরাম বারিধারা ঝরে। দিব্যচক্ষে লক্ষ্মীপতি সব জানতে পারলেন। নারায়ণ দ্রুত তার কাছে এসে দুইহাতে তাকে তুলে ধরে প্রীতি আলিঙ্গন করেন। আনন্দে বিভীষণ তখন কাঁদতে থাকেন। তিনি নানা রত্ন কৃষ্ণের চরণে নিবেদন করতে থাকেন।
করযোড়ে বলেন –আজ্ঞা করুন জগন্নাথ আমি এখানে কি কাজ করতে পারি।
গোবিন্দ বলেন –মহারাজ যে উদ্দেশ্যে আসা, চলুন আগে ধর্মরাজের সাথে দেখা করবেন।
বিভীষণ বলেন –আপনাকে দর্শন করেই আমার এখানে আসা সার্থক হল। এখন আপনি যা আজ্ঞা করেন।
গোবিন্দ বলেন –হে রাজন! যে ঠাকুর আপনার কাছে দূত পাঠিয়ে নিমন্ত্রণ করেন, যাকে আপনিও আগে অনেক ভেট পাঠালেন, চলুন তার দর্শন করবেন।
বিভীষণ বলেন –দূত বলেছিল পাণ্ডবদের যজ্ঞে নারায়ণ অধিষ্ঠান করছেন। তাকে কর না দিলে গোবিন্দের দ্রোহ করা হয়। তাই আপনার কথা ভেবেই আমি সে সব পাঠাই। আপনার অদর্শনে আমি চির অপরাধী ছিলাম। আপনি ডেকে পাঠিয়েছেন, আমি তাতেই ধন্য। আপনি বিশ্বের প্রভু। আপনার উপর কোন ঠাকুর আছেন, আমি মানি না। তাই আমি তার দর্শনও চাই না। কেবল আপনার সঙ্গ প্রার্থনা করি।
গোবিন্দ বলেন –ধর্মপুত্র যুধিষ্ঠির, এনার দর্শনে শরীর নিষ্পাপ হয়। ইনি সত্যবাদী, জিতেন্দ্রিয়, সর্বগুণের আধার-সে জন্য তিনভুবন খ্যাত। তার প্রতাপ দেখে ইন্দ্রাদি দেবতারা কর দিলেন। ফণীন্দ্র তাকে কর দিয়ে শরণ নিলেন।
উত্তরে উত্তরকুরু, পূর্বে জলনিধি, পশ্চিমে আমি কৃষ্ণ এবং দক্ষিণে আপনি ও অন্যান্য রাজারা তাকে কর দিয়েছি। কেউ তাকে কর দেয়নি, বা আসেনি-এমন দৃষ্টান্ত নেই।
এবার চলুন আপনিও তার সাক্ষাৎ করবেন। দেবতা, গন্ধর্ব, যক্ষ, রক্ষ, কপি(বানর), ফণী, মানুষ যত অবনীতে আছে সকলে এখানে এসেছে।
অষ্টাশী সহস্র দ্বিজ নিত্য এখানে গৃহে ভোজন করছে। ত্রিশজন করে দাস প্রতিজনকে সেবা করে। ঊর্দধরেতা(জিতেন্দ্রিয়) সহস্র দশেক সদা সেবা করে।
অবিরাম স্থানে স্থানে রন্ধনাদি হচ্ছে। এক এক স্থানে লক্ষ লক্ষ বিপ্ররা ভোজন করছে। সেই এক ভোজনকালে একবার শঙ্খনাদ হয়। এভাবে সারাদিন শঙ্খনাদ চলছে।
তিন পদ্ম(এক হাজার বিলিয়ন/১০০০০০০০০০০০০০) অযুত(দশ সহস্র) মাতঙ্গ(ঘোড়া)-দীর্ঘদন্ত(হাতি), তিন পদ্মযুত রথ এই যজ্ঞভূমে দাঁড়িয়ে আছে। লক্ষ রাজার কত যে পত্তি(পদাতিক সৈন্য) কে তার গণনা করে।
পৃথিবীর চার জাতের মানুষ যত আছে সবাই এখানে উপস্থিত। অর্ধেক রান্না করছে, অর্ধেক সেই আমান্ন(অপক্ক অন্ন) ভোজন করছে পরম আনন্দে।
চারদিকে কেবল ‘খাও, খাও’, ‘লও, লও’ ধ্বনি।
মনু আদি পৃথিবীর শক্তিশালী রাজারাও এমন আয়োজন করতে পারতেন না।
যতদুর পর্যন্ত প্রাণীর বাদ, ততদুর পর্যন্ত সবাই একবাক্যে ধর্মপুত্র যুধিষ্ঠিরকে আজ চেনে। তার নিষ্পাপ দর্শনে সুমতি হয়। তার প্রণাম আমার কাছে পরম গতির সমান। এমন মানুষের সাথে আপনার পরিচয় নেই জেনে কষ্ট পাচ্ছি।
চলুন শীঘ্র তার সাথে আপনার আলাপ করাই।
বিভীষণ বলেন –প্রভু আপনার কথা অবশ্যই সঠিক হবে। তবে আমারও কিছু নিবেদন আছে।পূর্বে পিতামহের(ব্রহ্মার মানস পুত্র পুলস্ত) কাছে শুনেছিলাম অনন্ত ব্রহ্মান্ডের আপনিই স্বামী। ব্রহ্মাদি দেবতারা আপনাকেই স্মরণ করেন। আপনার কোন কর্মই অসাধ্য নয়। আপনিও আমার পূর্ব বিবরণ সব জানেন, গদাধর! আমি তপস্যা করে বর পেয়েছি কেবল আপনার সেবাই করব, কেবল আপনার সামনে মাথা নত করব, আপনাকেই স্মরণ করব। আপনার কাছে ছাড়া আর কাউকে বশ্যতা দেখাতে পারব না। আপনি যেখানে নিয়ে যাবেন যাব, কিন্তু সম্মান দেখাতে পারব না।
এই বলে বিভীষণ শ্রীপতি কৃষ্ণের পিছন পিছন চললেন। গোবিন্দকে দেখে সকলে পথ ছেড়ে দেয়। নারায়ণ দ্বারে এসে উপস্থিত হলেন। তিনি অনায়াসে প্রবেশানুমতি পেলেন কিন্তু সাত্যকি বিভীষণকে রোধ করেন।
গোবিন্দ বলেন –সাত্যকি, এনাকে বাঁধা দিও না। ইনি লঙ্কেশ্বর, যুধিষ্ঠিরের সাথে দেখা করে শীঘ্র স্বদেশ প্রত্যাবর্তন করবেন।
সাত্যকি জোড়হাতে বলেন –প্রভু, আপনি জানেন এখানে অনুমতি বিনা বজ্রপাণি ইন্দ্রও প্রবেশ করতে পারেন না। দেখুন জগন্নাথ! সকল রাজরাজেশ্বর প্রবেশানুমতির অপেক্ষায় আছেন।
মৎসাধিপতি, বিরাট নৃপতি, শূরসেন, করুষরাজ দন্তবক্র, সুমিত্র প্রমুখ রাজারা যাদের অগণিত সৈন্য ও ধনের অন্ত নেই তারাও মাসাধিক দ্বারে অপেক্ষায় আছেন।
শ্রেণিমন্ত সুকুমার নীলধ্বজ রাজা, একপদ কলিঙ্গ নৈষধ মহাতেজা, কিষ্কিন্ধ্যার রাজা সিন্ধুকুলবাসী গোশৃঙ্গ ভ্রমণ আর রুক্মি তন্তুদেশী-এদের সবার সাথে পাঁচশ সৈন্য, কোটি কোটি গজ, বাজি, রথ, নানা ধনরত্ন, এমনকি পরিবার নিয়ে অপেক্ষমান।
এমন ত্রিশ সহস্র নৃপতিরা আগে থেকেই দ্বারে দন্ডায়মান, তাদের বঞ্চিত করি কি করে!
কয়েকজন নৃপতি মাত্র প্রবেশানুমতি পেয়ে এই রাজ দর্শনে গেছেন।
পাণ্ডবদের মামা পুরুজিৎ দুদিন অপেক্ষার পর নকুল অনুমতি নিয়ে প্রবেশ করালেন।
সাথে আরো কয়জন রাজা যেতে গেলেন। তাই দেখে বৃকোদর ভীম রেগে তাদের তাড়িয়ে দেন।
আজ্ঞা ছাড়া এখানে কারো প্রবেশ নিষেধ। আপনি দয়া করে রাজাজ্ঞা নিয়ে এসে বিভীষণকে নিয়ে যান, প্রভু!
একথা শুনে কৃষ্ণ রেগে গেলেন। অপমানিত বোধ করে তিনি বিভীষণকে নিয়ে পূর্বদ্বারে উপস্থিত হলেন।
হিড়িম্বাকুমার মহাবীর ঘটোৎকচ সেখানে তিন লক্ষ রাক্ষসদের নিয়ে পাহারা দিচ্ছে। কৃষ্ণকে সকলে পথ ছাড়ে, কিন্তু বিভীষণকে রোধ করে।
গোবিন্দ বলেন –ইনি লঙ্কার ঈশ্বর। ব্রহ্মার প্রপৌত্র, রাবণের সহোদর –বিভীষণ মহারাজ। এনার একটু তাড়া আছে তাই রাজার কাছে নিয়ে যাচ্ছি। এনার পথ রোধ করোনা।
ঘটোৎকচ জোড়হাতে বলে –হে চক্রপাণি, এখনও বাইশ সহস্র রাজারা দ্বারে অপেক্ষা করছেন। কয়েকজন মাত্র ভিতরে গেছেন।
ব্রহ্মার আরো অনেক প্রপৌত্র দেবতারাও দুই তিন মাস ধরে দ্বারে অপেক্ষায় আছে।
ব্রহ্মার প্রপৌত্র কশ্যপের সন্তান সকল মহান নাগদের নিয়ে শেষ বিষধর নাগ বাসুকি এই দ্বারে তিন চারদিন আগেও দাঁড়িয়ে থাকতেন। দেখুন সব রাজারা বুকে হাত যোড় করে এক দৃষ্টে অপেক্ষায় রত।
গিরিব্রজের মহাতেজা সুরপতি জরাসন্ধের পুত্র সহদেব, কেকয়রাজ জয়সেন-যিনি আপনার পিসি রাধাদেবীর স্বামী এঁনারা বহুদিন ধরে অপেক্ষায় আছেন।
এনারা কোটি কোটি রথ, মত্ত হাতি, ষাট কোটি তুরঙ্গম(ঘোড়া) ও অসংখ্য পদাতিক সৈন্য নিয়ে ধৈয্য ধরে দাঁড়িয়ে আছেন। সকলেই হস্তিনী, গর্দভ, উটের গাড়িতে অজস্র ধনরত্ন এনেছেন। অহর্নিশি নৌকায় করে তারা অবিশ্রাম যজ্ঞের দান আনছেন। এই বিশ সহস্র রাজাদের কিভাবে বঞ্চিত করি!
দেখুন চেদিরাজ শিশুপাল যার সাথে পঞ্চশত নৃপ আছেন, এছাড়া তিন কোটি হাতি, সাথে তিন কোটি রথ, নয় কোটি আসোয়ার(হাতি, ঘোড়ায় সওয়ার সৈন্য), নানা যানে নানা রত্ন নিয়ে দ্বারে দাঁড়িয়ে আছেন।
দেখুন অযোধ্যার রাজা দীর্ঘযজ্ঞ তিন কোটি রথ সঙ্গে তিন কোটি হাতি ও সাতশ নরপতিদের সাথে করজোড়ে বারিত(প্রার্থিত) হয়েছেন। কাশীরাজ, কোশলরাজ বৃহদ্বল, মদ্রসেন, চন্দ্রসেন, সুবর্ণ, সুমিত্র, সুমুখ, শম্বুক, মণিমন্ত, দন্তধর প্রমুখ রাজারা নিজ নিজ দেশের ধনরত্ন নিয়ে কর দেওয়ার জন্য দন্ডায়মান।
যারা চঞ্চল হন তাদের কথা ধর্মরাজের কাছে জানান হয়। যদি তার আজ্ঞা মেলে তবে মুহূর্তের জন্য দর্শন মেলে।
এমনকি রাজার শ্বশুড় দ্রুপদরাজকেও পরিজনদের নিয়ে এখানে বহুদিন অপেক্ষা করতে হয়। শেষে অনুমতি মেলে।
তখন সাথে আরো কিছু রাজা প্রবেশ করে যান। তা দেখে আমার পিতা ভীমসেন প্রচন্ড রেগে যান। তিনি বারবার বলে গেছেন বিনা অনুমতিতে কাউকে প্রবেশ করান যাবে না।
আমার পূর্বে এই দ্বারে ইন্দ্রসেন দ্বারী চিলেন। সেই অপরাধে তাকে দূর করে আমাকে রাখা হয়েছে। আমি প্রতিজ্ঞাবদ্ধ ইন্দ্র এলেও তাকে বিনা অনুমতিতে প্রবেশ করতে দেব না।
তাই প্রভু জগন্নাথ, ভয় লাগছে বিনা অজ্ঞায় কিভাবে বিভীষণকে পথ ছাড়ি!
আপনি দয়া করে রাজাজ্ঞা নিয়ে আসুন, প্রভু! আমায় রক্ষা করুন! অথবা দয়া করে অপেক্ষা করুন, নকুল বা সহদেব এলেই তাদের মাধ্যমে বার্তা পাঠাই। অথবা আপনি অন্য দ্বার দিয়েও প্রবেশের চেষ্টা করতে পারেন। এবার আপনি বিচার করে দেখুন।
এত কথা শুনে কৃষ্ণ ঘটোৎকচকে অনেক তিরস্কার করে উত্তর দুয়ারের দিকে চললেন।
মহাভারতের কথা অমৃত সমান, কাশীরাম দাস কহেন, শুনেন পুণ্যবান।
......................................
উৎসর্গ: সকল ব্লগার বন্ধুকে
.....................................
আগের পর্ব:
কথাচ্ছলে মহাভারত - ১৩৭ Click This Link
সর্বশেষ এডিট : ১২ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ দুপুর ১:৩৬