গতবছর এইএসসি পরীক্ষার পর একটা প্রাইভেট ইউনিভার্সিটির বিজ্ঞাপন দেখে অবাক হয়েছিলাম। মনে হয়েছিলো কোনো ডেভেলপার কোম্পানীর রং ঢং মাখা বিজ্ঞাপন। একটা বিশ্ববিদ্যালের বিজ্ঞাপন কিভাবে এমন হতে পারে, সেটা মাথায় আসছিলো না কোনো মতে। তাদের কাছে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার মূল লক্ষ্যই যেন ডিগ্রী শেষ করে একটা চাকুরী।
গতবছরের বিজ্ঞাপনে তারা মনে হচ্ছে ভালোই সাফল্য পেয়েছে, তাই তারা এইবার কেজিদরে ছাত্র কিনা নিয়ে বিজ্ঞাপন বানিয়েছে। এই বিজ্ঞাপনে দেখানো হচ্ছে, কিন্ডারগার্টেনের মতো শিক্ষক মাথায় হাত বুলিয়ে ছাত্রকে পড়া বুঝিয়ে দিচ্ছে। আসলেই কি এমন কোনো বিশ্ববিদ্যালয় আছে কি?
বিশ্ববিদ্যালয় হচ্ছে মুক্তজ্ঞান চর্চার একটা প্ল্যাটফর্ম। শিক্ষকরা ছাত্রছাত্রীদের মাঝে পড়ালেখার আগ্রহ সৃষ্টি করবে, ছাত্ররা নিজের আগ্রহেই পড়ালেখা করবে। বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকরা পড়ার জন্য গাইড লাইন দিয়ে দিবে, কিন্তু কোনোভাবেই মাথাই হাত বুলিয়ে পড়ানোর স্হান নয় বিশ্ববিদ্যালয়।
একটা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিচয় হওয়া উচিত তার গবেষণা, শিক্ষারমান, শিক্ষকদের যোগ্যতা উপর। সেই সাথে নির্ভর করে তারা কোন ধরণের ছেলেমেয়েদের পাঠদান করাচ্ছে। এখন যেই অবস্হা দাড়িয়েছে, যদুমধু যেই হোক, টাকা থাকলে যে কেউ বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে পারে।
কেজিদরে ছাত্র ভর্তি না করে একটা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্যও কিছু নূন্যতম যোগ্যতা থাকা উচিত। সবাইকে যদি ডিগ্রী দিয়ে দেওয়া হয়, তবে দেশে শুধু বেকার ডিগ্রীধারীর সংখ্যাই বাড়বে।গুণগত কোনো পরিবর্তন হবে না।
ব্লগেও দেখি অনেককে, কোন প্রাইভেট ইউনিভার্সিটিতে পড়তে খরচ কম হবে, সেটা জানতে চেয়ে পোস্ট দেন। কিন্তু একটা জিনিস মনে রাখা দরকার, সবাই যদি এমবিএ ডিগ্রীধারী হয়, তবে অফিসের পিয়ন, রিসিপশনিস্টের জন্যও আর কয়দিন পর এমবিএ ডিগ্রীওয়ালা প্রার্থী চাইবে চাকুরীদাতারা।
সর্বশেষ এডিট : ১৪ ই সেপ্টেম্বর, ২০১২ বিকাল ৩:২৫