...তারপর একসময় "গুড মর্নিং", "লাঞ্চ করেছো?", "এখনো বাসায় আসো নাই? এসেই কল দিবা।" মেসেজগুলো কমে যেতে থাকে। মাঝে মাঝে নিজে থেকেই মনে করিয়ে দিলে হয়তো উত্তর আসে, "হুম্, এতক্ষনে তো তোমার লাঞ্চ করে ফেলার কথা।" রাত আড়াইটা-তিনটা পর্যন্ত জেগে থাকা মেয়েটা ইদানিং ক্লান্ত হয়ে ১১টার মধ্যেই ঘুমিয়ে পড়ে। তার এত ঘুম পেতে থাকে যে জানাতেও ভুলে যায়। পড়াশুনার চাপ বেড়ে যায় হঠাৎ। ইদানিং মেয়েটার দুপুরেও ঘুম পায় অনেক। ভার্সিটিতে ক্লাসের পরে আর অপেক্ষা করে না, এত ক্লান্ত থাকে যে বাসায় এসে কোনরকমে মোবাইলটাকে নিশ্চুপ করে দিয়েই ঘুমিয়ে পড়ে। সন্ধ্যায় আম্মু, বড়আপুরা বড্ড বেশী সামনে থাকা শুরু করে। ছুটির দিনগুলোতে বাবা কড়াকড়ি বাড়িয়ে দেন, তখন বাসা থেকে বের হওয়াতো দুরের কথা, মোবাইলই অন রাখা অসম্ভব হয়ে পড়ে। অসুস্থ ছেলেটার খবর শুনে, অথবা ছেলেটার গাড়ি এক্সিডেন্টের খবর দুইদিন পরে শুনে জানতে চায় -তুমি এখন ঠিক আছো তো?, উত্তর জেনে মেসেজ-এ প্রত্যুত্তর আসে -ওহ্ কিংবা হুম্...।
মোবাইল নম্বরটা আরো কিছুদিন হয়তো অন থাকে, কিন্তু সেটা ব্যবহারে তীব্র বিরক্তি চলে আসে মেয়েটার। সে চলে যেতে চায় আশি-নব্বই দশকের সেই দিনগুলোতে, শুনেছে তখন নাকি মোবাইলবিহীন এক সুন্দর নিরুপদ্রব জীবন ছিলো। তারপর একসময় টুপ করে সীমটা মোবাইল থেকে খসে পড়ে, ...সেখানে হয়তো ঢুকে পরে আরেকটা সীম। ফেবু আইডিটাতে লটকে থাকে "... updated her cover photo." নিচে অনেক দিন আগের কোন তারিখ। প্রোফাইল ছবিগুলো ভাইয়ার ভয়ে উবে যেতে থাকে একটা একটা করে।
...আরো কিছুদিন পরে আইডিটা খুঁজতে গেলে ব্যান্ডেজ বাঁধা বুড়ো আঙ্গুলের ছবি।
........................................................
মেয়েটির আঙ্গুল মোবাইল কিপ্যাডে দ্রুত তার নতুন আইডি থেকে আরেক ইনবক্সে মেসেজ লিখছে "এখনো বাসায় আসো নাই? এসেই কল দিবা।"...
সর্বশেষ এডিট : ০৪ ঠা অক্টোবর, ২০১৫ রাত ১২:১১