
সময় রাত ১২:২৫, ০৮ নম্বর রোডের ৩৩ নম্বর বাড়ির অপজিটে দাড়িয়ে আছি।
আমার বা-হাতে মার্লবোরো জ্বলছে, আর ডানহাত জ্যাকেটের পকেটে লোডেড walther p22 স্পর্শ করে আছে। ৪৫ মিনিট ধরে স্থির দাড়িয়ে আছি, অপেক্ষা করছিলাম দোতলার বাম দিকের ঘরের আলো নিভে যাওয়ার।
মার্লবোরো এখনো জ্বলছে, অর্ধেকও ফুরোয় নি, লম্বা একটা টান দিয়ে ছুড়ে ফেলে দিলাম। জিন্সের পকেট থেকে AAC Element 2 Silencer বের করে ওয়ালথারে সেট করতে করতে বাড়িটিতে প্রবেশ করলাম। এই অস্ত্রটি আমার বেশ পছন্দের, জার্মানির তৈরী। সাইলেন্সার লাগিয়ে নিয়েছি, আর Subsonic বুলেট দিয়ে ফায়ার করবো। হালকা চাপা শব্দ হবে, তবে শব্দ রুমের বাইরে যাবার কথা না।
বাড়ির রুমে রুমে ডিম লাইট বাল্ব লাগানো আছে। পথ খুজে নিতে আমার তেমন সমস্যা হচ্ছে না। দোতলায় উঠে হাতের বামদিকে প্রথম ঘরটাতেই তার থাকার কথা। সে আমার স্ত্রীর খুনি, ব্লাডি মার্ডারার!
--------------------------
দিশার সাথে পরিচয় হয়েছিলো আমার বন্ধু শাফায়েত এর বিয়েতে। আমি বরের বন্ধু, আর ও কনের বান্ধবী। প্রথম দর্শনে প্রেম বলে কিছু একটা আছে। আসলেই আছে। আমি সেদিন প্রেমে পড়ি প্রথমবারের মত। তবে বলতে পারি নি।
তবে ভাগ্যবিধাতা কৃপণ নন। পরের মাসেই একটি সুপারশপে দেখা হয়ে যায়। দাম-দর করে জিততে পারি না বলে আমি সুপারশপ থেকেই বাজার করি। সেদিনও আমি কথা বলতে পারিনি। দিশা নিজেই আমাকে চিনতে পেরে কথা বলেছিলো। গল্প করেছিলো।
তারপর বেশ কিছুদিন একসাথে ঘোরাফেরা, কফিশপ, লাইব্রেরীতে যাওয়া আসা, কখনোই ভালোবাসি শব্দটি বলতে পারি নি। তবে আমার বোকামীগুলোতে সে হয়তো আমার মনের কথা বুঝতে পারতো। আমিও জানতাম দিশা আমাকে পছন্দ করে। তবে আমি খুব ধীরগতির হওয়ায় ৭ মাসেও ভালোবাসি কথাটা বলতে পারিনি, প্রপোজ করা তো দূরের ব্যাপার! তাই হয়ত প্রপোজের ঝামেলাটাও ও নিজেই সেরে ফেলেছিলো।

আমাদের বিয়ের পর আমরা খুবই সুখী হয়েছিলাম। আমি সুখী হয়েছিলাম দিশাকে পেয়ে, আমার মা-বাবা খুশি মনের মত বউমা পেয়ে, আর দিশা খুশি সংসারের সকলকে খুশী করতে পেরে। দিশার কোন শত্রু ছিলো না, থাকার কথা্ও না। আর যদি কোন শত্রু থেকেও থাকতো, দিশার মুখের হাসি দেখলে সেও হয়তো শত্রুতা ভুলে যেতো।
--------------------------
দরজা খোলাই ছিলো। রেলিং দেয়া খাটে আরামে শুয়ে ঘুমাচ্ছে সে। আমার জীবনের সবচেয়ে প্রিয় জিনিষটা কেড়ে নিয়েছে এই খুনি। আমার ভালোবাসা, আমার ভালোলাগা, আমার সবকিছু।

বন্দুক তাক করে আছি আমি, হাত কাপছে না। সবাই বলে আমার আবেগ নেই, অথচ আমি জানি যে আমার আবেগ কতটা। পার্থক্যটা হচ্ছে আমি আমার আবেগ প্রকাশ করতে পারি না। গতকাল দিশা মারা যাবার পরও আমার চোখে জল আসেনি, অথচ হৃদয়ে রক্তক্ষরন হচ্ছে। প্রতিনিয়ত।
খুনিকে মরতে হবে, তবে আমি চাচ্ছি এই খুনি মৃত্যুর আগে আমাকে জানিয়ে যাক দিশাকে সে কেন খুন করলো। কি অপরাধ ছিলো ওর? আমি চাই এই খুনি আমাকে কারনটা বলে যাক, তবে আমি জানি ও বলবে না।
বলতে পারবে না। গতকালকেই তো জন্ম হয়েছে ওর!
-----------------
আমার প্রথম লেখা। কষ্ট করে পরার জন্য আপনাদের ধন্যবাদ। ভুলত্রুটি ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন।
এই নুডলস এবং গ্রিলড চিকেন স্যান্ডউইচ আপনাদের জন্য।

![]()
সর্বশেষ এডিট : ০২ রা আগস্ট, ২০২১ সন্ধ্যা ৬:১০

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




