somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আওয়ামী লীগ বিজয়ী হওয়ার পর থেকেই আধিপত্য বিস্তার নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের দুই পক্ষে উত্তেজনা বিরাজ করছে

০৯ ই জানুয়ারি, ২০০৯ বিকাল ৩:০৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

‌শেখ হাসিনাকে আরো কঠোর হতে হবে
Fri, Jan 9th, 2009 1:20 pm BdST

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউর রহমান হলে বৃহস্পতিবার রাতে ছাত্রলীগের দুই পক্ষের সংঘর্ষে চার জন আহত হয়েছে। হলের শিক্ষার্থীরা জানায়, এক জন ছাত্রদলকর্মীকে হল থেকে বের করে দেওয়া নিয়ে ছাত্রলীগের বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক সমর্থকদের মধ্যে ওই সংঘর্ষ বাঁধে, যার রেশ ভোর পর্যন্ত চলে। আওয়ামী লীগ সমর্থিত ছাত্রলীগের দুই পক্ষের সংঘর্ষের ব্যাপারে সরকারের অবস্থান সম্পর্কে যোগাযোগ করা হলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন,"কাউকেই ছাড় দেয়া হবে না। আমি ইতোমধ্যেই ব্যবস্থা নিতে বলেছি। প্রয়োজনে আরো কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে।"

আহতদের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। সংঘর্ষের খবর পেয়ে পুলিশ হলে গিয়ে সাত জনকে গ্রেপ্তার করেছে। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে পদত্যাগের ইঙ্গিত দিয়েছেন হলের প্রাধ্যক্ষ বোরহানউদ্দিন খান।

সংঘর্ষে আহত সমাজ বিজ্ঞান চতুর্থ বর্ষের ছাত্র সোহাগকে পঙ্গু হাসপাতালে, একই বিভাগের সুমনকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে, ফিন্যান্স প্রথম বর্ষের ছাত্র হিমেলকে ট্রমা সেন্টারে এবং প্রথম বর্ষের ছাত্র চুন্নুকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় মেডিকেল সেন্টারে ভর্তি করা হয়েছে। এদের মধ্যে সোহাগের হাতের রগ কেটে দেওয়া হয়।

পুলিশ যাদের গ্রেপ্তার করেছে, তারা হলেন- সংস্কৃতি ও পালি বিভাগের চতুর্থ বর্ষের ছাত্র খোকন, সমাজ বিজ্ঞান বিভাগের স্নাতকোত্তর পর্বের সেলিম রেজা, ইংরেজি বিভাগের চতুর্থ বর্ষের জাকারিয়া রহমান জিকো, মনোবিজ্ঞান বিভাগের প্রথম বর্ষের শফিউল্লাহ শিহান, রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের প্রথম বর্ষের তৌহিদুল ইসলাম, দর্শন বিভাগের চতুর্থ বর্ষের রাশিদুল ইসলাম এবং ইসলামের ইতিহাস বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের রুহুল করিম।



শিক্ষার্থীরা জানায়, ছাত্রদলের এক কর্মীকে হল থেকে বের করে দেয় ছাত্রলীগের বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাধারণ সম্পাদক সাজ্জাদ সাকিব বাদশার অনুসারীরা। সভাপতি সোহেল রানা টিপুর অনুসারীরা এর প্রতিবাদ জানালে রাত ১২টার দিকে দুই পক্ষে সংঘর্ষ বাঁধে।

সভাপতি পক্ষের কর্মীরা সালমান ও কামালের নেতৃত্বে চাপাতি, লার্ঠিসোঁটা, রড নিয়ে সাধারণ সম্পাদকের অনুসারীদের ওপর হামলা চালায়। ওই সময় প্রাধ্যক্ষের কক্ষসহ অন্তত ১০টি কক্ষ ভাঙচুর হয়।

সাধারণ সম্পাদকের অনুসারীদের অভিভোগ, সভাপতি সমর্থিত কর্মীরা তাদের মারধর করে বাথরুমে আটকে রাখে।

মারধরের অন্তত দুই ঘণ্টা পরে সুমন নামের একজনকে বাথরুম থেকে উদ্ধার করা হয়।

সাধারণ সম্পাদক বাদশার পক্ষের কর্মীরা বলছে, ছাত্রদলকর্মী কামাল ও সালমান স¤প্রতি জাতীয় নির্বাচনের পর ছাত্রলীগে যোগ দিয়েছে। আর তাদের প্রশ্রয় দিচ্ছে সভাপতি সোহেল রানা।

রাত ২টার দিকে সাধারণ সম্পাদক বাদশা হলে গিয়ে তার অনুসারীদের বের করে নিয়ে আসে।

বাদশা হল গেটে কর্মীদের উদ্দেশে বলেন, "তোমরা আমার সঙ্গে রাজনীতি করছো, কিন্তু আমি তোমাদের নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ হয়েছি। তোমরা তোমাদের বাসা থেকে ছাত্রলীগ কর, যারা তোমাদের মারছে তারাই শুধু এই হলে রাজনীতি করুক।"

ওই সময় সভাপতি টিপু এসে তাদের আবার হলে ফিরিয়ে নিয়ে যায়।

এরপর সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক প্রাধ্যক্ষের সঙ্গে কথা বলতে তার কক্ষে যায়। ওই সময় ছাত্রলীগ কর্মীরা সংঘাতে জড়িত থাকার অভিযোগ এনে এক ছাত্রদলকর্মীকে ধরে প্রাধ্যক্ষের কক্ষে নিয়ে যায়। কিন্তু প্রাধ্যক্ষ ওই ছাত্রকে নির্দোষ বললে ছাত্রলীগ কর্মীরা উত্তেজিত হয়ে পড়ে।

প্রাধ্যক্ষ ছাত্রদলকে প্রশ্রয় দিচ্ছেন- এই অভিযোগ তুলে ছাত্রলীগ নেতা বাদশা প্রাধ্যক্ষের কক্ষ থেকে বের হয়ে আসেন। এরপর ছাত্ররা প্রাধ্যক্ষের বিরুদ্ধে স্লোগান দেয় এবং তার কক্ষের জানালার কাঁচ ভাঙচুর করে।

এর মধ্যেই একদল ছাত্রলীগকর্মী প্রাধ্যক্ষের কক্ষ থেকে সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ছবি সরিয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ছবি টানিয়ে দেয়। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে পরিস্থিতি আবার উত্তপ্ত হয়ে ওঠে।

সংঘর্ষের খবর পেয়ে পুলিশ আগে এলেও ওই সময় পুলিশ ছাত্রলীগকর্মীদের লাঠিপেটা করে। ঘটনাস্থল থেকে সাত জনকে তুলে নিয়ে যায় শাহবাগ থানা পুলিশ।

পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এক পর্যায়ে প্রাধ্যক্ষের অনুরোধে হলে আসেন সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক হারুন অর রশীদ। ছাত্রলীগকর্মীরা ডিনের কাছে প্রাধ্যক্ষের বিরুদ্ধে অভিযোগ করে। অধ্যাপক হারুন ছাত্রদের বুঝিয়ে শান্ত করেন। ওই সময় প্রাধ্যক্ষ উপস্থিত সাংবাদিকদের বলেন, "আমি আর দায়িত্ব পালন করতে ইচ্ছুক নই।"

ভোরে পরিস্থিতি কিছুটা শান্ত হলে সাধারণ সম্পাদক সাজ্জাদ সাকিব বাদশা বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, "আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর ছাত্রলীগের মধ্যে ছাত্রদল ও অন্যান্য সংগঠনের কিছু কর্মী ঢুকে পড়েছে। এরাই বার বার পরিস্থিতি অস্থিতিশীল করে তুলছে।"

সভাপতিকে ইঙ্গিত করে তিনি বলেন, "ছাত্রলীগের একটি পক্ষ নিজেদের দল ভারী করতে ছাত্রদলের এই সব কর্মীদের প্রশ্রয় দিচ্ছে।"

তবে সে অভিযোগ অস্বীকার করে সভাপতি টিপু বলেন, "ছাত্রদল বা অন্য সংগঠনের কোনও কর্মী ছাত্রলীগ করতে পারে না এবং আমি তাদের প্রশ্রয় দেই না। যারা এই ঘটনা ঘটিয়েছে, তাদের চিহ্নিত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।"

গত ২৯ ডিসেম্বর সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ বিজয়ী হওয়ার পর থেকেই আধিপত্য বিস্তার নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের দুই পক্ষে উত্তেজনা বিরাজ করছে।

(বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম)-

Click This Link
২টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

লালনের বাংলাদেশ থেকে শফি হুজুরের বাংলাদেশ : কোথায় যাচ্ছি আমরা?

লিখেছেন কাল্পনিক সত্ত্বা, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:১৪



মেটাল গান আমার নিত্যসঙ্গী। সস্তা, ভ্যাপিড পপ মিউজিক কখনোই আমার কাপ অফ টি না। ক্রিয়েটর, ক্যানিবল কর্পস, ব্লাডবাথ, ডাইং ফিটাস, ভাইটাল রিমেইনস, ইনফ্যান্ট এনাইহিলেটর এর গানে তারা মৃত্যু, রাজনীতি,... ...বাকিটুকু পড়ুন

অভিনেতা

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:১৫



বলতে, আমি নাকি পাক্কা অভিনেতা ,
অভিনয়ে সেরা,খুব ভালো করবো অভিনয় করলে।
আমিও বলতাম, যেদিন হবো সেদিন তুমি দেখবে তো ?
এক গাল হেসে দিয়ে বলতে, সে সময় হলে দেখা যাবে।... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমেরিকার গ্র্যান্ড কেনিয়ন পৃথিবীর বুকে এক বিস্ময়

লিখেছেন কাছের-মানুষ, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:৪১


প্রচলিত কিংবদন্তি অনুসারে হাতে গাছের ডাল আর পরনে সাধা পোশাক পরিহিত এক মহিলার ভাটাকতে হুয়ে আতমা গ্র্যান্ড কেনিয়নের নীচে ঘুরে বেড়ায়। লোকমুখে প্রচলিত এই কেনিয়নের গভীরেই মহিলাটি তার... ...বাকিটুকু পড়ুন

চুরি! চুরি! সুপারি চুরি। স্মৃতি থেকে(১০)

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ২:৩৪


সে অনেকদিন আগের কথা, আমি তখন প্রাইমারি স্কুলে পড়ি। স্কুলে যাওয়ার সময় আব্বা ৩ টাকা দিতো। আসলে দিতো ৫ টাকা, আমরা ভাই বোন দুইজনে মিলে স্কুলে যেতাম। আপা আব্বার... ...বাকিটুকু পড়ুন

তাবলীগ এর ভয়ে ফরজ নামাজ পড়ে দৌড় দিয়েছেন কখনো?

লিখেছেন লেখার খাতা, ০৫ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:২৬


আমাদের দেশের অনেক মসজিদে তাবলীগ এর ভাইরা দ্বীন ইসলামের দাওয়াত দিয়ে থাকেন। তাবলীগ এর সাদামাটাভাবে জীবনযাপন খারাপ কিছু মনে হয়না। জামাত শেষ হলে তাদের একজন দাঁড়িয়ে বলেন - °নামাজের... ...বাকিটুকু পড়ুন

×