somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

তাহলে আগের পর্বের তৃতীয় কিস্তির পূর্বে একটি রম্যই হোক

২৮ শে জুলাই, ২০০৯ রাত ৮:২২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

মতলব মিঞা আর গালিও দিতে পারে না। গালি দিতে দিতে তার মুখে ঘা হয়ে গেছে। প্যারাসিটামল তো কাজ করেই না, সাম্প্রতিক এন্টিবায়োটিকও ফেইল মেরেছে। মতলব মিঞা এখন দমবন্ধ অবস্থায় চার পায়ার-কেদারায় বসে কেবল হাসফাস করে।
এও ঠিক গালি যেখানে শেষ, সেখানে হাতও উঠে আসতে পারে, এর জন্যই সাম্প্রতিক সে লাঠিয়ালকবি পোষতে শুরু করেছে। চামচা তো নয়, একেবারে মস্ত-বড় ভাড়। ভাড়গুলো আবার সুযোগ বুঝে মুখ লুকিয়ে থাকে, সঙ্গে থাকে তো থাকে না। হুঙ্কার আর গর্জন দিয়ে কিছু জল গোলা করে গা ঢাকা দেয়। মতলব মিঞা এদের শক্তি সম্পর্কে পুরোদমে ওয়াকিবহাল রয়েছে। কিন্তু তার নিজের যে সমস্যা, নিজের থেকে তুলনামূলকভাবে কিছু কম প্রতিভাসম্পন্ন জীব-বন্ধু না হলে সে অচল হয়ে পড়ে। এদের দিয়ে আবার কাজের কাজ কিছুই হয় না, লাফালাফি ছাড়া। নাহলে এতোটা কুরুক্ষেত্র হয়ে গেলো এদের টিকিটিই মিলেনি। কেবলই নিজেই নিজের ঢোল বাজিয়ে এতো ক্লান্তি লাগে যে, এখন এতেও কিছুটা ঘেন্না ধরতে শুরু করেছে তার। কে যেন বলেছিল, পুরুষ মানুষের পা শোকাতে থাকে (উরুর সন্ধিস্থল থেকে হাটুর নীচ পর্যন্ত) মগজের ক্ষমতা ক্ষুন্ন হবার প্রাক্কালে। মতলব মিঞা এখন কী করবে? একটা কাটাওয়ালা বিছা সারাক্ষণ শিড়দাড়া মাড়িয়ে গেলে, সে ষাঁঢ়ের-মনোবৃত্তি নিয়ে তেজি হয়ে উঠে। আর তখনই রাগের কষগুলো মেজেতে টপ টপ করে পড়তে থাকে। গোপালভাড়–গুলো ঠিক সময়েই দু’হাত বিছিয়ে দিয়ে বলতে থাকে -
: হে আমাদের চিন্তক, খামখাই নাখোশ হয়েছেন। আপনি নাখোশ হলে, আপনার মগজ থেকে সমস্ত চিন্তা গলে গলে পড়তে থাকে। এভাবে যে আপনি ক্ষয় হয়ে যাবেন।
: আমাকে ক্ষয় হতে দাও বৎস। ইহা ক্ষয় নয়, আত্মবিধ্বংসীর কাল।
: আপনি আরো বলুন।
: কী বলবো মুর্খের দল।
: আপনি আরো বলুন।
: মুর্খ।
: বলুন।
: মুর্খ।
: বলতে থাকুন।
: আর পারি না। আমার ঘায়ে ব্যথা লাগে।
: তবু আপনি বলতে থাকুন।
: এ তো দেখছি আমাকে মেরে ফেলার চক্রান্ত?
: তা হলে নিস্তব্ধ থাকুন।
: এও আমাকে স্তব্ধ করার উকালতি।
: তাহলে আমরা কী করবো?
: তোমরা লাল পিপড়ার দলে মিশে যাও।
: লাল কেন?
: লাল হলো বিপ্লবের প্রতীক। বুঝ না, লাল দেখলেই মৌলবাদীরা খেপে যায়। কিছুই লাগবে না, কেবল লাল রঙ ছিটাও। আরো বুঝতে চেষ্টা করো, একদিকে মৌলবাদ অন্যদিকে চরমপন্থা। কোনটা বেছে নেবে। মাঝখানে হলো মুর্খের দল। আপোষকামির দল। ওরা বামেরও খায় ডানেরও খায়।
: হক কথা বলেছেন। তাহলে কী আমরা চরমপন্থী সর্বহারার লালঝাণ্ডা উড়াবো?
: উড়াতে থাকো, যতক্ষণ ঐ বুর্জোয়া কবি রবীন্দ্রনাথ, জীবনানন্দের অনুসারীরা নিপাত না যাবে।
: মাত্র দুজন ওদের নেতা।
: হ্যা, ঐ দু’জনই সমগ্র বাংলা সাহিত্যকে গ্রাস করে ফেলেছে। এ জন্যই তো আমার ঘুম হয় না। ঐ দীর্ঘ আলখেল্লার ভেতর থেকে বুড়ো রবীন্দ্রনাথ সব সময় ভয় দেখায়। আর মুদির দোকানের মহাজনের মতো চেহারা নিয়ে জীবনানন্দ এমন বিমর্ষভাবে তাকায়, মনে হয় তার ঠাণ্ডা ঠাণ্ডা কবিতা দিয়ে এখনই সব আগুন সে নিভিয়ে দেবে।
তমলব মিঞা হাতড়ে খোঁজতে থাকে পানীয়গ্লাশ। কে একজন ভুল করে পিতলের গ্লাশে জল ঢেলে রেখে ছিল। তাই গলদঃকরণ করলে তার মাথা বিগড়ে যায়। জলে অনব্যস্ত মতলব মিঞা চিৎকার করে। কেউ থামাতে পারে না। সেই থেকে সে চিক্কুর দিয়েই চলেছে ...।

তাহলে আরো কিছু চিল্লাচিল্লি হোক।

চলবে ...
সর্বশেষ এডিট : ৩০ শে জুলাই, ২০০৯ সকাল ১১:২৫
২৪টি মন্তব্য ২৪টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

জামাত কি দেশটাকে আবার পূর্ব পাকিস্তান বানাতে চায়? পারবে?

লিখেছেন ঋণাত্মক শূণ্য, ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৭:২৮

অন্য যে কোন সময়ে জামাতকে নিয়ে মানুষ যতটা চিন্তিত ছিলো, বর্তমানে তার থেকে অনেক বেশী চিন্তিত বলেই মনে করি।



১৯৭১ এ জামাতের যে অবস্থান, তা নিঃসন্দেহে বাংলাদেশের অস্তিত্বের বিরুদ্ধে... ...বাকিটুকু পড়ুন

১৯৭১ সালে পাক ভারত যুদ্ধে ভারত বিজয়ী!

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৯


দীর্ঘ ২৫ বছরের নানা লাঞ্ছনা গঞ্জনা বঞ্চনা সহ্য করে যখন পাকিস্তানের বিরুদ্ধে বীর বাঙালী অস্ত্র হাতে তুলে নিয়ে বীরবিক্রমে যুদ্ধ করে দেশ প্রায় স্বাধীন করে ফেলবে এমন সময় বাংলাদেশী ভারতীয়... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইন্দিরা গান্ধীর চোখে মুক্তিযুদ্ধ ও বাংলাদেশ-ভারত-পাকিস্তান সম্পর্ক: ওরিয়ানা ফলাচির সাক্ষাৎকার

লিখেছেন শ্রাবণধারা, ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১১:৫৫


১৯৭২ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে ইতালীয় সাংবাদিক ওরিয়ানা ফলাচি ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর সাক্ষাৎকার নেন। এই সাক্ষাৎকারে মুক্তিযুদ্ধ, শরনার্থী সমস্যা, ভারত-পাকিস্তান সম্পর্ক, আমেরিকার সাম্রাজ্যবাদী পররাষ্ট্রনীতি এবং পাকিস্তানে তাদের সামরিক... ...বাকিটুকু পড়ুন

=যাচ্ছি হেঁটে, সঙ্গে যাবি?=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সন্ধ্যা ৭:০৬


যাচ্ছি হেঁটে দূরের বনে
তুই কি আমার সঙ্গি হবি?
পাশাপাশি হেঁটে কি তুই
দুঃখ সুখের কথা ক'বি?

যাচ্ছি একা অন্য কোথাও,
যেখানটাতে সবুজ আলো
এই শহরে পেরেশানি
আর লাগে না আমার ভালো!

যাবি কি তুই সঙ্গে আমার
যেথায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

আগামী নির্বাচন কি জাতিকে সাহায্য করবে, নাকি আরো বিপদের দিকে ঠেলে দিবে?

লিখেছেন জেন একাত্তর, ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৮:১২



আগামী নির্বচন জাতিকে আরো কমপ্লেক্স সমস্যার মাঝে ঠেলে দিবে; জাতির সমস্যাগুলো কঠিন থেকে কঠিনতর হবে। এই নির্বাচনটা মুলত করা হচ্ছে আমেরিকান দুতাবাসের প্রয়োজনে, আমাদের দেশের কি হবে, সেটা... ...বাকিটুকু পড়ুন

×