৭ মাস পর আবার সিরিজটা লিখছি! এর মধ্যে যে মেজাজ খারাপ করা কিছু ঘটেনি তা নয়। কিন্তু কেন যেন লেখা হয়ে ওঠেনি। এই সিরিজটা যারা আগে পড়েননি, তাদের জন্য কয়েকটা কথা বলা যেতে পারে। এই লেখাগুলোতে আমি এমন কিছু ঘটনা শেয়ার করে থাকি, যেগুলো আমার সাথে ঘটে। এমন কিছু ঘটনা যেগুলো বেশ বিরক্তিকর। মেজাজ খারাপ করে দেবার জন্যে যথেস্ট। ঘরে বাইরে যথেস্ট ঠান্ডা মেজাজের মানুষ হিসেবে পরিচিত বলেই তাৎক্ষণিকভাবে কিছু করা সম্ভব হয়ে ওঠেনা। তাই ব্লগের পাতায় মনে ক্ষোভ টুকু উগড়ে দেয়া!
আচ্ছা এবারে শুরু করি তাহলে!
ঘটনা একঃ
আমার এক ক্লাসমেট আছে। সবসময় পার্টে থাকতে পছন্দ করে। সে আবার ব্যাপক স্টাইলিস্ট। আমার ধারণা সে রাস্তার মাঝখানে দাঁড়িয়ে থাকলেও সামনে একটা অদৃশ্য আয়না দেখতে পায়, এবং সেটায় নিজেকে দেখে চুল-জামা টেনেটুনে ঠিকঠাক করে। কন্ডিশনার চুলে কখন লাগান আপনি? শ্যাম্পু দেবার পরে রাইট? ও লাগায় বাইরে যাবার আগে। শুকনো চুলে, তারপর ধুয়েও ফেলে না! এতে নাকি চুলটায় বেশ সিল্কি ভাব আসে! আর নিয়ম করে পাউডার স্নো তো আছেই!
যাহোক এগুলো বলার জন্য আসলে ওর কথা বলছি না। সেদিন দেখলাম কার্ট কোবেইনের ছবি ওয়ালা টি-শার্ট পড়ে সে ক্লাসে আসছে। অবাক হলাম। আমি যতদুর জানি সে শুধু হিন্দি মুভির গান আর হাবিব-বালাম-হৃদয় খানের মত গুণী শিল্পীদের গান ছাড়া অন্য কারো গান শোনেনা! তো জিজ্ঞেস করলাম "কার ছবিওয়ালা টি-শার্ট এটা?" সে বলল- "আমি জানিনা!" (as I expected!) "তাহলে কিনেছ ক্যানো?"
-" চেহারা দেখে বেশ রকিং মনে হল তাই।" আমি থ।
এর একটা চে'র ছবিওয়ালা টি-শার্ট ও আছে। আমি এখনো জিজ্ঞেস করার সাহস পাইনি, এইটা কে চিনো তো? যদি বলে চেহারা পছন্দ হয়েছে বলে কিনেছি...
এখন আবার কেউ যেনো আমাকে জিজ্ঞেস করবেন না কার্ট কোবেইন কে!
ঘটনা দুইঃ
পোস্টার টা দেখেন। শ্লার কত্ত বড় সাহস! আসছে বলিউড ভাষা শিখাইতে! এটা শিখলে নাকি সময়ের সাথে স্মার্ট ভাবে এগিয়ে থাকা যায়! হুহ! এটা লাগানো আছে আবার এ আই ইউ বির ক্যাম্পাস ১ এর পেছনেই! একে সামনে পেলে ভয়াবহ একটা মাইর দেয়ার ইচ্ছা ছিল। ঠিক করেছিলাম একে সাইজ করবো। সেই উদ্দেশেই ফোন দিয়ে দেখি নাম্বার বন্ধ। ছবি শেয়ার হতে না হতেই নিশ্চয়ই অনেকে ফোন দিয়ে ঝাড়ি দিয়েছে। এখন মোবাইল অফ করে বসে আছে।
ঘটনা তিনঃ
এবার ঈদে রাজশাহী গিয়ে পুরনো বন্ধুদের সাথে দেখা হল। সেখানে পরিচিত হলাম অদ্ভুত এক ক্যারেক্টারের সাথে। এই ক্যারেক্টারের নাম? নাইবা বললাম। তা কি করে সে? সে পড়ালেখা করে। রাবি'র ইংরেজি বিভাগে। তাকে "ক্যারেক্টার" বলা পেছনে আছে একটা অদ্ভুত কারণ। মজা করতে পছন্দ করে সে। তা তো সে অনেকেই করে। এর মধ্যে অদ্ভুত কি? অদ্ভুতটা হচ্ছে সে যেভাবে "মজা" করে সেটা। সে তার সহপাঠিদের "সোনা" ধরতে খুব পছন্দ করে!!!!! সে এটাকে বলে "হাতানো"! আমি যখন প্রথমবার শুনেছিলাম, ভেবেছিলাম ধরার অভিনয় করে হয়ত। আসলে হয়ত ধরে না। কিন্তু না! এবারে লাইভ এই জিনিস দেখার দুর্ভাগ্য হয়েছে! সে যে ধরেই শুধু তা না, ধরে আবার মন্তব্যও করে... "এই যে ধরসি তোর এইটা... এইযে ধরসি তোর ওইটা!... হুম সেইরকম সাইজ!" লাইভ তো দেখলামই রেকর্ডেড ভিডিও ও দেখলাম! আমি ব্যপক সন্দেহের ভেতর আছি সে ছেলেটা আসলে সমকামী কিনা! এই বিষয়ে তার ডেডিকেশন প্রশ্নাতীত! আমাদের এক বন্ধু আছে, মাহাদী নাম। মাহাদী সব সময় ওকে বাধা দিত এই কাজে। সে মাহাদীর পেছনে ছয় মাস লেগে ছিল বাধা ভাংতে। এখন মাহাদী বিরক্ত হয়েই মেনে নিয়েছে। সে আর কিছুই বলে না! কিরকমের ডেডিকেশন ভাবুন একবার!
পোলাপান গুলির মাথায় যে কি হইসে বুঝি না!
চিন্তা করে দেখলাম চলিতে এই সিরিজ লেখা ভয়াবহ পেইনের কাজ! এটাও পুরো চলিত হয়নি!
আগের লেখাগুলো এখানেঃ খালি পিডাইতে ইচ্ছা করে
সর্বশেষ এডিট : ১৪ ই মার্চ, ২০১৩ সকাল ১০:০৮