তৃতীয় পর্বঃ
এই পর্বে উজবেকিস্তান ও তার আশেপাশের কিছু দেশ একসাথে যেন ঘুরতে পারেন তার প্ল্যান তৈরি করে দিব। আপনাদের প্রশ্নের উত্তর পাবেন।
প্রথম বলে রাখা ভালো আপনি যদি চিন্তা করেন উজবেকিস্তানে ঘুরতে আসবেন তাহলে বলব আর কিছু দিন হাতে সময় নিন তাজিকিস্তান এবং কিরগিজস্তান ঘুরে যাওয়ার জন্য।
গত পর্বে আমি তাসখন্দে নিয়ে আলোচনা করেছি, আজকে আরো কিছু সিটির কথা বলব উজবেকিস্তানের।
১# তাসখন্দ
২# বুখারা
৩# সামারখন্দ
৪# খিবা
৫# নকুস
উজবেকিস্তানে এই সিটি গুলো খুব জনপ্রিয় ও টুরিস্ট জায়গা। প্রতিটি জায়গা ইতিহাস সংস্কৃতি সমৃদ্ধ। এই জায়গা গুলোর মধ্যে আমার বুখারা ও সামারখন্দে ঘুরার সৌভাগ্য হয়েছে। সময়ের অভাবে খিবা ও নকুস যাওয়া হয়নি। যেহেতু আমি আরো দুই দেশ কাভার করব কম সময়ের মধ্যে।
আপনি যদি চিন্তা করেন তাজিকিস্তান ও কিরগিজস্তান ঘুরবেন তাহলে আমার পোস্ট আপনার জন্য।
আগে বলে রাখা ভালো এটা কোন রিলাক্স ট্যুর না সুতরাং সময় ভেবে চিন্তা করবেন।
তাসখন্দে আপনি ২/৩ দিন সময় দিতে পারেন। তারপর আপনি বুখারার জন্য চলে যাবেন। আর বুখারা যাওয়ার সহজ মাধ্যম হল বুলেট ট্রেন। তবে আপনার প্ল্যান ও সময় ঠিক থাকলে যেদিন তাসখন্দে আসবেন সেই দিন টিকেট কেটে রাখবেন। নয়ত বুলেট ট্রেনের টিকেট পাবেন না। তবে নরমাল ট্রেন আছে একটু সময় বেশি লাগে।
বুখারাঃ
আপনি বুখারাতে ৩ দিন দিতে পারেন। বুখারার কোথায় কোথায় ঘুরবেন তার লিষ্টটা নিচে দেখে নিবেন।
১# আর্ক ওফ বুখারা (টিকেট ৪০০/-)
২# চর মিনার মাদ্রাসা
৩# ক্যালন মসজিদ
৪# ক্যালন মিনারত
৫# চাসমির আইয়ুব মিউজিয়াম
৬# ইসমাঈল সোমোনি মিউজিয়াম
৭# বুখারা পুরাতন সিটি
৮# ওয়াল ওফ বুখারা
৯# খাজা বাহা উদ্দিন নক্সবন্দী (বুখারা সিটি বাহির) ৬০ নং বাসে করে যেতে হয়।
১০# ইমাম বুখারীর কম্পলেক্স
১১# এছাড়া অনেক মাদ্রাসা রয়েছে।
আপনি ট্রেন ধরে বুখারা চলে আসলে অবশ্যই হোস্টেল বা হোটেল বুকিং করবেন সিটির মধ্যে। স্টেশন থেকে সিটি ২০ কিলো দূরে। ভাড়াও কম আপনি ইয়ানডেস্ক করে ২০ টাকায় চলে যেতে পারবেন। আর হোটেল এর জন্য আগোডা বা বুকিং ডটকম রয়েছে। উজবেকিস্তানে কখনো চিন্তা করবেন না আপনি হেঁটে হেঁটে খুঁজে হোটেল বুকিং করবেন। এই কাজ কখনো করবেন না আপনার শুধু সময় নষ্ট হবে। আর হোটেল বুকিং করার ক্ষেত্রে রেজিষ্ট্রেশন এর কথা ভুলে যাবেন না। আপনি যে হোটেলে থাকবেন তাকে বলবেন রেজিষ্ট্রেশন করে দিতে নয়ত বর্ডারে সমস্যা হতে পারে এতে ফাইন গুনতে হতে পারে।
সামারখন্দঃ
আপনি বুখারা ঘুরে সামারখন্দে চলে আসবেন। আসার সময় আপনি বুখারা আটো ভোকজাল থেকে ট্যাক্সি নিতে পারেন অথবা বাসে আসতে পারেন। আমরা তিনজন ছিলাম এই জন্য বাসের খরচে ট্যাক্সি নিয়ে চলে আসছি। মধ্য এশিয়া তিন জনের গ্রুপ হলে সবচেয়ে ভালো।
সামারখন্দ ইসলামের ইতিহাস বহন করে। আপনি এখানে ঘুরার জন্য নিচের জায়গা সমূহ দেখতে পারেন।
১# রেগিস্থান স্কয়ার
২# আমির তৈমুর মিউজিয়াম
৩# বিবি খানম মসজিদ
৪# সায়ব বাজার
৫# তিলাকারী মাদ্রাসা
৬# হযরত খিজির মসজিদ
৭# ইসলাম কারিমভ স্ট্যাচু
৮# নিল পানির লেক (সিটি থেকে একটু বাইরে)
এছাড়াও রাস্তায় হাঁটতে হাঁটতে অনেক কিছু দেখতে পাবেন। এখানে আপনি ২/৩ দিনে সব কাভার করতে পারবেন।
বুখারা এবং সামারখন্দে আমার ঘুরার সৌভাগ্য হয়েছে। তবে এইসব জায়গার সব গুলো বিস্তারিত লিখতে গেলে কয়েক দিন লেগে যাবে। সংক্ষিপ্ত আকারে উল্লেখ করেছি।
আমার প্ল্যান হল সামারখন্দ থেকে তাজিকিস্তান চলে আসা। এই জন্য আগে বুখারা তারপর সামারখন্দ। এখান থেকে তাজিকিস্তান বর্ডার কাছে ১ ঘন্টার মধ্যে চলে আসা যায়।
আগামী পর্বে আলোচনা করব আপনি কিভাবে উজবেকিস্তান থেকে তাজিকিস্তান, কিরগিজস্তান এবং কাজাখস্তান ভিসা করবেন। আর কি কি ডকুমেন্টস লাগবে এবং কত ডলার খরচ করতে হবে।
আমি এখন তাজিকিস্তান চলে আসছি।
তাই নতুন দেশ নিয়ে পোস্ট করা শুরু করব ইনশাআল্লাহ।
নোট: পৃথিবীর যে প্রান্তে ঘোরাঘুরি করি না কেন পরিবেশ পরিস্কার রাখা আমাদের দায়িত্ব। যেখানে সেখানে ময়লা না ফেলে ডাস্টবিনে ময়লা ফেলি। একটা কথা সবসময় মনে রাখবেন আপনার ব্যবহার দেশের মানসম্মান বহন করে।
মোনারুল ইসলাম
তাসখন্দ, উজবেকিস্তান।
ভিডিও দেখতে চাইলে ফেসবুক ও ইনস্টাগ্রামে সংযুক্ত থাকুন।
---
Youtube
সর্বশেষ এডিট : ০২ রা জানুয়ারি, ২০২৪ দুপুর ১২:৩০