somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বিজ্ঞানের অগ্রগতি

০২ রা সেপ্টেম্বর, ২০১১ সকাল ৯:১৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

মাঝে মাঝে মনে হয় এই যে বিজ্ঞান এতদূর এগিয়ে গেছে এর কোন কি মানে হয়? গত এক শত বছরে মানুষ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিকে খুব ভয়ংকর রকমের দ্রুততার সাথে সামনে নিয়ে গিয়েছে। আমার মনে হয় এত দ্রুত পরিবর্তনের পিছনে মূলত দুই-দুইটি বিশ্বযুদ্ধ প্রভাবে ফেলেছে। বিশ্বযুদ্ধের ক্ষতিকর প্রভাবে আমরা শহর, বন্দর ও জনপথই যে হারিয়েছি তা নয়, সেই সাথে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ভয়ংকর রকমের অগ্রগতি হয়েছে। বিভিন্ন জাতিদের মধ্যে প্রতিযোগীতার কারণেই বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি এর বিকাশ হচ্ছে। এই প্রতিযোগীতা কিন্তু এখনও থেমে থাকেনি। প্রতিটি দেশই চেষ্টা করছে সামনের প্রযুক্তিগত যুদ্ধে যেন তারা পিছিয়ে না পরে। এখন শুধু মাত্র বিজ্ঞানের অগ্রগতি ও কল্যানের জন্যই বিজ্ঞানীরা কাজ করেনা। বিজ্ঞানীরা তার বিষয়ে কাজ করে, অগ্রগামী থেকে, পেটেন্ট তুলে সেটিকে ব্যবসাতে কিভাবে রূপান্তর করা যায় সেই দিকেই মনযোগ বেশী।

বিজ্ঞানেই এই বিশাল অগ্রগতী দেখে মাঝে মাঝে আমার খুব ভয় হয়, আমরা মনে হয় সেই ফ্রাঙ্কেস্টাইনের মত কিছু তৈরী করে ফেলছি নইতো। আমার যে বিষয়ে কাজ করে, ন্যানোপ্রযুক্তির কথাই ধরুন। আমরা ন্যানোপ্রযুক্তি ব্যবহার করে এমন জিনিসপত্র তৈরী করছি যে, যার গুনাগুন আমরা নিজেরাই জানিনা। কিন্তু সেই সব জিনিসপত্রগুলি বাণিজ্যিক-করণ হচ্ছে। সেদিনে দেখি শ্যাম্পু এর বিজ্ঞাপন হচ্ছে, ন্যানোকণা বা Nano Particles ব্যবহার করে। ভঙংকর হল, এই ন্যানোকণা যে আসলেই নিরাপদ কিনা তা আমরা নিজেরাই জানিনা। ন্যানোকনাগুলি এতই ছোট আকারের যে তা ত্বক কে ভেদ করে আরো শরীরের অনেক গভীর ঢুকে যেতে পারে। এমন কি আমাদের কিডনি যা রক্তকে বিশুদ্ধ করার জন্য কাজ করে, সেটিও ন্যানোকণাকে ফিল্টার বা পরিষ্কার করে শরীর থেকে বের করে ফেলতে পারেন।

আমরা রসায়ন ব্যবহার করে নিত্যনতুন অনেক পণ্য তৈরী করছি, কিন্তু সেই সব পণ্যের নিরাপত্তা নিয়ে আমরা অনেকেই জানিনা। হয়তো সেগুলিকে নিয়ে বছর খানেক গবেষনা হয়েছে। তারপরেই মোটামুটি নিরাপদ ফলাফল পাওয়া গেছে। কিন্তু অনেক বিষাক্ত কণা রয়েছে যা বেশ কয়েকবছর ঘুমন্ত থাকতে পারে এবং তারপরেই তার আসল রূপ ধারণ করতে পারে। আমরা অনেক সময়ই নিজেদের অজান্তে সেগুলি ব্যবহার করছি। আমরা গরম পাণীয় খাবার জন্য যে সমস্ত প্লাস্টিকের কাপ ব্যবহার করি, সেগুলি কথাই ধরা যাক। গরম পানির প্রচন্ড তাপে সেই প্লাস্টিকগুলি গলে পাণীয় এর সাথে মিশে যাচ্ছে এবং সেইগুলি আমরা খাচ্ছি। আমরা নিজেদের শরীরে এই সমস্ত অজানা রাসয়নিক কণা ঢুকাচ্ছি। জাপানে এই ধরনের অজানা কণাগুলিকে Environmental Hormon নাম দিয়েছিল এবং এগুলির ব্যবহার বন্ধের জন্য সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলেছিল। সমস্যা হল এই সমস্ত পণ্য যারা তৈরী করছে ও বিপনন করছে, তারা বলছে তারা যথেষ্ট গবেষনা করেই এই পণ্যগুলি বিপনন করছে। আর গরণ পানীয় এর সাথে কণা যাবার কথা আন্দোলনকারীরা তুলছে, সেই ব্যাপারে প্রতিষ্ঠানগুলি বলছে, তা এত কম মাত্রার যে আমরা সেগুরি Ignore করতে পারি। তবে বিপদের কথা হল বছরের পর বছরে সেই সমস্ত প্লাস্টিক ব্যবহার করলে তার যে কিরকম বিরূপ প্রতিক্রিয়া হবে তা কিন্তু গবেষনা করতে দিচ্ছে না।

এবার বাংলাদেশের দিকে তাকান যাক। একদিন বাংলাদেশের সরকারী গবেষনা প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞানীর সাথে কথা হচ্ছিল। একদিন তাদের গবেষনাগারে বাংলাদেশের বাণিজ্যিক সরিষা তেলগুলির উপর গবেষনা করছিলেন। তারা বাজার থেকে প্রচলিত (যেগুলির বিজ্ঞাপন আপনারা টিভিতে সবসময় দেখছেন) সরিষা তেলগুলি তাদের গবেষনাগারে পরীক্ষা করে দেখছিলেন সেখানে তেলের পরিমাণ কতটুকু। মারাত্মক ফলাফল তারা পেলেন। বাজারে যে সমস্ত সরিষার তেল বিক্রি হয় তার কোনটিতেই সরিষার তেলের কোন নামগন্ধ পেলেননা। সবগুলিতেই তার পরিমান হল ১% এর থেকেও কম। তবে সেগুলি কি? তার উত্তরে উনি বলছিলেন, সেগুলি রাসয়নিক কৃত্রিম পদার্থ যার সাথে সরিষার essence মিশান থাকে।

কথা বলছিলাম বিজ্ঞানের অগ্রগতি নিয়ে। মাঝে মাঝে আমার মনে হয় ১৮০০ এর আগে মানুষই মনে হয় ভালো ছিল, জীবন ছিল সাদামাটা। আর কিছু না হোক অজানা রাসয়নিক পদার্থ জীবনযাত্রার সাথে মিশে ছিলনা, ছিলনা তেজস্ক্রিয়তার মত ভয়ংকর কিছু। আমরা আমাদের প্রয়োজনে অনেক কিছু তৈরী করছি যা আমাদের প্রয়োজন মিটাচ্ছে বটে তবে অনেক অজানা বিপত্তিও ঘটাচ্ছে যা আমরা এখন জানছিনা। অদূর ভবিষ্যতে জানব হয়তো।
১টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

জাম গাছ (জামুন কা পেড়)

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ০৭ ই মে, ২০২৪ সকাল ৯:০৩

মূল: কৃষণ চন্দর
অনুবাদ: কাজী সায়েমুজ্জামান

গত রাতে ভয়াবহ ঝড় হয়েছে। সেই ঝড়ে সচিবালয়ের লনে একটি জাম গাছ পড়ে গেছে। সকালে মালী দেখলো এক লোক গাছের নিচে চাপা পড়ে আছে।

... ...বাকিটুকু পড়ুন

অনির্বাণ শিখা

লিখেছেন নীলসাধু, ০৭ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:৩১



রাত ন’টার মত বাজে। আমি কি যেন লিখছি হঠাৎ আমার মেজো মেয়ে ছুটতে ছুটতে এসে বলল, বাবা একজন খুব বিখ্যাত মানুষ তোমাকে টেলিফোন করেছেন।

আমি দেখলাম আমার মেয়ের মুখ উত্তেজনায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

=ইয়াম্মি খুব টেস্ট=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ০৭ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৪:১৪



©কাজী ফাতেমা ছবি
সবুজ আমের কুচি কুচি
কাঁচা লংকা সাথে
ঝালে ঝুলে, সাথে চিনি
কচলে নরম হাতে....

মিষ্টি ঝালের সংমিশ্রনে
ভর্তা কি কয় তারে!
খেলে পরে একবার, খেতে
ইচ্ছে বারে বারে।

ভর্তার আস্বাদ লাগলো জিভে
ইয়াম্মি খুব টেস্ট
গ্রীষ্মের... ...বাকিটুকু পড়ুন

শিরোনামহীন দুটি গল্প

লিখেছেন সাহাদাত উদরাজী, ০৭ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৫:৫৫

গল্প ১।
এখন আর দুপুরে দামী হোটেলে খাই না, দাম এবং খাদ্যমানের জন্য। মোটামুটি এক/দেড়শ টাকা প্লাস বয়দের কিছু টিপস (এটা আমার জন্য ফিক্সড হয়েছে ১০টাকা, ঈদ চাদে বেশি হয়,... ...বাকিটুকু পড়ুন

এশিয়ান র‍্যাংকিং এ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অবস্থান !!

লিখেছেন ঢাবিয়ান, ০৭ ই মে, ২০২৪ রাত ৮:২০

যুক্তরাজ্যভিত্তিক শিক্ষা সাময়িকী 'টাইমস হায়ার এডুকেশন' ২০২৪ সালে এশিয়ার সেরা বিশ্ববিদ্যালয়ের তালিকা প্রকাশ করেছে। এশিয়ার সেরা ৩০০ তালিকায় নেই দেশের কোনো বিশ্ববিদ্যালয়।তালিকায় ভারতের ৪০, পাকিস্তানের ১২টি, মালয়েশিয়ার ১১টি বিশ্ববিদ্যালয়... ...বাকিটুকু পড়ুন

×