"লাওলাকা লামা খালাকতুল আফলাক।"
অর্থাৎ "(হে হাবিব!) আমি আপনাকে সৃষ্টি না করলে কোন কিছুই সৃষ্টি করতাম না।"
(সিররুল-আসসার, পৃষ্ঠা-৭০)
**কু-পথে ধাবমান মানুষকে তাওয়াজ্জোহ প্রদানের মাধ্যমে আল্লাহর দিকে আকৃষ্ট করার জন্য যুগে যুগে নবী-রাসূলগণ প্রেরিত হয়েছেন। দেহাকৃতিতে তাঁরা সাধারণ মানুষের মত হলেও আত্মার দিক দিয়ে তাঁরা ছিলেন সম্পূর্ণ ভিন্ন। আপন আত্মা থেকে অন্যের কলুষিত আত্মাকে তাওয়াজ্জোহ প্রদানের মাধ্যমে তাঁরা হেদায়েত করার জন্য ক্ষমতাবান ছিলেন। এই ধারাকে অব্যাহত রেখে সর্বশ্রেষ্ঠ নবী হিসেবে সর্বশেষে প্রেরিত হয়েছেন, হযরত রাসূল (সঃ) তিনি আল্লাহর জাতের নূরের অংশ এবং তাঁর নূর হতে সমগ্র জগত সৃষ্টি হয়েছে। তাঁর পরিচয় সম্পর্কে আল্লাহ স্বয়ং বলেন যে, রাসূল (সঃ) সমগ্র সৃষ্টি জগতের জন্য রহমত এবং হেদায়েতের জ্বলন্ত প্রদীপ। আল্লাহ তায়ালা তাঁর সমস্ত গুণের ধারকরূপে 'নূরে মোহাম্মদী'কে সৃষ্টি করেছেন। 'নূরে মোহাম্মদী'র মাধ্যমে আপন পরিচয় জগতে প্রকাশ করবেন বলেই আল্লাহ নিজের পরিপূর্ণ গুণের অধিকারী করে তাঁকে সৃষ্টি করেন। 'নূরে মোহাম্মদী'র ধারক ধারক হিসেবে অন্যান্য নবী-রাসূলগণের আবির্ভাব হয়েছে এবং তাঁদের স্ব স্ব আত্মার অবস্থানুযায়ী 'নূরে মোহাম্মদী'র গুণাবলী একে একে প্রকাশ পেয়েছে। সর্বগুণে প্রকাশিত রাসূল (সঃ)-এর আগমন সম্পর্কে বিভিন্নভাবে ভবিষ্যতবাণী করা হয়েছে। সর্বশেষে হযরত রাসূল (সঃ)কে প্রেরণ করে আল্লাহ তায়ালা তাঁর মাঝে 'নূরে মোহাম্মদী'র সর্বগুণ বিকশিত করেছেন। এ জন্যই রাসূল (সঃ)-এর পরে আর কোন নবী আসবে না। কিন্তু রাসূল (সঃ) হলেন হায়াতুন নবী। অর্থাৎ তিনি জাহেরী ভাবে পর্দা করার পরেও 'নূরে মোহাম্মদী'র অস্তিত্ব পৃথিবীর বুকে সর্বকালে বিরাজমান থাকবে। সে হিসেবে অলী-আল্লাহগণ 'নূরে মোহাম্মদী' আপন সীনায় ধারন করেন বিধায় তাঁদের মাধ্যমেই হেদায়েতের ধারা অব্যাহত আছে এবং থাকবে। নবুয়তের যুগে যখন যে নবী হেদায়েতের দায়িত্বে নিয়োজিত ছিলেন, মুক্তিকামী মানুষকে তাঁর আনুগত্য স্বীকার করে তাঁর দেয়া বিধান অনুসরণের মাধ্যমে মুসলমান হতে হয়েছে। বেলায়েতের যুগে তেমন 'নূরে মোহাম্মদী'র ধারক অলী-আল্লাহগণের আনুগত্য স্বীকার করে তাদের দেয়া পদ্ধতি অনুসরণের মাধ্যমে খাঁটি মুসলমান হতে হয়।